রাজধানীতে বাড়ছে গ্যাস সংকট

শীতের কড়ানাড়া শুরু হতে না হতেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো এলাকার সংকট এত বেশি যে গ্যাসের চুলায় রান্না করে অভ্যস্থ গৃহিনীদের খুজতে হচ্ছে বিকল্প ব্যবস্থা।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান সংকটে কেউ কেউ তুলনামূলক ব্যয়বহুল সিলিন্ডারের এলপিজি বেছে নিচ্ছে। তবে নিম্ন আয়ের অনেকেই রাজধানীতে ফিরিয়ে আনছেন সনাতনী মাটির চুলা।

গ্যাসের চাপ কম, এ কারণে অনেকে বাড়ির সামনে আবার কেউ বা ছাদের ওপর মাটির চুলা দিয়ে রান্নার কাজ সারছেন। গ্যাসে রান্না করা যাচ্ছে না বলেই মাটির চুলার ওই বিকল্প ব্যবস্থা বলে জানান মিরপুর এলাকার বাসিন্দা রহিমা আফরোজ।

সরেজমিনে ঘুরে মিরপুরের শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কাফরুল, পশ্চিম আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, আদাবর, পশ্চিম ধানমন্ডি, লালবাগ, সোবহানবাগ, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার, শাঁখারীবাজার, উত্তরা, দক্ষিণখান ও উত্তরখানসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকটের অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব এলাকায় কোথাও কোথাও সারাদিন চুলায় গ্যাস থাকে না। কোথাও সামান্য গ্যাস পাওয়া গেলেও তা দিয়ে রান্নাবান্না করা যায় না।

গ্যাস না থাকায় বাসায় রান্না হয় না, তাই অনেকে হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন এমন কথা জানান ভুক্ত ভোগীরা। মাঝরাতে গ্যাসের চাপ কিছুটা পাওয়া গেলেও সকাল হতেই তা কমতে থাকে। এর জন্য অনেকেই গ্যাস পাম্প গুলোকে দায়ী করছেন। মিরপুরের জনতা হাউজিংয়ে আগে গ্যাসের সমস্যা না থাকলেও গত পনের দিনে সংকট বেড়েছে বলে জানান, গৃহিনী জান্নাতুল ফেরদৌসী।

পল্লবীর একটি মেসে রান্না করেন শাহিদা খাতুন। জানান, কয়দিন ধরে লাকড়ির চুলায় রান্না করতে হচ্ছে। অন্যদিকে গ্যাস না থাকায় গত কয়দিন বাসায় দুপুরের রান্না হয় না বলে জানান উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা ফারজানা চৌধুরী।

তিনি বলেন, গ্যাসের চাপ অনেক কম। চায়ের পানিও ফোটে না, আজ মাছ রান্না করেছি দুই ঘণ্টা ধরে। দু’সপ্তাহ ধরে অবস্থা বেশি খারাপ হয়েছে জানিয়ে এই গৃহিনী বলেন, রান্না করতে না পেরে স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে আজ দুপুরে ঠিকমত খাবার দিতে পারেননি তিনি।

গ্যাস সরবরাহকারী তিতাস গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড বলছে, রাজধানীতে গ্যাসের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। এছাড়া শীতের কারণে গ্যাসের চাপ কমে গেছে।

তিতাসের পরিচালক (অপারেশনস) এইচ এম আলী আশরাফ জানান, রাজধানীতে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট; কিন্তু সরবরাহ আছে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুটেরও কম। গ্যাসের এই সঙ্কট কবে কাটবে- তা জানাতে পারেননি তিতাসের এই কর্মকর্তা।



মন্তব্য চালু নেই