রাণীনগর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি

নওগাঁর ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি কমলেও রাণীনগর উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হয়েছে। দফায় দফায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উঁচু ভিটা ও চলতি মৌসুমের রোপা-আমন ধানের জমি তলিয়ে যাচ্ছে।

জানা গেছে, ২৪ আগষ্ট ভোরে রাণীনগর-আত্রাই সড়কের পূর্ব মিরাপুর নামক স্থানে ভেঙ্গে গেলে রাণীনগর উপজেলার পীরেরা, লক্ষীপুর, ভবানীপুর, সর্বরামপুর, গোনা, বইনা, চক, সিংড়াডাঙ্গা, সিম্বা, লোহাচূড়া, ছয়বাড়িয়া, গৌরদীঘি, খাগড়া, বড়গাছা, গহেলাপুর, শফিকপুর, বোদলা, পালশাসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব মানুষের দূর্ভোগের শেষ নেয়।

হাজার হাজার হেক্টর জমির রোপা-আমন ধান ও মৌসুমি সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢোকাই অনেক পরিবার এখন একে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ভেঙ্গে পরেছে এলাকার সরাসরি জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বাঁধ ভেঙ্গে বন্যায় পানিবন্দী মানুষের মাঝে কিছু কিছু সরকারি সাহায্য পৌছলেও অনেক স্থানেই তা পৌছেনি।

ফলে মানবেতর জীবন যাপন করছে পানিবন্দী ও বানভাসী এসব লোক-জন। বন্যার পানিতে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ, সাপের উপদ্রপ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ভাঙ্গন কবলিত স্থানে নওগাঁর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে বাঁধ দেওয়ার কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। তবে তাদেরকে মাঝে মধ্যে ভাঙ্গন কবলিত স্থানে নৌকা ভ্রমনে টোহল দিতে দেখা যায়।

পানিবন্দী মানুষের দূর্ভোগ লাঘবের জন্য দৃশ্যমান কোন তৎপরতা সংশ্লিষ্টদের নেয় বলে অভিযোগ উঠছে। রাণীনগর উপজেলায় এপর্যন্ত প্রায় ২৭কি:মি: রাস্তা, ২৬কি:মি: বাঁধ, ২৫০টি গভীর-অগভীর নলকূপ, পানিবন্দী ৩০হাজার সহ ৭হাজার ৪শ’ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, দফায় দফায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাণীনগর উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে পানিবন্দী মানুষ সহ ক্ষতির সংখ্যা বেড়েই চলছে। এপর্যন্ত বানভাসী মানুষদের কে জরুরি ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের জিআর তহবিল থেকে দুই দফায় ২৫ মেট্রিক টন চাল পেয়েছি। সেটা ইতিমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে এবং অতিরিক্ত আরো অনুদানের চাহিদাপত্র দিয়েছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম গোলাম সারওয়ার জানান, গত শনিবারে নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সত্যব্রুত সাহা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রোপা-আমন মৌসুমের তলিয়ে যাওয়া ধান দেখে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কে তারাতারি বন্যার পানি নেমে গেলে ৩৪ব্রি ধান লাগানোর পরামর্শ দেন।

সরকারি পর্যায় থেকে যত তারাতারি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহযোগিতার বরাদ্দ আসবে সাথে সাথে তা কৃষক পর্যায়ে বিতরণের সুব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুল ইসলাম পাটওয়ারী, রাণীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল মাসউদ চৌধুরী, কৃষি অফিসার গোলাম সারওয়ার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আসাদুজ্জামান, উপজেলা প্রকৌশলী আবু শফিউল আজম গতকাল রবিবার উপজেলার বন্যা দূর্গত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।



মন্তব্য চালু নেই