রংয়ে ডংয়ে বদলে গেছে রাউজান! গোলাপী রংয়ে নজরকাড়া সাজসজ্জা

রংয়ে রংয়ে রঙ্গিন হয়ে বদলে যাচ্ছে রাউজান! এলাকা জুড়ে চলছে সাজসজ্জার কাজ-উন্নত বিশ্বের আদলে দেশের মধ্যে আধুনিক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন তিলোকত্তমা নগরীর স্বপ্ন প্রতিটি সড়ক পথ চকচকে পরিস্কার ও গাছ পালা সমূহে চুনকামে সৌন্দর্য্য বর্ধন। বদলে যাচ্ছে রাউজান। পুরো উপজেলা হবে তিলোকত্তমা নগরীর আদলে।

এ লক্ষে উপজেলা জুড়ে চলছে সাজ সজ্জার কাজ। দেশের সব উপজেলা থেকে সম্পূর্ন ব্যতিক্রম সৌন্দর্য্য উপজেলা হবে রাউজান। ইতিমধ্যে চৌদ্দ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভার ছোট বড় সড়ক কারপেটিং ও ব্রীক সলিন কাজ শেষ হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ন কালভাট ও ব্রীজ গুলোকে নতুন করে নির্মান করা করার পাশাপাশি ব্রীজের রেলিং গুলোকে দৃষ্টি নন্দন রং দিয়ে আকর্ষনীয় করা হয়েছে।

পৌর এলাকায় সরকারী ও ব্যক্তি মালিকাধীন ঘর, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব স্থাপনা সমূহকে পিংক কালার করা হচ্ছে। লক্ষ্য একটাই গোলাপী শহর হবে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে। এখন চলছে বসত বাড়ির আঙ্গিনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও প্রতিটি সড়কের গাছ চুনকামের পাশাপাশি আগাছা পরিস্কার।

গত ১৮ বছর ধরে পরিপূর্ণ রাউজান নির্মানের ধারাবাহিকতায় এ উপজেলায় অবকাঠামো গত উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ব্রিটিশ আমলের সরকারী জরাজীর্ণ অবকাঠামো নতুন করে নির্মান করার কাজও শেষ পর্যায়ে। রাউজানের মানুষের বিদ্যুৎ সমস্যা নিরসনে ২৬ মেগাওয়ার্ড আলাদা রাউজান বাসীর জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে। রাউজানে আর বিদ্যুৎ লোডশেডিং নেই বলেই চলে। জরাজীর্ণ উপজেলা পরিষদের ভবন ভেঙ্গে চার তলা বিশিষ্ট আধুনিক মান সম্পূন উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন হয়েছে রাউজানে।

২০০২ সালে ব্রিটিশ শাসন আমলে নির্মিত রাউজান থানা ভবন নতুন ভবন শোভা পাচ্ছে উপজেলা সদরে। ২০০৮ সালে রাউজান পৌরসভা গঠিত হলে গত দশ বছর জরাজির্ণ সুলতানপুর ইউপি ভবনে বসে সীমিত আকারে পৌর সেবা কার্যক্রম পরিচালনা হতো। পৌরসভাকে সত্যিকার অর্থে সেবাদান প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে নির্মিত হয়েছে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পূন্ন পৌর ভবন। স্কুল, কলেজ ও রাজপথে সভা সমাবেশ বন্ধ করতে এবং নিদিষ্ট স্থানে সব ধরনের অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্র হিসাবে উপজেলা সদরে নির্মান করা হয়েছে একেএম ফজলুল করিব চৌধুরী অডিটিরিয়াম ও দক্ষিণ রাউজানে শেখ কামাল কমপ্লেক্স। এই দুটি প্রতিষ্ঠানই দৃষ্টি নন্দন। ষ্টেশান মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে উপজেলা মডেল স্কুল করা হয়েছে। প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চায়না বাংলা যৌথ ভাবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন। শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে এই উপজেলায় শিক্ষক সংকট সমাধানের পাশাপাশি অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।

উপজেলার দক্ষিণে নোয়াপাড়া কলেজ, ইমান গজ্জালী কলেজ ও সদরে রাউজান কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ রুপান্তর করা হয়েছে। গহিরা ডিগ্রী কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্ষায়ে। রাউজানে আবাসন সংকট নিরসনে দুটি আবাসন প্রকল্প করে প্রায় তিনশ চল্লিশ পরিবারকে বাসস্থান দেয়া হয়েছে। মধ্যবৃক্ত ও উচ্চবৃক্ত পরিবারের আবাসন নিশ্চিত করতে সরকারের গৃহায়ন মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে দুটি উপ-শহর (পিংক সিটি) নির্মানার্ধীন রয়েছে।

উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণে পিংক সিটি-১ ও পিংক সিটি-২ নামে এ শহরে ফট বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে রাউজানের প্রায় পাঁচ শতাধিক লোককে। রাউজানের সীমান্তবর্তী উপজেলার সাথে ব্যবসায়িক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির লক্ষে সর্তা খালের উপর নির্মান করা হয়েছে হযরত আলী হোসেন শাহ ব্রীজ, তেলপাড়ি ব্রিজ-১, তেলপাড়ি ব্রিজ-২ গনিঘাট ব্রীজ, আকবর শাহ ব্রীজ, নূরুল হক ব্রীজ ও নিচ্ছারঘাট ব্রীজ।

এছাড়ার অসংখ্য ব্রিজ নির্মিত হয়েছে রাউজানের জনগুরুত্ব এলাকায়। রাউজান- রাঙ্গামাটি সড়কে সর্তারঘাট ব্রীজ সংলগ্ন হালদা নদীর উপর নির্মনাধীন রয়েছে একটি চাশ ফুট দীর্ঘ হালদা সেতু। উপজেলার উত্তর প্রান্তে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্র সৈনিক মাস্টার দা সূর্য সেনের নামে রাঙ্গামাটি সড়কের পাশে একটি সম্পূর্ণ নতুন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাউজান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পাশ্ববর্তী বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে সূর্য সেন চত্তর। এখানে মাস্টার দা’র অবয় মুর্তিসহ বিনোদন মূলক পার্ক সৌন্দয্য বর্ধনে রাউজানকে পরিপূর্ণ তৃপ্তি এনে দিয়েছে। একই ভাবে মহাকবি নবীন চন্দ্র সেনের নামে কবির পৈত্রিক জম্মভূমি পূর্ব গুজরা গ্রামে নির্মিত হয়েছে মনোরম নবীন সেন কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সে কবির শশ্মানে মুর্তি স্থাপন, গ্যালারী, অডিটেরিয়াম, শিশু পার্ক ও শশ্মান ঘাট রয়েছে। প্রতিদিন দর্শনার্থীরা কবির জীবনী জানার জন্য ও বিনোদন পার্কে বেড়াতে আসে। এই ভাবে রাউজানের সৌন্দর্য্য, উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের সচিত্র প্রতিবেদন লিখে শেষ করা যাবে না।

প্রকৃতিক সৌন্দর্য্য, উন্নয়ন মূলক কর্মযজ্ঞ, পিংক কালারের উপজেলা শহর করার স্বপ্ন, সুন্দর উপজেলা বাস্তবায়নের রুপকার হলো রেল মন্ত্রনালয় স¤পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি।

জানা যায়, রাউজানকে তিলোকত্তমা নগরী করতে রাত দিন কাজ করে যাচ্ছে ফজলে করিম। স্বাধীনতা পর থেকে এ উপজেলা ছিল অবহেলিত। জরাজির্ণ এই এলাকার দায়ি নিয়ে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। কি ছিন রাউজানে, এখন রাউজানে কি নেই, এমন হিসার নিকাশ চলে পুরো চট্টগ্রাম জুড়ে। এবার তিনি হাত দিয়েছেন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন অভিযানে। প্রতিদিন ঘরে এমপির নির্দেশে দুই হাজার দলীয় নেতাকর্মী কাজ করছে গ্রাম থেকে গ্রামে। চলছে বাড়ি বাড়ি চুনকামের কাজ। বদলে যাচ্ছে রাউজানের চেহারা।

আওয়ামীলীগ সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু করলে রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী রাউজানকে বিশ্বের উন্নত ও দেশের মধ্যে আধুনিক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন উপজেলা বাস্তবায়নে কাজ করছে। পুরো উপজেলা জুড়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রধান সড়কসহ প্রতিটি সড়ক পথে চকচকে পরিস্কার ও গাছ পালা সমূহে চুনকাম সৌন্দর্য্য বর্ধনে শোভা পাচ্ছে সর্বত্র।



মন্তব্য চালু নেই