যে কারনে নগ্ন করে ঘোরানো হলো পাঁচ নারীকে…

গ্রামীণ উত্তরপ্রদেশে আজও জাতপাতের লড়াই আর নিচু জাতের ওপর অত্যাচার কোনও বিরল ঘটনা নয়।

তারপরও শাহজানপুর জেলার জালালাবাদের কাছে রবিবার যে ঘটনাটি ঘটেছে সেই নির্যাতন ছিল শিউরে ওঠার মতো।

ওই গ্রামের অন্তত পাঁচজন দলিত মহিলা অভিযোগ করেছেন, তাদের চেয়ে তুলনায় উঁচু জাতের কাশ্যপ সমাজের অন্তত জন পনেরো নারীপুরুষ সেদিন সকালে তাদের ওপর চড়াও হয়। তারপর তাদের কাপড়চোপড় খুলে নিয়ে রাস্তা দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়।

মারা হয় বেতের বাড়িও, আর বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে এই নির্যাতন। তাদের অপরাধ, দলিত সমাজের একটি ছেলে কাশ্যপদের একটি নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।

ওই জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশা রাম বলছিলেন, ওই মেয়েটির মা এবং অন্য আত্মীয়রা এসে ছেলেটির মা-নানি-চাচিদের ওপর হামলা চালান। তাদের মারধর করা হয়, শাড়ি ও কাপড়চোপড় খুলে নেওয়া হয়। তারা বলতে থাকেন, আমাদের সম্মান যারা নষ্ট করেছে তাদের আবার ঘোমটা কীসের, তাদেরকেও আমরা ইজ্জত রাখতে দেব না।

তবে, তিনি বলেন, পুরো নগ্ন করে ঘোরানোর কথাটা ঠিক নয়। “আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি ওই মহিলাদের পরনে পেটিকোট ও ব্লাউজ কিন্তু ছিল”।

পুলিশের এই বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য পুরো একমত নন শাহজাহানপুরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কৃষ্ণা রাজ।

বিজেপি-র এই মহিলা এমপি বলেন, তারা ঘটনার তদন্তে যে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন তারা এসে রিপোর্ট দিয়েছেন দলিত মহিলাদের অবশ্যই নগ্ন করে ঘোরানো হয়েছিল।

স্থানীয় এমপি বলেন, প্রশাসনও প্রথমে ছিল নির্বিকার। “আর সবচেয়ে দু:খের ব্যাপার, কয়েকজন মহিলাই কিন্তু এই হামলার পুরোভাগে ছিলেন। আজকের সমাজ এত এগিয়ে যাওয়ার পরও যে এমন ঘটনা ঘটতে পারছে, সেটা সত্যিই হৃদয়বিদারক”।

উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রধান অরবিন্দ কুমার জৈন ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

জেলা পুলিশ অবশ্য দাবি করছে তারা অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন – দলিতদের বেইজ্জতি করার জন্য কাশ্যপ সমাজের মোট দশজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও তিনজন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও তিনজন ফেরার মহিলাকে ধরার জন্য বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই