রিজার্ভ চুরি: সন্দেহে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি টেকনিশিয়ানরা

নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে সংরক্ষিত বাংলাদেশের আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) টেকনিশিয়ান জড়িত বলে সন্দেহ করছেন একজন শীর্ষ তদন্ত কর্মকর্তা। খবর রয়টার্সের।

এই কর্মকর্তার মতে, সন্দেহভাজন টেকনিশিয়ানরা ব্যাংকটির অর্থ লেনদেন ব্যবস্থাকে পাবলিক ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত করে এতে হ্যাকারদের প্রবেশের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। যার ফলে সুইফট কোড হ্যাক করে অর্থ চুরি করতে সক্ষম হয় হ্যাকাররা।

গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইবার অর্থচুরির ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ পুলিশের উপ-মহাপরিচালক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহ আলম এ ঘটনার তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, তারা চলতি ডিসেম্বরে এ পুলিশ কর্মকর্তার ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এর মাধ্যমে অর্থ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরের লোকদের জড়িত থাকার বিষয়ে মোটামুটি বিস্তারিত ধারণা পাওয়া গেছে।

ভেতরের লোকদের অর্থ চুরিতে সহযোগিতার উদাহরণ দিতে গিয়ে শাহ আলম চুরির ঘটনার কয়েক মাস আগে থেকেই আন্তর্জাতিক অর্থলনদেন নেটওয়ার্ক ‘সুইফটের’ নিরাপত্তা পাসওয়ার্ড এর সার্ভারে ঢুকানো অবস্থায় রাখার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। প্রতিদিনের কাজের সময় শেষে এই পাসওয়ার্ড মুছে ফেলে তা সুরক্ষিত ভল্টে লক (তালাবদ্ধ) করে রাখার কথা।

তিনি বলেন, পাসওয়ার্ডের টোকেন মুছে ফেলার ব্যর্থতার সুযোগই নজরদারি না হওয়ার সময়টিতে হ্যাকারদের বাংলাদেশ ব্যাংকের সুইফট সিস্টেম প্রবেশ করার বিষয়টি অনুমোদন করেছে। প্রথমে হ্যাকাররা ম্যালওয়্যার দিয়ে সিস্টেমে ঢুকে পড়ে। পরবর্তীতে অর্থ হস্তান্তরের ভূয়া নির্দেশনা ইস্যু করে।

অর্থ চুরির ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভেতরকার কেউ অবহেলা ছাড়া আর কোনওভাবে দোষী নয় বলে বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষ দৃঢ়তার সঙ্গে দাবি করার কয়েক মাস পর পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলম এ মন্তব্য করলেন। নিউইয়র্ক ফেডে সংরক্ষিত বাংলাদেশের অর্থ চুরি করে তা ফিলিপাইনের কয়েকটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিয়েছিল হ্যাকাররা।
অর্থচুরির ঘটনায় শাহ আলম যে দাবি করছেন তা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সংবাদ সংস্থাটির কাছে তিনি সন্দেহভাজন কারও নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কেউ এ পর্যন্ত গ্রেফতার হননি। আর শাহ আলমও তার দাবির স্বপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ দেখাননি।

অর্থ চুরির ঘটনায় পুলিশের তদন্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভংকর সাহা। তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তার কোনো কর্মীকে আটক করার পরিকল্পনার কথা বলা হয়নি।

শাহ আলমের দাবির বিষয়ে অর্থ চুরির ঘটনার তদন্তে জড়িত অন্যতম সংস্থার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (এফবিআই) মন্তব্য নেই। ইন্টারপোলও এ ব্যাপারে মন্তব্য করেনি।

সুইফটের মুখপাত্রও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই