রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা মহররম মাসে

মহররম শব্দের অর্থ হচ্ছে যাকে ‘হুরমত’ প্রদান করা হয়েছে। আরবি ভাষায় হুরমত বলা হয় সম্মান, মর্যাদা, মাহাত্ম্য ও পবিত্রতাকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ মাসকে বিশেষ সম্মান দান করেছেন। কেননা এ মাস থেকেই ইসলামি বছর শুরু হয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে চারটি মাসকে বিশেষভাবে সম্মান দান করেছেন মহররম মাস তার মধ্যে অন্যতম।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারটি আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তার মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এতে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার কর না।’ (সূরা তাওবা ৩৬)।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘রমজানের পর যদি তুমি রোজা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রোজা রাখো। কারণ এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ তায়ালা একটি জাতির তাওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তাওবা কবুল করবেন।’ (জামে তিরমিজি ১/১৫৭)।

উপরোল্লিখিত আয়াতে সম্মানিত মাসগুলো কি তা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস শরিফে বলে দিয়েছেন। সেগুলো হচ্ছে- জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব। (সহিহ বুখারি ২/৬৭২)।

এ মাসগুলো সম্মানিত হওয়ার অর্থ এই নয় যে, এগুলো ছাড়া আর কোনো মাসের কোনো সম্মান নেই। কারণ রমজান মাস হচ্ছে বছরের সবচেয়ে সম্মানিত মাস। তবে এ মাসগুলোর এক ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, আর তা হচ্ছে এ মাসগুলো ইসলামপূর্ব সময়েও মক্কার মুশরিকদের কাছে সম্মানিত ছিল এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এগুলোর সম্মানকে অবশিষ্ট রেখেছেন।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর শরিয়তেও অন্যান্য নবীর মতো এ মাসগুলোর সম্মান-মর্যাদা স্বীকৃত ছিল এবং এগুলোতে জায়েজ উদ্দেশ্যও যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম ছিল। মক্কার মুশরিকরা নিজেদের হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর অনুসারী দাবি করত এবং তাদের মাঝে হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর অনেক কথার প্রচলন ছিল। যদিও বাস্তবতা ছিল এর ভিন্ন, যা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদের এ অসাড় দাবি খণ্ডন করেছেন এই বলে, ‘তিনি (হজরত ইবরাহিম আ.) মুশরিক ছিলেন না’। (সূরা বাকারা ১৩৫)।

তারপরও তারা এ মাসগুলোকে সম্মান করত এবং যুদ্ধ-বিগ্রহকে হারাম মনে করত। হাদিস শরিফে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহররমের ১০ তারিখে রোজা রাখার আদেশ দিয়েছেন। শুরুতে (নবী যুগে) যখন রমজানের রোজা ফরজ ছিল না তখন আশুরার রোজা ফরজ ছিল। পরে যখন রমজানের রোজা ফরজ হয় তখন আশুরার রোজা ফরজ থাকেনি। (সুনানে আবু দাউদ ২৪৪৪)।

তবে এ রোজা অনেক ফজিলতপূর্ণ ও এর মহা সাওয়াবের কথা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস শরিফে ব্যক্ত করেছেন।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হচ্ছে মহররম মাসের রোজা।’ (মুসলিম শরিফ)।



মন্তব্য চালু নেই