রেড অ্যালার্ট অপপ্রচার : বিএনপি

ইন্টারপোলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড এলার্ট জারিকে ‘অপকৌশল ও বিভ্রান্তমূলক প্রচারণা’ হিসেবে দাবি করেছে বিএনপি।

ইন্টারপোলের এই ‘অপপ্রচার’, সরকারের মন্ত্রীদের সাম্প্রতি বক্তব্যের ‘নাটকীয় বহিঃপ্রকাশ’ হিসেবেও মন্তব্য দলটির।

বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এই বক্তব্য তুলে ধরেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন।

তিনি দাবি করেন, ‘ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করে না। তারা সদস্য দেশের দেওয়া তথ্য প্রকাশ করে। তাই এদেশ থেকে যে তথ্য পাঠানো হয়েছে তা প্রকাশ করেছে মাত্র। এর আগে সরকারের কতিপয় মন্ত্রীরা বলেছেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে তারেককে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে। এই রেড অ্যালার্ট মন্ত্রীদের বক্তব্যর বহিঃপ্রকাশ। এটি একটি নাটক।’

মঙ্গলবার তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল। আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা ও হত্যার অভিযোগে এই ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত ব্যক্তি হিসেবে তারেক রহমানের নাম-পরিচয় ও বিবরণ রয়েছে। তবে সেখানে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারির তারিখ উল্লেখ নেই।

এই ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের ৬১ জন তালিকাভুক্ত ব্যক্তির নাম রয়েছে। তালিকায় সবার শেষে তারেক রহমানের নাম, ছবি ও বিবরণ রয়েছে। ওয়েবসাইটে তারেক রহমান সম্পর্কে বিবরণে বলা হয়েছে, তার জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ নভেম্বর। তিনি বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু ভাষা জানেন। এতে তারেক রহমানের উচ্চতাসহ শারীরিক বিবরণও আছে।

রেড অ্যালার্ট জারির পরপরই মঙ্গলবার এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, ‘রেড অ্যালার্ট সরকারের সৃষ্টি। সরকার তাদের কাছে (ইন্টারপোল) সাহায্য চেয়েছে। এটি তাদের বেশি বাড়াবাড়ি।’

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্টকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সরকারের বাড়াবাড়ি’ হিসেবে অভিহিত করে এর আইনগত কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই বলেও দাবি করেন মাহবুব হোসেন।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করে বিএনপিকে চাপে রাখা যাবে না জানিয়ে বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে রিপন বলেন, ‘সরকারে কোনো অপচেষ্টা সফল হবে না। তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আছেন। তিনি পলাতক নন। তিনি এমন দেশে আছেন যে দেশ আইনের শাসনে বিশ^াসী, মানুষের অধিকারের প্রতি সচেতন।’

তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান-জয় সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা ভবিষৎ রাজনীতির জন্য ভাল হবে না। জয় রাজনীতিতে এসেছেন, তাকে সাধুবাদ জানাই। তারেক রহমানও নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন। সেটা কোনো চাপিয়ে দেওয়া পদ নয়। কাউন্সিলেই নির্বাচিত হয়েছেন।’

নির্বাচন কমিশনের অতীতের ব্যর্থতা দূর করে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে উপহার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রিপন বলেন, ‘ভয় ভীতি থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসের বিভিন্ন জায়গা থেকে পোস্টার লিফলেট ছিনিয়ে নিয়ে গেছে পুলিশ। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা শিশির অস্ত্র উচিয়ে আব্বাসের কর্মীদের ভয় দেখিয়েছে। নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার হায়দার আলী, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই