যে এলাকার ড্রাইভার থেকে রিকশা চালক সকলেই কোটিপতি, কিন্তু কীভাবে?

এক বিচিত্র ভাণ্ডারের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বিহারের গয়া থেকে। এবং সেই কালো টাকার সঞ্চয়ের কল্যাণে এই এলাকার ড্রাইভার থেকে শুরু করে রিকশা চালক— সকলেই কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন।

নোটবাতিল ঘোষণার পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কালো টাকার ভাণ্ডারের হদিশ মিলছে। সেরকমই এক বিচিত্র ভাণ্ডারের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বিহারের গয়া থেকে। এবং সেই কালো টাকার সঞ্চয়ের কল্যাণে এই এলাকার ড্রাইভার থেকে শুরু করে রিকশা চালক— সকলেই কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন।

দিন কয়েক আগে গয়ার কটন মিল মালিক মোতিলাল পাটওয়ার কাছে সঞ্চিত কালো টাকার হদিশ পেয়েছে আয়কর দফতর। আয়কর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মোতিলালের কাছে ৪০ কোটি মূল্যের কালো টাকা সঞ্চিত ছিল, যা তিনি ৩৬টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সাদা টাকায় রূপান্তরিত করার চেষ্টা করা করেন। যদিও অ্যাকাউন্টগুলি আপডেট

করার কাজটি করতেন মোতিলাল নিজেই। আইটি ডিপার্টমেন্টের সন্দেহ, গয়ার ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ম্যানেজারও এই কালো টাকার কারবারে জড়িত রয়েছেন।

আয়কর দফতরের একটি দল গত ১৩ ডিসেম্বর পাটওয়ার বাড়িতে হানা দেয়। শুক্রবার পর্যন্ত দফায় দফায় চলে তল্লাশি। আইটি ডিপার্টমেন্টের ডিজি অশোককুমার সিংহ জানান, পাটওয়ার বিরুদ্ধে অন্যের নামে খোলা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিজের কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। তল্লাশির পরে সেই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে।

জানা গিয়েছে, পাটওয়ার মোট ৩৬টি অ্যাকাউন্ট ছিল। সেগুলিতে নোটবাতিল ঘোষণার পরে কোটি কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। নিজের ড্রাইভার, পাড়ার রিকশা চালক, এবং কর্মচারীদের নামেও অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন পাটওয়ার। যাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে অনেকেই জানতেনও না যে, তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে কয়েক কোটি টাকা জমা করা হয়েছে।

ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গয়া শাখায় মোতিলাল এই অ্যাকাউন্টগুলি খুলেছিলেন। আইটি ডিপার্টমেন্টের আধিকারিকরা সন্দেহ করছেন, ব্যাঙ্কের ম্যানেজারও এই ষড়যন্ত্রে জড়িত রয়েছেন।

কার নামে কত টাকা জমা করেছিলেন মোতিলাল? টাকার অঙ্ক শুনে বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য—

সঞ্জয়— ড্রাইভার— ১ কোটি ২০ লক্ষ
সুরেন্দ্র যাদব— ড্রাইভার— ৮০ লক্ষ
সুরেশ কুমার— রিকশা চালক— ১ কোটি ৮০ লক্ষ
বিবেক পাসওয়ান— কর্মচারী— ৪০ লক্ষ
লখিনেন্দ্র— কর্মচারী— ৩৪ লক্ষ
সুদামা সিংহ— ২ কোটি
ভিখারি প্রসাদ— কর্মচারী— ২ কোটি ৩০ লক্ষ
দেবেন্দ্র সিংহ— কর্মচারী— ৫৬ লক্ষ
রূপেশ কুমার— কর্মচারী— ৯০ লক্ষ
গৌরব কুমার— কর্মচারী— ৭৩ লক্ষ-এবেলা



মন্তব্য চালু নেই