রাজারহাটে প্রাথমিকের এক প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিএ পাস সনদ জালিয়াতির অভিযোগ

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক কর্তৃক বিএ পাস না করেও জালিয়াতি করে বিএ পাস সনদ দিয়ে সদ্য রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের সময় প্রধান শিক্ষকের পদটি লুফিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজারহাট উপজেলাধীন চর গতিয়াসাম বড়–য়া পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সম্প্রতি জাতীয়করণ করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. মতিয়ার রহমান ৫ বিষয়ে বিএ ফেল করেও একই সনে বিএ পাসের জালিয়াতি সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদটিতে আসিন হন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর পক্ষে মো. আব্দুল মজিদ স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ অতি সম্প্রতি কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযোগ পত্রের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমানের ভূয়া বিএ পাস সনদ ও টেবুলেশন শীটের কপি সংযুক্ত করা হয়েছে।

তাতে উল্লেখ রহিয়াছে, রংপুরের কাউনিয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে মতিয়ার রহমান, পিতা-মো. শাহ আলী প্রামানিক ১৯৯৮ সনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে বিএ পাস ও সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নেন এবং টেবুলেশন শীটে দেখা গেছে, বাংলায়-২৬, ইংরেজীতে-২১, ইসলামের ইতিহাস ২য় পত্রে-২৬, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ২য়-৩০ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৩য় পত্রে-২৭ নম্বরসহ ৫টি বিষয়ে তিনি অকৃতকার্য্য হন।

এদিকে ১৯৯৮ সনে কাউনিয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে বিএ পাস সাময়িক সনদপত্রে নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হইয়াছে মর্মে জাল সনদ তৈরী করে বিএ পাস দেখানো হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতারি পারভীনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিএ পাসের জাল সনদ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি এবং উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র রায়কে তদন্তভার দিয়েছি। খুব শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়ে যাবো। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তদন্তকারী শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র রায় এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রাথমিক তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। কয়েকদিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জানাতে পারবো। একটু অপেক্ষা করুন। প্রধান শিক্ষক মো. মতিয়ার রহমানের ০১৭৭৪৬৭০৮৮৭ নম্বরের তার মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান এবং সাক্ষাতে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

অপরদিকে বর্তমান সরকার রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে ধাপে ধাপে জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে আসার পর থেকে একটি স্বার্থন্বেষিমহল লাখ লাখ টাকা উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে যেনতেনভাবে একটি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে পূর্বের রেজিষ্ট্রেশন দেখানোর নামে ভুয়া ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি পূর্বক সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে ম্যানেজের মাধ্যমে জাতীয় করণের জন্য জোর তদবির ও লবিং করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সবমিলিয়ে বর্তমানে অত্র উপজেলায় ৮-১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠানগুলোতে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। মনে হচ্ছে যেন এসব দেখার কেউ নেই।



মন্তব্য চালু নেই