রাণীনগরে নারী শিক্ষার প্রথম অর্নাস মহিলা কলেজ

উপজেলার নারীদের উচ্চ শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান রাণীনগরের মহিলা কলেজ। ১৯৯৫ সালে রাণীনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪টি রুম ভাড়া নিয়ে মাত্র ৫০-৬০জন ছাত্রী ভর্তি করে এই কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়।

ওই সময় এলাকার অভিভাবক মহলের মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার প্রতি খুব একটা আগ্রহ ছিলনা। এমনি এক সময় উপজেলার কিছু বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিরা এলাকার নারী শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য এগিয়ে আসে। স্থানীয় প্রবন ব্যক্তিদের উদ্যোগে ওই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শুধু মাত্র একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মহিলা কলেজ চালু করা হয়। এই মহত কাজটি সাড়াজাগায় ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের অভিভাবক মহলে। অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় দেড় শতাধিক ছাত্রী নিয়ে নিয়মিত লেখাপড়ার কার্যক্রম চলে।

প্রবীন শিক্ষাগুরু রাণীনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক জুবায়েদ হোসেন এই মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে। তার আহবানে নওগাঁ সদর, রাণীনগর ও পাশবর্তী উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষা সমাপণী বেকার যুবক-যুবতী চাকুরি নেই এমন কয়েকজন বিনা পারিশ্রমিকে নারীদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এই মহিলা কলেজে শিক্ষকতা শুরু করে এবং ১৯৯৯ইং সালে শিক্ষক মন্ডলীর বেকারত্বের নাম দূর করে এমপিও ভুক্তির তালিকায় স্থান পাই। দূর হয় মহিলা কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের অজানা আতংক। এর মধ্যেই স্থায়ী ভাবে এই কলেজকে দাড় করতে উপজেলার প্রান কেন্দ্র রেলগেটের পশ্চিম পাশে ৩.৫৫একর জমি কিনে নিজস্ব ভবনের কাজ শুরু হলে পর্যায়ক্রমে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কলেজটির নিজস্ব ভবনে স্থানান্তর করা হয়। তখন থেকেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সুবিধা বঞ্চিত নারীরা সুশিক্ষায় সুশিক্ষত হওয়ার জন্য বিভিন্ন শেণীতে ভর্তি হওয়া শুরু করে। ছাত্রীদের অধিক চাপ ও উচ্চ শিক্ষার কথা মাথায় রেখে এই কলেজটিকে ডিগ্রী এবং ২০১০-১১ইং শিক্ষাবর্ষে অর্নাস কোর্সে উন্নতী করা হয়। নানান অবকাঠামোগত সংকট থাকলেও ফলা-ফল সন্তোষজনক হওয়ায় রাণীনগর সদরসহ পার্শবর্তী বেশ কয়েকটি উপজেলার মেয়েরা এসে উন্নত মনোরম পরিবেশে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করছে।

বর্তমানে এই মহিলা কলেজে প্রায় ৯৫০জন ছাত্রী কয়েক শ্রেণীতে অধ্যায়নরত আছে। ৩৭ জন শিক্ষক-শিক্ষীকা ও ১০জন কর্মচারী তাদের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে নিরলস ভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই কলেজে গত দুই তিন বছরে পরীক্ষায় পাশের হার প্রায় ৯৯%। যা নারী শিক্ষায় আগ্রণী ভূমিকা পালন করছে এই রাণীনগর মহিলা অর্নাস কলেজ।

অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলামের বলেন, দূর দূরান্ত থেকে আসা ছাত্রীদের জন্য একটি অত্যাধনিক আবাসিক হোস্টেল করতে পারলে আরও অনেক মেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ মিলবে। তবে মাননীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম মহিলা কলেজের যাবতীয় উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে।



মন্তব্য চালু নেই