রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হচ্ছেন মনজুর আলম!

চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মনজুর আলম মনজু আবারও বিএনপির রাজনীতিতে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মহানগরীর উত্তর কাট্টলী বিএনপির যুবদল ও ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ নেতারা সম্প্রতি মনজুরের কাট্টলীর বাসভবনে দেখা করতে গেলে তিনি রাজনীতিতে ফেরার চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে তাদের জানান।

বৈঠকে বিএনপি ও যুবদল নেতারা মান-অভিমান ভুলে মনজুর আলমকে আবার রাজনীতিতে ফিরে আসার আহবান জানালে জবাবে তিনি রাজনীতিতে আবার ফিরে আসার ইচ্ছার কথা জানান। মনজুর তাদেরকে বলেন, দেখা যাক সামনের দিনে কি হয়। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। কিছু অধিকার আদায় করে নিতে হয়। ঘরে বসে থাকলে কেউ অধিকার ঘরে এনে দিবে না।

গত রোববার (২৯ মে) রাতে সাবেক মেয়রের সঙ্গে এই অর্নিধারিত বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মহানগর যুবদল নেতা ও সাবেক নগর ছাত্রদল নেতা সাহেদ আকবর বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকজন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতা সাবেক মেয়র মনজুর আলমের বাসভবনে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছি। দেশের রাজনীতি এবং সার্বিক বিষয় নিয়ে উনার সঙ্গে কথা হয়েছে।’

নেতারা বিগত সময়ের মতো দলের পাশে মনজুরকে থাকার অনুরোধ জানান। রাজনীতিতে ক্ষোভ-দুঃখ ও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা প্রত্যাহার করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করার অনুরোধ জানান তারা। জবাবে তিনি (মনজুর) দলে সক্রিয় হওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, দেখা যাক সামনে দিনে কি হয়। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই।

এ ব্যাপারে মনজুর আলমের ছেলে মোস্তফা হাকিম গ্রুপের পরিচালক সরোয়ার আলম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আব্বার সঙ্গে আসলে তাদের কী কথা হয়েছে তা আমি জানি না। তবে আপাতত তিনি ব্যবসা এবং সামাজিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন। রাজনীতি ফেরার বিষয়টি চিন্তার মধ্যে থাকলেও সহসা হয়তো তেমন কোনো লক্ষণ নেই। তবে দেখা যাক, আবার ফিরতেও পারেন। আর এ সিদ্ধান্ত নিলে সাংবাদিকদের জানিয়ে তিনি ফিরবেন।’

সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে বিএনপির কোনো পদ পদবীতে না থাকলেও দলীয় সভানেত্রীর উপদেষ্টা হয়েও এ নেতাকে কখনো সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে চট্টগ্রামের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনে অনেক ক্ষোভ ছিল। তবে খবর নিয়ে জানা গেছে মাঠে ময়দানে মিছিল মিটিংয়ে না থাকলেও দলের জন্য মনজুরের অবদান কম ছিল না।

মহানগর বিএনপির একাধিক নেতা জানান, সরকারবিরোধেী আন্দোলন চলাকালে মনজুরের অবদান ছিল। আর্থিকভাবে তিনি দলীয় নেতা কর্মীদের সহযোগিতা করেছেন। আন্দোলনের জন্য অর্থ দিয়েছেন। এমনকি নগরীর সব কয়টি থানায় বিএনপি যুবদল ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের মামলা পরিচালনার জন্য লাখ লাখ টাকা দিয়েছেন নেতাদের হাতে।

সাবেক মেয়রের সঙ্গে রোববারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তার ছেলে মোস্তফা হাকিম গ্রুপের পরিচাল সরোয়ার আলম সালু, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মঞ্জুর আলম, সাবেক ছাত্রনেতা শাহেদ আকবর, কাট্টলী বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্বাস রশিদ, বিএনপি নেতা শওকত আলী বাবুল, আয়ুব খান, মোঃ করিম আমির খান মাইনুদ্দীন হাসান মাইনু, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সদস্য মোঃ সিরাজ উদ্দীন বিএনপি নেতা মোঃ শফিকুল আলম শফি, মোঃ আলাউদ্দীন ও যুবদল সভাপতি মোজাহের আলম।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের দিন বিএনপির দলীয় প্রার্থী মনজুর আলম মনজুর নজিরবিহীন কারচুপি, কেন্দ্র দখলসহ নানা অভিযোগে সকাল ১০টার মধ্যে সংবাদ সম্মেলন নির্বাচন বর্জনের পাশপাশি দলীয় কর্মকাণ্ড এবং রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়ার ঘোষণা দেন।

এরপর থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন সাবেক এ মেয়র।



মন্তব্য চালু নেই