যে খামখেয়ালিপনা নারীর সঙ্গে কখনোই সম্পর্ক করা ঠিক না!

পুরুষদের মাঝে এমন অনেকেই আছে যাদের খামখেয়ালিপনায় ভরা আচরণের কারণে আপনি তাদেরকে এড়িয়ে চলতেই পছন্দ করেন। এ ক্ষেত্রে নারীরাও কম যান না। এখানে এমন কিছু নারীর বিবরণ তুলে ধরা হল যাদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে যাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে।

১. নিয়ন্ত্রণবাদি: এই ধরনের নারীরা খুবই আধিপত্যবাদি হয়। আর এরা সবসময় নিজেকেই বড় করে দেখাতে চান। আপনি কী খাবেন না খাবেন, কোন সিনেমা দেখবেন না দেখবেন বা বন্ধুদের কার সঙ্গে আড্ডা দেবেন না দেবেন সবকিছুই ঠিক করে দিতে চান তিনি। এতে আপনার এমন অনুভুতি হতে পারে যে, আদৌ আপনার নিজস্ব অস্তিত্ব বলে কিছু আছে কি না?

২. টাকা দাও হানি: এটাকে অনেকটাই বলা যেতে পারে দিন-দুপুরে ডাকাতি। এই ধরনের নারীরা ভেড়ার লোম বাছার মতো করে আপনাকে কুড়ে কুড়ে খাবে, অনেকটা ধনী থেকে রাস্তার ফকির বানিয়ে ছাড়ার গল্পের মতো। এ ক্ষেত্রে সে এমনকি নিজের আত্মসম্মানটা বিকিয়ে দিতেও কসুর করবে না।

উদাহরণত, আপনারা হয়তো একসঙ্গে সিনেমা দেখতে গেলেন। কিন্তু আপনার কাছে টাকা নেই। এ ক্ষেত্রে আমিই টিকিটের টাকা দিচ্ছি- না বলে সে বলবে আজ নয় হানি আরেকদিন। এমনকি তার সকল প্রয়োজনে আপনারই কাছে টাকা চাইবে সে।
উপহার, ফুলের তোড়া, রোমান্টিক কার্ড বা যে কোনো ধরনের তোষামোদই তার পছন্দ। জগতের সকল বস্তুগত ভোগ-বিলাস যেন সব তারই জন্য। সে আপনাকে সবসময়ই সে কী পছন্দ করে সে ব্যাপারে ইঙ্গিত দেবে যেন আপনি সেগুলো তাকে কিনে দেন। তার কাছে আপনি তার ভোগ-বিলাস ও আরাম আয়েশের জন্য কী করলেন সেটাই শুধু ভালোবাসা। এই ধরনের মেয়েরা যখনই কোনো ধনী পুরুষের সন্ধান পায় তৎক্ষণাৎ সটকে পড়ে!

৩. তার বন্ধুদের মেলে আপনি উপেক্ষিত: সে সবসময়ই তার বন্ধুদের গল্প নিয়ে মেতে থাকে। সে আপনাকে তার জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানে একপ্রকার উপস্থিত থাকতে বাধ্য করবে। এমনকি ওই সময়টাতে সে আপনাকে সমবসময় তার আশেপাশেই থাকতেও বাধ্য করবে। এমনকি তার বন্ধুরাও সবসময় তার সঙ্গে সঙ্গেই থাকবে। এতে আপনার প্রাইভেসি বলে আর কিছুই থাকবে না।

৪. সবাই তাকে পেতে চায়: বলা ভাল এই ধরনের নারীদের সঙ্গে কোনো পুরুষই চাইবে না সম্পর্ক করতে। আপনার হয়তো মনে হতে পারে যে শহরের সেরা নারীটির সঙ্গেই আপনি ডেটিং করছেন। আর যদি এমন হয় যে, ‘তোমার ইচ্ছাই আমার ইচ্ছা’- তাকে এমন একটি আসনে আসীন করেছেন আপনি। তাহলে নিশ্চিত থাকুন যে আপনি তাকে শুরুতেই হারিয়েছেন! তার আসল লক্ষ্য আসলে আপনার বন্ধুকে পাওয়া। আর সে শুধু আপনার বন্ধুদের পাওয়ার জন্য আপনাকে ব্যবহার করছে। আপনি কি তাকে এই কাজে সহায়তা করতে চান?

