যে গাড়িতে চড়ে দিল্লি ঘুরবেন ওবামা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফর উপলক্ষে দিল্লিতে সাজ সাজ বর পড়ে গেছে। দিল্লি শহরটি সাজানো হয়েছে আলোকসজ্জা ও নানা রঙে।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে ওবামার নিরাপত্তার বিষয়টি সবার উপরে ওঠে এসেছে। সাত স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছেন ভারত। আকাশপথেও বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। রাজধানী নয়াদিল্লিকে রাখা হয়েছে সুতীক্ষ্ণ নজরদারিতে। ওবামার নিরাপত্তায় কমতি রাখছে না যুত্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীও।

ওবামার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ডগ স্কোয়াড ও এর চৌকস কর্মকর্তারা দিল্লিতে হাজির হয়েছেন দুদিন আগেই। এবার ‘বিস্ট’ নামে পরিচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের অতি সুরক্ষিত লিমুজিন গাড়িটি ইতিমধ্যে দিল্লিতে এসে পৌঁছেছে। একটি বিশেষ বিমানে করে আসা গাড়িটি দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পার্ক করে রাখা হয়েছে। দিল্লির সড়কপথে নিজস্ব বাহন ‘বিস্টে’করেই যাতায়াত করবেন ওবামা।

সবচেয়ে সুরক্ষিত গাড়ি এটি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই বিলাসবহুল গাড়িটির দাম প্রায় ১২ কোটি টাকা (১৫ লাখ ডলার)। গাড়িটি গুলিনিরোধী। রকেটচালিত গ্রেনেডেও গাড়িটির কিছু হবে না। শত্রুর হামলা মোকাবিলার প্রয়োজনীয় প্রতিরোধব্যবস্থা ছাড়াও এতে রয়েছে প্রতিপক্ষের পাল্টা জবাব দেওয়ার মতো আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। আরো রয়েছে আরামদায়কভাবে ভ্রমণের আয়োজন। একই সঙ্গে রয়েছে আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা।

গাড়িটির সর্বোচ্চ গতি হচ্ছে ঘণ্টায় ৬০ মাইল। গাড়ির চালক মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর একজন সুপ্রশিক্ষিত গোয়েন্দা। এর চাকা এমনভাবে তৈরি যে বোমা মেরে টায়ার উড়িয়ে দিলেও এটি চলবে।

সর্বাধুনিক যোগাযোগ-প্রযুক্তির মাধ্যমে ওই গাড়িতে এমন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যে ওবামা গাড়ির পেছনের আসনে বসে তার স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করতে পারেন। স্রেফ একটি বোতাম টিপলেই ওবামার সামনে খুলে যায় ল্যাপটপ। তারবিহীন ইন্টারনেটব্যবস্থা ও স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে নিমেষে তিনি শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। গাড়িতে ওবামার জন্য বিনোদনের ব্যবস্থাও রয়েছে। এ জন্য রয়েছে সিডি ও আন্যান্য আধুনিক ইলেক্ট্রনিক সরঞ্জাম।

তবে দিল্লি থেকে বিমানে করে সস্ত্রীক আগ্রায় যাবেন ওবামা। আগ্রায় বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে অবতরণ করার পর হেলিকপ্টারে নাকি ‘বিস্ট’গাড়িতে চড়ে তাজমহল দেখতে যাবেন, তা পরিষ্কার নয়।

শনিবার ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে প্রায় ১৫ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরায় সংশ্লিষ্ট এলাকা ও রাজপথের প্রতি ইঞ্চি তন্ন তন্ন করে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই দেশের গোয়েন্দারা একসঙ্গে কাজ করছেন। দিল্লি পুলিশের প্রায় ৪৫ হাজার সদস্য বিরামহীনভাবে পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিংয়ের কাজ করছেন।

তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, জিনিউজ, পিটিআই।



মন্তব্য চালু নেই