যে কারণে রাতে তারেকের বাসায় না থেকে হোটেলে ঘুমাচ্ছেন খালেদা

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দিনের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত করছেন তারেক রহমানের বাসায়। আর রাতের বেলা ঘুমাচ্ছেন হোটেলে। তারেক রহমানের বাসা ছোট হওয়ার কারণে সেখানে সবাই মিলে একসাথে থাকতে সমস্যা হচ্ছে। এই কারণে রাত্রি যাপন করছেন হোটেলে। এদিকে খালেদা জিয়া লন্ডনে অবস্থানকালীন সময়ে বিভিন্ন স্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। আরো বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন নেতাদের সঙ্গে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে সেল ফোনেও কথা বলছেন। তারেক রহমানের ঘনিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

ঈদের দিন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও তার পরিবার এবং কোকোর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো ছাড়াও যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

সূত্র জানায়, সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বৈঠক হতে পারে এনিয়ে নানা প্রচারণাও রয়েছে। তবে ওই সূত্র নিশ্চিত করেছেন সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে ম্যাডামের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। কারণ প্রধানমন্ত্রী বিদেশে একটি পত্রিকায় একটি নিবন্ধন লিখেছেন আবার সজীব ওয়াজেদ জয়ও একটি পোস্ট লিখেছেন দুই জনের লেখাটি পর পর প্রকাশিত হওয়ার কারণে বিএনপি এটাকে ভিন্নভাবে দেখছে। খালেদা জিয়াও মনে করছেন তার বিদেশ সফরের ব্যাপারে যাতে নেতিবাচক প্রচারনা তৈরি হয় এই কারণে জঙ্গীবাদকে সামনে রেখে সরকারের তরফ থেকে প্রচারনা চলছে। সেই সঙ্গে হাসান মাহমুদও বলেছেন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে গিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে গেছেন। অথচ তিনি তখন তারেক রহমানের বাসায় যাচ্ছিলেন। তারপরও এনিয়ে নেতিবাচক প্রচারনা চালানো হয়েছে। তাতে বিএনপি মনে করছেন, সরকারের আলোচনায় ও সমস্যা সমাধানে কোন আগ্রহ নেই। এই কারণে বিদেশ সফর নিয়ে নানাভাবে নেতিবাচক প্রচারনা চালানো হচ্ছে।

এদিকে খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ট সূত্র জানায়, আজকালের মধ্যেই তার চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা রয়েছে। ডাঃ জোবায়দা রহমান তাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাবেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন তিনি। ওই সূত্র সঠিক সিউিউলের সময়টি বলতে চাননি।

এদিকে সরকারের বিরুদ্ধে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের নিয়ে যেসব কথা বলেছেন এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কথার প্রতিবাদ করে যুক্তরাজ্য বিএনপি সহসাই সংবাদ সম্মেলন করবে। খালেদা জিয়া লন্ডনের নেতাদের বলেছেন, সরকার যে প্রচারণা জঙ্গীবাদ নিয়ে চালাচ্ছে এর প্রতিবাদ করার জন্য।

সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া এখন অনেক ভাল আছেন। দেশের একাকি, নি:সঙ্গ জীবন ছেড়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আছেন লন্ডনে। যা গত প্রায় আট বছরের মধ্যে আর হয়নি। তিনি দুই পুত্র বধূ ও তিন নাতনীর সঙ্গেও অনেকটা সময় অতিবাহিত করছেন। এই সময়ে তিনি বেশ হাসজ্জোল থাকছেন। দুই পুত্র বধূ মিলে রান্না করছেন শাশুড়ীর জন্য।

এদিকে খালেদা জিয়া তার পুত্র ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও একাকি কথা বলছেন। রাজনৈতিক আলোচনা করছেন। তবে ওই আলোচনায় তারেক ও কোকোর পরিবারের কোন সদস্য থাকছেন না। সেখানে বাইরেও কেউ থাকছে না। তারা চাইছেন না দুই জনের আলোচনার বিষয়গুলো এই পর্যায়ে কেউ জানুক। তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নেতাদের কয়েকজনের সঙ্গেও আলোচনা করবেন। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া নেতারা তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করারও চেষ্টা করছেন। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করার সুযোগ পেয়েছেন।

এদিকে একাধিক সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া এখন যে সব বৈঠক করছেন ও বিভিন্ন বৈঠক আগামী দিনে করবেন সেটা ফলাউ করে প্রচার হোক তা তিনি চাইছেন না। তিনি যেহেতু রাষ্ট্রের কোন দায়িত্বে নেই বিরোধী দলেও নেই এই কারণে তিনি চাইছেন নীরবেই সেটা করবে এবং ব্যক্তিগত পর্যায়েই করতে চান।

একটি সূত্র আভাস দিয়েছে, জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে আসা বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে কথা হবে। তবে তিনি সেল ফোনেই কথা বলতে চান।

বৃটিশ সরকারের ও এমপিদের সঙ্গে বৈঠকের কোন সময় ঠিক হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সূত্র জানায়, ওই ভাবে জানিয়ে কোন বৈঠক হবে না। ব্যক্তিগতভাবেই হবে। এই ব্যাপারে তিনি কোন প্রচারণা হোক তা তিনি চাইছেন না। তার সফরটাকে ব্যক্তিগত ভাবেই দেখাতে চান ।

এদিকে সূত্র আরো জানায়, সৈয়দ আশরাফের সঙ্গে এখনও বিএনপির বৈঠক হওয়ার কোন সিডিউল নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়ে সমঝোতা করার মনোভাব নিয়ে সৈয়দ আশরাফ আলোচনা করতে চাইলে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানও আলোচনা করতে পারেন। তবে সরকারের তরফ থেকে এই ধরনের কোন প্রস্তাব এখনও নেই। আদৌ হবে কিনা এটাও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।



মন্তব্য চালু নেই