যে কেউ যে কারোর সাথে অবাধে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে

১৭৯৩ সালে ফরাসি জাহাজ এসপেরেন্স-এর লেফটেন্যান্ট ডেনিস ট্রোবিয়ান্ড পাপুয়া নিউ গিনির ট্রোবিয়ান্ড দ্বীপ আবিষ্কার করেন। তার নাম অনুসারেই দ্বীপটির নামকরণ হয়।

সে এক ভালবাসার মুক্ত দুনিয়া। অবাধ প্রেম সেখানে। ইচ্ছা হলেই নারী বা পুরুষ তার সঙ্গী বদল করতে পারে। বেছে নিতে পারে পছন্দের সঙ্গী। অবাধে বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে তারা। এমন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য প্রতিটি গ্রামে বিশেষ আকৃতির কুঁড়েঘর আছে। একে বলা হয় লাভ হাট বা ভালবাসা ঘর। সেই ঘরকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় বুকুমাতুলা। এমন ভালবাসায় কোন বাধা নেই। কারও কোন অনুযোগ নেই। কারণ, সবার জন্যই এ অধিকার সমান। তাই বলে তারা তাদের সম্প্রদায়ের বাইরের কারও সঙ্গে এমন সম্পর্ক গড়ে না।

এমন সংস্কৃতি এখনও বহাল আছে পাপুয়া নিউ গিনির ট্রোবিয়ান্ড দ্বীপপুঞ্জে। সেখানে বসবাসকারী নারীদের বেশির ভাগই থাকে খোলামেলা। তাদের শরীরের উপরের অংশে কোন পোশাক থাকে না। কোমরের কাছে জড়ানো থাকে এক টুকরো কাপড়। সেই অবস্থায় তারা খোলা আকাশের নিচে ক্রিকেট খেলায় মেতে ওঠে। ইচ্ছা হলেই পছন্দের কোন সঙ্গীকে নিয়ে তারা বুকুমাতুলায় গিয়ে উদ্দাম আদিমতায় মেতে ওঠে। এটা নারী-পুরুষ সবার জন্যই প্রযোজ্য।

এত অবাধ যৌনাচার যেখানে সেই ট্রোবিয়ান্ড দ্বীপপুঞ্জের মানুষরা মনে করেন শিশুর জন্ম হলো এক ধরনের জাদু। এতে যৌনতা, গর্ভধারণের কোন সম্পর্ক নেই। তারা এখনও কলাপাতা ও মিষ্টি আলুকে মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করে। কলাপাতা মানে শুকানো কলাপাতাকে মুদ্রা হিসেবে ধরা হয়। এক পাউন্ড মুদ্রার মূল্যমানের সমান ধরা হয় ৫০টি কলাপাতা।

ভালবাসাহীন এ সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে থাকেন নারীরা। তারা ইচ্ছামতো যত খুশি প্রেমিক রাখতে পারেন। তারা বিয়ের আগে ও পরে অবাধ যৌনাচারে মাততে পারেন। মেয়েদের কুমারিত্বের কোনই মূল্য নেই সেখানে। ওই দ্বীপপুঞ্জের ভাইকিকি গ্রামের গ্রামপ্রধান তোলোবুওয়া। তিনি সব সময় পান বহন করেন। পাথর বহন করেন। ফলাযুক্ত হাতিয়ার বহন করেন। এগুলো বানানো হয় পাখির হাড়, মানুষের হাড় থেকে।

যদি সেখানে কোন যুবতী অন্তঃসত্ত্বা হয় তাহলে তার বাচ্চাকে রেখে দেয় তার পরিবার। কারণ, স্থানীয় রীতি অনুযায়ী ওই যুবতীর স্বামী শুধু তার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়কে উন্মুক্ত করে দেয়। নবজাতকের আসল পিতা ধরা হয় বালোমা অথবা ঐশ্বরিক শক্তি।

ইদানীং এ সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। এতে তাদের দু’চার জনের দৃষ্টিভঙ্গিতে সামান্য পরিবর্তন আসছে। বিয়ে বলতে যা বোঝায়, যেমন একত্রে ঘর-সংসার করতে হবে, সন্তান লালন পালন করতে হবে, ট্রোবিয়ান্ডদের মধ্যে বিবাহিত জীবন সে রকম নয়। সেখানে একজন নারীর জীবনে একজন পুরুষ শুধু তার যৌন বাসনা চরিতার্থ করে।

এটাই একজন নারীর কাছে বিবাহিত জীবন। তাদের মধ্যে এই যে অবাধ যৌনাচার এতে এইচআইভি ও এইডস-এর মতো ভয়াবহ রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এসব রোগকে তারা চিকিৎসা নেই এমন অসুস্থতা হিসেবে আখ্যায়িত করে। তাই বলে তারা তাদের রীতি থেকে বেরিয়ে আসে না। তারা যৌন সম্পর্কের সময় ব্যবহার করে না কোন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা।



মন্তব্য চালু নেই