ভোলায় জেলেপাড়ায় উৎসবের আমেজ

রুপালি ইলিশের ঝলকানিতে নেচে উঠছে জেলেদের চোখ

বাংলার জাতীয় মাছ ইলিশের রুপালি আলোর ঝলকানিতে নেচে উঠছে জেলেদের চোখ। মুখে হাসির ঝিলিক। সুখের হিমস্রোত বয়ে যাচ্ছে জেলেপল্লীগুলোতে। সুখের এই দিনগুলোর জন্য ভোলার জেলেদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৫দিন। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ মাছ ধরতে পারেননি।

এ সময় তাদের দুরবস্থায় দিন কাটলেও তাতে একটুও আপেক্ষ নেই। কারণ এখন জালে ধরা দিচ্ছে প্রচুর রুপালি ইলিশ। স্বপ্ন দেখছেন ওই ১৫দিনের ধারদেনা পরিশোধ করে আবারও ঘুরে দাঁড়াবেন চেষ্টা তাদের।নদীতে নাইমা আজ দু দিন ভাল মাছ পাইতাছি।

এবার আমাগো অভাব দূর হইব বললেন ভোলা জেলা সদরের জেলে আমিনুল মাঝি। জেলা মৎস্য অফিস জানায়, ইলিশের অভয়াশ্রম রক্ষায় ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় এ বছর (২৫সেপ্টেম্বর)থেকে (৯অক্টোবর)এই ১৫দিন সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় (৯অক্টোবর)রাত ১২.১মিনিট থেকে আবারও নদীতে মাছ ধরা শুরু করেছেন জেলেরা।

নিষেধাজ্ঞার সময় জেলার প্রায় দেড়লক্ষাধিক জেলে বেকার হয়ে পড়েন। জেলেদের সাহায্যের জন্য সরকারি তালিকাভুক্ত ৬০ হাজার জেলেকে চাল বিতরণ করা হয় বলে জানায় জেলা মৎস্য অফিস সূত্র। জানা যায়, জেলার বিভিন্ন মৎস্যঘাট থেকে লক্ষাধিক জেলে নৌকা, ট্রলার ও জাল নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নেমেছেন।

জানা যায়, ভাল মাছ পেয়ে অভাবের দিন ভুলে গিয়ে উৎসবের আমেজ দেখা দিয়েছে জেলে পল্লীগুলোতে।জেলার চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মৎস্য ঘাটের জেলে আলমগীর মিয়া, হারুন, মোকলেছ, নুরনবী ও সিরাজ বলেন শনিবার(১০অক্টোবর)ভোর থেকে নদীতে মাছ ধরতে নামছি। নদীতে ভাল মাছ পাইতাছি। সব খচর উইঠা ভাল টাকা লাভ হইতাছে। মহাজনের দেনা কয়েক দিনের মধ্যে পরিশোধ কইরা দিমু।

জেলার শশীভূষণ থানার বকসি মৎস্যঘাটের জেলে হাফেজ, আকবর, নেছার, ফরিদ ও রেজাউল বলেন, সরকারের নিষেধ মাইনা চলছি। এ কারণে এখন নদীতে ভাল মাছ পাইতাছি। এমন মাছ যুদি (যদি) প্রতিদিনই পাই তইলে মহাজনের দেনা পরিশোধ কইরা কিছু জমা করতে পারমু।

জেলার দক্ষিণ আইচা থানার চরকচ্ছপিয়া ঘাটের মৎস্য আড়তদার মোহাম্মদ হোসেন ও মোকাম্মেল জানান, নদীতে এখন ভাল ইলিশ ধরা পড়ছে। জেলেরা উৎসাহ নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যাচ্ছেন। এখন মাছের দাম বাজারে একটু বেশি।

ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ঢালচর ঘাটের আড়ৎদার শাহেআলম ফরাজী জানান, নদীতে এখন প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। ঢালচর জেলেপল্লীগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।এবং মাছের দামও এবার ভাল।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মল্লিক জানান, এ বছর চরফ্যাশনে জেলেরা তাদের শত কষ্টের মধ্যেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় এখন নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ভবিষ্যতে চরফ্যাশনের জেলেরা এ আইন মেনে চললে নদীতে মাছ ভরপুর থাকবে। এতে তাদের কষ্ট ও অভাব দূর হবে ।



মন্তব্য চালু নেই