৫. জন্মসূত্রেই সে এক মহাতারকা: এ ধরনের নারীর প্রেমে পড়লে আপনার পস্তানো নিশ্চিত; রাগ করবেন না যেন। কিন্তু সত্যি কথা হল আপনি যদি কলেজের জনপ্রিয় সুন্দরটির প্রেমে পড়েন তাহলে আপনার এই দশায় নিপতিত হওয়াটাই নিশ্চিত। অনেকেই হয়তো প্রায়ই তার সঙ্গে আপনাকে দেখে বলবে, বাহ! ভালোই তো বাগিয়েছ। এতে আপনার আত্মবিশ্বাসটাও কিছুটা বাড়বে। কিন্তু বাস্তবতাটা আপনাকে কুড়ে কুড়ে খাবে। কারণ তার তারকা খ্যাতির নিচে চাপা পড়বে আপনার ব্যক্তিত্ব। আপনার নিজস্ব কোনো অস্তিত্বই যেন আর নেই এমনই অবস্থা দাঁড়াবে। আপনিও হয়তো তার চেয়ে কোনো অংশে কম নন। কিন্তু আপনাকে সবসময়ই তার বয়ফ্রেন্ড হিসেবেই চিনবে লোকে। আপনি কি তার ছায়াতলেই বেঁচে থাকতে চান?

৬. আগের বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে তুলনা: আপনি হয়তো তাকে খুশি করার জন্য নিজের সেরা চেষ্টাটা করে যাচ্ছেন। প্রতিনিয়তই নিজেকে একজন সেরা প্রেমিক হিসেবে প্রমাণের চেষ্টাও করে যাচ্ছেন। কিন্তু এতো কিছুর পরও সে আপনাকে স্বস্তিতে থাকতে দিবে না। সারাক্ষণই শুধু সে আপনাকে তার সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে তুলনা করে ছোট করতে থাকবে। তার সাবেক প্রেমিক তার জন্য এটা করতো, ওটা করতো; যেগুলো আপনি তার জন্য করছেন না। এতে আপনি মর্মাহত হতে হতে হয়তো একসময় হয়তো বাকরুদ্ধ ও বাষ্পরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

৭. অভিযোগের কারখানা: সে আপনাকে ঘৃণা করতেই যেন ভালোবাসে। সে সবসময়ই শুধু আপনার সবকাজে ভুল ধরতে ওস্তাদ। সে এ পর্যন্ত আপনি তার জন্য যা কিছু করেছেন তার সবকিছুতেই ভূল ধরেছে। কিন্তু আপনার কোনো কাজেরই মূল্যায়ন করেনি। এতে যা হবে তা হল আপনি আত্মবিশ্বাস হারাবেন এবং নিজের প্রতি সম্মানবোধে আপনার মনে ঘাটতি দেখা দেবে।

৮. মিস হিংসুটে: সম্পর্কের প্রথমদিন থেকেই সে আপনার সেরা বন্ধুদের ঘৃণা করা শুরু করবে। আর এ ঘৃণার বিষয়টি সে সুযোগ পেলেই আপনাকে জানানোর চেষ্টা করবে। সে সবসময়ই আপনার সঙ্গে অন্যদের বন্ধুত্ব ভাঙ্গার চেষ্টায় লিপ্ত হবে। সে যা চায় তা হল তার প্রতিই আপনার সকল মনোযোগ নিবদ্ধ করে রাখতে। আপনি কোথায় যান কখন কী করেন এসব ব্যাপারে সে সবসময়ই নজরদারি করে। এসময়টাতে যদি আপনি তার টেক্সট ম্যাসেজের উত্তর না দেন বা ফোন কল রিসিভ না করেন তাহলেই তার মেজার পঞ্চমে উঠবে! এতে প্রেম-ভালোবাসার প্রতি আপনার একটা বিতৃষ্ণাই চলে আসবে।

