যে কারণে শিশুর ছবি ফেসবুকে দেবেন না

আমাদের শিশুরা আমাদের অমূল্য সম্পদ। তাদের মুখের মিষ্টি হাসি দেখলে আমরা ভুলে যাই সব কষ্ট, যন্ত্রণা। শিশুদের যত অদ্ভুত কর্ম-কান্ড দেখতে, সেগুলো নিয়ে গল্প করতে ভালবাসেন সব মা বাবারাই। এখন স্মার্টফোনের যুগ। চট করে একটা ছবি তোলা কোন ব্যাপারই না। আর সাথে সাথেই তা আপলোড হয়ে যায় ফেসবুকে। সেখানে সবার ভালনবাসা পায়, প্রশংসা পায় শিশুটি। কিন্তু সবসময়ই কি ভালবাসা পায়? নাকি এই ছবি ডেকে আনতে পারে তার বিপদও? আসুন জেনে নিই, কেন শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্দ্বিধায় প্রকাশ করা ঠিক নয়! আর করলেও কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।

ছবির সাথে লোকেশন
আপনার শিশুর ছবি শেয়ার করার সময় কখনো ছবির সাথে লোকেশন দেবেন না। এতে আপনার প্রফাইলে থাকা কারও যদি কোন অসৎ উদ্দেশ্য সাধন করার মতলব থাকে তাহলে সে তথ্য পেয়ে যায়। আমাদের ফ্রেন্ড লিস্টে কিছু মানুষ থাকেই যাদের আমরা ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। আর চেনা মানুষ যে ক্ষতি করে না তাও নয়। তাই ঝুঁকি নেবেন না।

শিশুর শখের ছবি
আপনার শিশু হয়ত গান গাইতে ভালবাসে। অথবা সে হয়ত নাচ শেখে। আপনার সন্তানের সখ কি তা বাইরের লোকের না জানাই ভাল। আপনি হয়ত তার একটি নাচের ছবি দিলেন। তাকে কিডন্যাপ করতে চাইলে কেমন প্রলোভন দেখানো কাজে দেবে নিজের অজান্তেই সে তথ্য দিয়ে দিলেন। এছাড়াও আজকের যুগ প্রতিযোগিতার যুগ। অন্যদের জানিয়ে আপনি হয়ত নিজ সন্তানের প্রতিযোগিকে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করছেন!

তথ্য দেয় এমন ছবি
সন্তানের পাসপোর্ট করিয়েছেন? ভাল কথা। কিন্তু সে ছবি যেন কখনো দেবেন না ফেসবুকে। আপনার শিশুর সমস্ত তথ্য সবাইকে জানানোর মত বোকামি আর হয় না। আপনি ইন্টারনেটে তথ্য যতই প্রাইভেসি দিয়ে শেয়ার করুন না কেন কত সহজে তা ছড়িয়ে যেতে পারে তা আমরা ভাবতেও পারি না। তাই সাবধান হন।

স্কুল ড্রেসে ছবি
আপনার সন্তান প্রথম স্কুলে যাচ্ছে? নতুন স্কুল ড্রেস, জুতা, ব্যাগ কাঁধে চমৎকার এই মুহূর্তের ছবিটি না রাখলেই নয়। রাখুন। কিন্তু অনলাইনে শেয়ার করে তার নিষ্পাপ জীবন ঝুকিতে ফেলবেন না। বিপদ এখন যে কোন সময় যে কোন দিক থেকে আসতে পারে। সে কোন স্কুলে ভর্তি হল এই তথ্য সবার জানার প্রয়োজন নেই।

খালি গায়ে শিশুর ছবি
শিসু তো শিশু। সে না নারী না পুরুষ! শিশু হল নিষ্পাপ। তার খালি গায়ে থাকা কোন ব্যাপার নয়। কিন্তু এই ছবি আপনি যখন ইন্টারনেটে দিচ্ছেন তখন সবাই আপনার মত নিষ্পাপ চোখে তাকে দেখবে না। আজকের সময়ে চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ব্যবসা তুঙ্গে। কখন কে কীভাবে ব্যবহার করবে শিশুর ছবিটি বলা যায় না।

ইন্টারনেট খুব চমৎকার জায়গা। আবার অনেক ভয়ংকরও। খেয়াল করে দেখুন, এমনও এক সময় ছিল যখন আমাদের বাবা মায়েরা আমাদের ছবি এত সহজে শেয়ার করতে পারতেন না। তাতে কিন্তু সভ্যতা থেমে থাকে নি। ব্যক্তিগত বিষয় ব্যক্তিগত পর্যায়েই রাখুন। নিজের সুরক্ষার দায়িত্ব নিন নিজেই।



মন্তব্য চালু নেই