রংপুরের এডিসি তনিমা’র বিরল দৃষ্টান্ত!

মঙ্গলবার সকাল ৮টায় রংপুর শহরে পায়রা চত্বর এলাকায় ট্রাক চাপা পড়ে আপন নামের ১৩ বছরের একটি শিশু মৃত্যুবরণ করে। নিহত আপন রংপুরের জুম্মাপাড়ার সুইপার কলোনীর নাদিম মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় সিটি করপোরেশন এলাকার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা (সুইপাররা) সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে।
খবর পেয়ে রংপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা মিসেস তনিমা তাসনিম পুলিশসহ পায়রাচত্বরে ঘটনাস্থলে চলে আসেন। সেখানে উপস্থিত আপনের মা এডিসি তাসনিমের পা জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ার চেষ্টা করলে তাসনিম ঐ সুইপার নারীকে বুকে জড়িয়ে ধরে সন্তান হারানোর কষ্ট লাঘবে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় উপস্থিত সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কেন না যেখানে এখনও সুইপারদের রেস্টুরেন্টে পানি খেতে দেওয়া হয় না। আলাদা কাগজে খাবার দেওয়া হয়, তাঁদের নিজস্ব গ্লাসে পানি দেওয়া হয় এবং এক পর্যায়ে নিজেও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। এসময় সেখানে উপস্থিত এডিশনাল এসপি জয়নাল আবেদীন সহ অনেকেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

স্থানীয়রা জানান, ‘এডমিন ক্যাডারের কোনও কর্মকর্তা এ ধরণের মানবিক মুল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে কোনও নিম্ন শ্রেণীর (বিশেষ করে সুইপার) কাউকে প্রকাশ্য রাস্তায় বুকে জড়িয়ে ধরতে পারে তা কল্পনারও মধ্যে অসম্ভব। তাও আবার একজন নারী হয়ে!’

image_281350_0.12108212_922301237854792_7946844512592593931_n

রংপুরের সাংবাদিক মাইনুল ফেসবুকে বিস্তারিত লিখে বলেন, ‘মিসেস তনিমা তাসনিম একদিকে জেলার একজন অন্যতম সর্ব্বোচ্চ কর্মকর্তা, রংপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক, এডিএম সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনকারী এ কর্মকর্তা যে একজন শুধু রক্তমাংসের মানুষই নন, তিনি যে একজন সংবেদনশীল মনের প্রচন্ড মানবিকতায় উচ্চ আসনের মানুষ, উচ্চ বংশ মর্যাদার মানুষ তারই বহি:প্রকাশ দেখলাম আমরা।’

এই বিষয়ে মুঠোফোনে মিসেস তনিমা তাসনিম সাংবাদিকদের বলেন, আমিওতো মা, আমারও একটি সন্তান আছে। আপনকে হারিয়ে তার মায়ের যে কি কঠিন বেদনা, তা একজন মা হিসেবে অনুভূত হয়েছিল সেখানে গিয়ে।



মন্তব্য চালু নেই