যে কাজগুলো অপ্রত্যাশিতভাবেই আপনাকে সুখী করে তুলবে

সব মানুষই সুখী হতে চায়। কিন্তু সুখী হওয়ার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে হয় যা আমরা নেই না। আমরা মনে করি ভাগ্য, পরিস্থিতি, টাকা ইত্যাদি বিষয়গুলোই সুখী হওয়ার প্রধান নিয়ামক! কিন্তু আসলেই কি তাই? আরেকবার চিন্তা করে দেখুন। সুখ হচ্ছে ব্যক্তি বিশেষের মানসিকতার বিষয়। আপনি যদি আপনার সুখী হওয়ার সমর্থের উন্নতি ঘটাতে চান তাহলে সুখী ব্যক্তিরা সুখী থাকার জন্য কি করেন তা জেনে নিন।

১। অগোছালো

সুখী মানুষরা জানে কিভাবে মুহূর্তে বাঁচতে হয়। মজা করে জগাখিচুড়ী কাজ করলে তা মনকে প্রভাবিত করে। আনন্দ করার পরে অগোছালো জিনিষ গোছানোর সময় আপনি পাবেন। বাড়িতে যখন কোন অনুষ্ঠান হয় বা যখন অনেক রান্না করতে হয় বা আপনি যখন কোন হস্ত শিল্পের কাজ করেন তখন জিনিসপত্র এলোমেলো হতেই পারে, এজন্য অস্থির হবেন না। অবশেষে এই টুকিটাকি কাজগুলো করার মাধ্যমেই আপনি সত্যিকার ভাবে বেঁচে থাকার আনন্দ পাবেন।

২। শখ

যাদের কোন শখ থাকে তারা তাদের শখের কাজটি করে ভালো সময় পার করতে পারেন। সারাদিনের কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে আসাটা অনেক আনন্দের। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সব কাজ সারার পরে নিজের জন্য এক ঘন্টা সময় বাহির করে নিজের ভালো লাগার কোন কাজ করুন যাতে আপনি আনন্দ পান। এটা শুধুমাত্র শখের জন্যই না এই রকম কিছু করার ফলে আপনি আপনার নিজেকে গুরুত্ব দিবেন এবং আপনি সুখী অনুভব করবেন।

৩। নিজেই কিছু তৈরি করুন

আজকাল সবারই বাহিরে খাওয়া হয়, সেটার মজা অন্য রকম। তবে সব সময়তো আর বাহিরে খাওয়া হয় না এবং এটা স্বাস্থ্যসম্মতও না। এছাড়াও এতে অনেক টাকাও খরচ হয়ে যায়। ঘরের রান্নার মজাই আলাদা। মা, দাদী বা নানীর রান্না করা খাবারের মজার সাথে অন্য কিছুর তুলনাই হয়না। তাই আপনিও চেষ্টা করুন তাদের মত রান্না শিখতে। এতে আপনি অন্য রকম আনন্দ পাবেন এবং সুখ অনুভব করবেন।

৪। উদ্ভিদ

আপনার বাড়িতে যখন সবুজ গাছপালা থাকবে তখন আপনি অনেক রিলাক্স ও সুখী থাকবেন এটা বোঝার জন্য বিজ্ঞান জানার প্রয়োজন নেই। বাড়িতে অনেক গাছ পালা থাকলে বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে অক্সিজেন প্রদান করে শুধুমাত্র এটাই যথেষ্ট না। গাছ পালার যত্ন নেয়ার অর্থ আপনি জীবন্ত জিনিসের পরিচর্যা করছেন। প্রশান্ত ও সুখী পরিবারের জন্য উদ্ভিদ রাখা একটি ভালো ধারণা।

৫। ব্যবহার করুন

আমাদের অনেকের মধ্যে ভালো ও দামী জিনিস সংরক্ষণ করে রেখে দেয়ার অভ্যাস থাকে যেমন- সুন্দর একটি মোমবাতি বা কাশ্মীরি শাল ইত্যাদি। কিন্তু সুখী মানুষরা তাদের প্রতিটা দিনকেই উপভোগ করেন। ভালো থাকার জন্য ছোট ছোট পদক্ষেপই আপনাকে সব সময় পরিতৃপ্তি দিবে। তাই ভালো কোন দিনের জন্য কোন জিনিস রেখে না দিয়ে ব্যবহার করুন, মনে করুন আজকেই সেই বিশেষ দিন।

৬। ভারসাম্য

সুখী মানুষের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তাদের যা কিছু আছে তারা তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকেন, যা নেই তা নিয়ে হা হুতাশ করে তারা সময় নষ্ট করেনা। কিন্তু অসুখী মানুষরা ঠিক তার উল্টোটাই করেন। সুখী মানুষ তার জীবনে ভারসাম্য রক্ষা করে চলে। এর অর্থ সুখী মানুষ তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সকল বিষয় যেমন- পরিবার, বন্ধু, ক্যারিয়ার, ধর্ম ইত্যাদির জন্য সময় রাখেন।

৭। ছোটখাট বিষয়ে মাথা না ঘামানো

সুখী মানুষের অন্য রকম গুণ হচ্ছে, তারা ছোটখাট বিষয়ে মাথা ঘামায় না। ‘ভালো কাজের ফল ভালো হয়’ এই কথাটি সুখী মানুষরা জানে ও মানে। তবে কোন কোন সময় ভালো মানুষের সাথেও খারাপ কিছু ঘটতে পারে। এই বিষয়টি তারা উপলব্ধি করে এবং খারাপ সময় পাড় হয়ে সামনে এগিয়ে চলে। কিন্তু অসুখী মানুষ এই বিষয় গুলো নিয়ে চর্চা করতে থাকে। ফলে তারা বিষণ্ণতা, দুঃখবোধ, অপরাধবোধ, বিরক্তিভাব, লোভ ও ক্রোধকে নিজের জীবনে চিরস্থায়ী করে নেয়।

সুখী মানুষ হলেই নির্ভুল হতে হবে এমন কোন কথা নেই। তাই সুখী মানুষরা ভুল করে তা স্বীকার করতে ভয় পায়না। সুখী মানুষরা শুধু নিজেরটাই না অন্যের ব্যাপারেও ভাবেন এবং নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করেন। সুখী হতে চাইলে উপরোক্ত বিষয় গুলো অনুসরণের চেষ্টা করুন। সবশেষে তিব্বতের বৌদ্ধ ধর্মগুরু দালাই লামার একটি উক্তি স্মরণ করা যায়, তাহল- “সুখানুভূতি রেডিমেড কোন জিনিস না, এটা আপনার নিজের কর্ম থেকে আসে”।



মন্তব্য চালু নেই