৯. ভূতে-পাওয়া দানবী: যখনই আপনার ফোনে কোনো মেয়ে বন্ধুর কল আসবে তখনই সে একটা ঝগড়া বাধিয়ে দেবে। সে সবসময়ই আপনার কল রেকর্ড ও টেক্সট ম্যাসেজগুলোকে তাড়া করে বেড়াবে। যেন আপনি অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্কেই না জড়ান। এমনকি সে তার নিজের সেরা বন্ধুকে আপনার সঙ্গে কখনোই পরিচয় করিয়ে দেবে না; এতটাই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে সে।

১০. দেখতেই প্রতারণামূলক: কলেজের সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটি যখন আপনাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় তখন হয়তো আপনি আহ্লাদে আটখানা হয়ে যান। কিন্তু সম্পর্কের কিছুদিন যেতে না যেতেই হয়তো আপনি টের পেলেন যে সে আপনার টাইপের নয়। আপনি হয়তো তাকে হারিয়ে ইগোর দংশনে নিপীড়িত হতে চান না। আবার একই সময়ে হয়তো আপনার এই অনুভুতিও হওয়া শুরু করলো যে আপনি হয়তো শুধু তার বাহুডোরেই আবদ্ধ থাকছেন যেন। এ এক উভয় সংকট।

১১. অনুভুতিতে কাঁচা: আপনাদের সম্পর্কের হয়তো এখনো একমাসও অতিবাহিত হয়নি। অথচ এখনই সে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায়! এমনকি আপনারা হয়তো এখনো পরস্পরকে ভালো মতো বুঝেও উঠতেও পারেন নি। কিন্তু সে এমন একটা ভাব করবে যে সে আপনাকে বুঝিবা কতটাই না বুঝে ফেলেছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আপনি নিজে কী ভাবছেন না ভাবছেন সে ব্যাপারে সে থোড়াই কেয়ার করে। সে আপনার প্রতি এতটাই অনুরক্ত হয়ে পড়েছে যে সে এমনকি আপনার জন্য উপোস করা বা রোজা রাখাও শুরু করে দিয়েছে। আর সে আপনাকে নিয়ে সদাই ভাবালুতায় মগ্ন থাকে। এতে করে বন্ধু মহলেও আপনাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ শুরু হয়। সে আপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ে কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। যদি এমনটা হয় তাহলে এখনই সাবধান হউন। কারণ সে আপনাকে মূলত আবেগের ফাঁদে আটকে ফেলতে চাইছে। একবার ফেঁসে গেলে আর বের হওয়ার রাস্তা থাকবে না।

১২. অতিনারীবাদি: পুরুষতন্ত্রের খপ্পর থেকে দুনিয়ার সব নারীদের বাঁচানোর জন্যই যেন তার জন্ম! নারীর ক্ষমতায়ন ও তাদের আলোকিতকরনই যেন তার জীবনের একমাত্র ব্রত! উঠতে বসতে তিনি শুধু নারীদের উপর পুরুষদের নিপীড়ন নিয়ে অভিযোগ করবেন! কিন্তু আরো বিজ্জনক সত্যটি হল আপনি তার বয়ফ্রেন্ড হওয়া সত্ত্বেও এই একচোখা আদর্শবাদি নারীর আপনার প্রতিও বিশেষ সম্মানবোধ কাজ করবে না! এ ধরনের প্রেমিকা আপনাকে ফ্রেমবন্দি করে ছাড়বে! সূতরাং জীবনটাকে উপভোগ করতে চাইলে আজই সটকে পড়ুন! এখনই পালান! নয়তো কপালে খারাবি আছে!

১৩. বহুগামি: অনেক নারীই একসঙ্গে অনেক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে গর্ববোধ করেন। এবং সব পুরুষের কাছেই অপর পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টি সুনিপুন ভাবেই গোপন রাখেন; একদমই জানতে দেন না। এমনকি এ ব্যাপারে নিজের মধ্যে কোনো ধরনের বিব্রতবোধ বা অপরাধবোধও কাজ করে না ওই নারীর। আপনার কাছেও তার বন্ধুরা সবসময় অজানাই রয়ে যায়। এর মানে আসলে আপনাকে বোকা বানানো হচ্ছে। ভালোবাসার সম্পর্কের ক্ষেত্রে সততা ও আনুগত্য সবচেয়ে জরুরি বিষয়। আপনি কি এমন একজন প্রতারক মেয়েকে নিজের প্রেমিকা হিসেবে চাইবেন?



মন্তব্য চালু নেই