রাস্তায় নামছে রোবট পুলিশ

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সৃষ্টি অপরাধ দমনে। এই পৃথিবীতে ঠিক কবে প্রথম অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল তা বলা মুশকিল। তবে এটা ঠিক যে, পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধ দমনের জন্য সৃষ্টি করার বদলে অপরাধকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্যই তৈরি হয়েছিল। এরপর থেকে পৃথিবীর ইতিহাসে পুলিশসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় উর্দিধারী বাহিনীর কার্যকলাপ একটু খেয়াল করে দেখলেই এর সত্যতা পাওয়া যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাজে প্রতিবাদকারীর সংখ্যা বেড়েছে এবং সেই সঙ্গে বেড়েছে প্রতিবাদকারীদের দমনে পুলিশের সংখ্যা।

একটা সময় ছিল যখন এই উপমহাদেশে লাঠি হাতে হাফপ্যান্ট পরিহিত বাহিনী ছিল পুলিশ বাহিনীর অন্তূর্ভক্ত। সেই পুলিশের হাতেই একটা সময় লাঠির বদলে আসে থ্রিনটথ্রি রাইফেল। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় এই বাহিনীকে ব্যবহারও করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বাহিনী উন্নত হওয়ার পাশাপাশি অপরাধীরাও ক্রমশ উন্নত হয়েছে। শুধু উন্নত বললে ভুল হবে, বলা ভালো অপরাধীদেরও বিবর্তন হয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। তাই এবার শহরগুলোর রাস্তায় মানব পুলিশের স্থানে রোবট পুলিশ নামানোর চিন্তা করা হচ্ছে। আপাতত রোবট পুলিশের দল বাংলাদেশের রাস্তায় না নামলেও, কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের রাস্তাতেও দেখা যেতে পারে রোবট পুলিশ।

ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছর নাগাদ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাস্তায় নামতে পারে রোবট পুলিশ। ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কিছু ছাত্র ‘দ্য টেলিবট’ নামের একটি রোবট তৈরি করেছে যা টিকিট কাটা থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজও করতে পারবে। এই প্রকল্পের অর্থদাতা জেরেমি রবিন এবিষয়ে জানান, ‘আমরা চাই সেই সেনাসদস্যদের কিংবা আহত পুলিশ সদস্যদের সাহায্য করতে। তারা যাতে আইন রক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারে সেই চেষ্টাই করা হয়েছে। টেলিবট দ্বারা একজন আহত অসুস্থ পুলিশ সদস্য অনেক কাজ করতে পারবেন। রাস্তায় টহল দেয়া থেকে শুরু করে জরুরী অবস্থায় পদক্ষেপও নিতে পারবেন।’

এখন পর্যন্ত যে টেলিবট তৈরি করা হয়েছে তার উচ্চতা প্রায় ছয় ফুট। রোবটটির পায়ে লাগানো আছে ঘুর্নায়মান চাকা এবং গোটা শরীরে তিনটি এইচডি ক্যামেরা লাগানো আছে, যা তাকে ৩৬০ ডিগ্রি এলাকা পর্যন্ত দেখতে সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, মানুষের মুখের ভাষা চিহ্নিত করে কিংবা মানুষের আবেগ সনাক্ত করার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে এই রোবটে। ইউরোপের বাজারে আগামী বছরের শুরু থেকে এই রোবট বিশ হাজার ডলারে বিক্রি করা হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, পরিবেশবাদী সংগঠনসহ অনেক মানবাধিকার সংস্থা রাস্তায় রোবট নামানোর বিপক্ষে মতামত দিয়েছে। তাদের মতে, মানুষের স্থানে রোবটকে প্রতিস্থাপন করা হলে আদতে মানুষেরই ক্ষতি হবে। মানুষের জন্যই আইন তৈরি হয়, তাই সেই আইন রক্ষার দায়িত্বও খোদ মানুষেরই থাকা উচিত বলেও মনে করেন তারা।



মন্তব্য চালু নেই