রাণীনগরে গমের ভাল ফলনের সম্ভবনা ॥ খরচ কম হওয়ায় গম চাষে ঝুকছে কৃষক

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর (নওগাঁ) সংবাদদাতা: নওগাঁর রাণীনগরে চলতি রবিশস্য মৌসুমে গমের ভাল ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় ইরি-বোরো ধান চাষের আগ্রহ কিছুটা কমিয়ে গম চাষের দিকে ঝুকছে কৃষক। গত বন্যার কারণে এই উপজেলায় রোপা-আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হলেও দ্রুত বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় মাঠে রবিশস্যের উপযুগি জমিতে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম গম চাষে ব্যস্ত হয়ে উঠে চাষীরা। সরকার পর্যায় থেকে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ, গমের বীজ, রাসায়নিক সার বিনা মূল্যে যথা সময়ে বিতরণ করায় এই এলাকার অসহায় কৃষকদের পক্ষে আগাম জাতের গম বপণ করা সম্ভব হয়েছে। চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দূর্যোগ হানা না দেওয়ায় এবং গম চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় গমের পাশাপাশি ভোট্টারও ভাল ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।

গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এই গম যথা সময়ে ঘরে তুলতে পাড়লে এবং বিক্রয় মূল্য ভাল পেলে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে তারা কিছুটা লাভবান হবে বলে মাঠ পর্যায়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করেন।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৪শ’ ৮০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এবছর উপজেলায় প্রায় ৬শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। শুরুতেই ভাল আবহাওয়া অনুকূলে থাকা এবং গমের ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আনাগোনা না থাকায় ও মাঠ পর্যায়ে গম চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথা সময়ে উপযুক্ত পরামর্শ নজরদারি ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে গম ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় ভাল ফলনের আশায় বুক বাধছে উপজেলার কৃষকরা। যথা সময়ে সরকারী পর্যায় থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে মান সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ৪হাজার ৭০জন কৃষকের মাঝে গমের বীজ সহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হলে সঠিক সময়ে মাঠ পর্যায়ে বেশ কিছু জমি চাষের উপযুগী হওয়ায় কৃষকরা গম বপণ করতে শুরু করে।

উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিন, আব্দুল লতিফ, হবিবর রহমান জানান, আমরা এবছর জমিতে গম চাষ করেছি। গত বন্যায় আমাদের মাঠে পলি পড়ায় জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় খুব ভাল গম হয়েছে। খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় এবং চৈত্র মাসে অভাবের সময়ে গম বিক্রয় করে ইরি-বোরো আবাদ করতে কিছুট সহায়ক হবে। কৃষি অফিস থেকে কিছু গম বীজ পেলেও চাহিদা মত না পাওয়ায় আমরা নিজে বাকিটা কিনে জমিতে বপণ করেছি। গমের গাছে ভাল মানের শীষ দেখা দিয়েছে কোন প্রকার দূর্যোগ না হলে গমের আশানুরুপ ফলন পাব। দাম ভাল হলে গত বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে কিছুটা লাভের মুখ দেখবো।

উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম গোলাম সারওয়ার জানান, এবারে রাণীনগরের ৮টি ইউনিয়নে বিগত বছরের তুলনায় লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমান গম চাষ হয়েছে। যথা সময়ে জমি চাষ যোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে গম চাষ করেছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্চার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে রাণীনগর উপজেলায় গমের আবাদের ভাল ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই