রমজানের আগেই মাংসের দাম বাড়াতে ফের ধর্মঘট

চার মাসের মাথায় আগামী মাসে আবারও বাড়ছে মাংসের দাম। আর এ দাম বাড়ানোর বৈধতা দিতে ফের ধর্মঘটে যাচ্ছে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি। পবিত্র শবেবরাত ও রমজান মাসকে সামনে রেখে আগামী ৩০ এপ্রিল এ ধর্মঘট ডাকা হতে পারে। ধর্মঘট শেষে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসবে মাংসের দাম কত বাড়ছে।

আসন্ন ধর্মঘট ও ফের মাংসের দাম বাড়ানোর জন্য অবশ্য চামড়াশিল্পর চলমান সংকটকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম। তার এ দাবির সঙ্গে একমত বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ, বাংলাদেশ লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ মাহিন, হাইড অ্যান্ড স্কিন রি-টেইল ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নওয়াব আলীসহ চামড়াশিল্পর অন্যান্য সংগঠনের নেতারাও।

এর আগে দেশের সীমান্ত অঞ্চলে বিজিবি, পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও রাজধানীর গাবতলী হাটের ইজারাদারের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ধর্মঘট করেছিল মাংস ব্যবসায়ীদের এ সংগঠন। তখন সংগঠনের নেতারা দাবি করেছিলেন, এসব চাঁদাবাজি বন্ধ হলে গরুর মাংস প্রতিকেজি চার শ টাকার স্থলে তিন শ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন তারা। ১৪ দিনের মাথায় সরকারি আশ্বাসে গত জানুয়ারির ওই ধর্মঘট তুলে নেওয়া হলেও মাংসের দাম বাড়ে কেজিপ্রতি এক শ টাকা। বর্তমানে রাজধানীতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি পাঁচ শ টাকা দরে।

চার মাসের মাথায় ফের দাম বাড়ানোর কারণ বা ধর্মঘট ডাকার যুক্তি হিসেবে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, ‘রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারি বন্ধ হওয়ায় বর্তমানে চামড়া ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা চামড়া কিনছেন না। এতে চামড়া নষ্ট হচ্ছে। একটি চামড়ার দাম যদি দুই হাজার টাকাও হয় তার চাপ গিয়ে পড়ছে মাংসের ওপর। সামনে শবেবরাত, রমজান, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। এ সময় সবচেয়ে বেশি গরু জবাই হয়। এ উৎসবগুলোকে সামনে রেখে এমনিতেই দেশের গরুর বাজার চড়া। তার ওপর চামড়ার দাম না পাওয়ায় মাংস বিক্রি কঠিন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় আমরা ধর্মঘটে না গিয়ে পারছি না। ‘

তিনি বলেন, ‘আগামী ৩০ এপ্রিল এ ধর্মঘটের ঘোষণা আসতে পারে। একই সঙ্গে বাড়ানো হবে মাংসের দাম। ‘

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, হাজারীবাগে ট্যানারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ট্যানারি মালিকরা চামড়া ওয়েট ব্লু করতে পারছেন না। ফলে চামড়া কিনতেও পারছেন না তারা। সাভারে সামান্য যে কয়েকটি ট্যানারি ওয়েট ব্লু’র কাজ করছে, তারা তো আর সব চামড়া কিনতে পারবে না। ফলে কাঁচা চামড়ার দর পড়ে গেছে। এর প্রভাব তো মাংসের ওপর পড়বেই।

বাংলাদেশ কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ট্যানারি মালিকরা চামড়া না কিনলে আমরা চামড়া দিয়ে কি করব? তাই চামড়া কিনছেন না পোস্তার ব্যবসায়ীরা। এতে বিপাকে পড়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে রমজানে ঢাকাবাসী গরু বা খাসির মাংস চোখে নাও দেখতে পারেন। ‘



মন্তব্য চালু নেই