যে অস্ত্র নিষিদ্ধ করতে চাচ্ছেন ওবামা

অরল্যান্ডো নাইট ক্লাবে হামলাকারী ওমর মতিন এআর-১৫ অ্যাসল্ট রাইফেল দিয়ে গুলি চালিয়েছিল। শনিবার রাত দু’টার দিকে চালানো ওই হামলায় নিহত হয় ৪৯ জন।

‘এই রাইফেলটি আসলে রণাঙ্গনের অস্ত্র। বৈধ শিকারী কিংবা অধিকতর সহিংস হামলা চালাতে সক্ষম, এমন কোনো লোকের কাছে এই অস্ত্র থাকার কথা নয়। কেননা এই ধরণের অস্ত্র ব্যবহার করার কথা যুদ্ধক্ষেত্রে, অরলান্ডোর রাস্তায় নয়’।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রটারি জোস আর্নেস্ট এই অস্ত্র নিষিদ্ধ করার পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে সোমবার এভাবেই কথাগুলো বলেন।

প্রেসিডেন্ট ওবামা কি এআর-১৫ অ্যাসল্ট রাইফেল বৈধ করার পক্ষে? এই ধরেনের এক প্রশ্নের জবাবে আর্নেস্ট বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট সব ধরণে অ্যাসল্ট রাইফেল নিষিদ্ধ করার পক্ষে। প্রেসিডেন্ট বিশ্বাস করেন, এই অস্ত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা আবারও বহাল করা উচিত।’

আধা স্বয়ংক্রিয় এম-১৬ রাইফেলের মতোই এআর-১৫ রাইফেল কিন্তু আধা স্বয়ংক্রিয় নয়, পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়। ট্রিগার টানার সঙ্গে সঙ্গে এটি আবারো গুলি চালানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। এছাড়া খুবই হাল্কা ওজনের রাইফেলটির বিভিন্ন অংশ আলাদা করে রাখার পাশাপাশি সংযোজনও করা যায় অতি সহজেই।

রাইফেলটি প্রথম তৈরি করে আর্মালাইট রাইফেল কোম্পানি। পরে অবশ্য অনেক রাইফেল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এ ধরণের বহু অস্ত্র তৈরি করে। জাতীয় স্যুটিং স্পোর্টস ফাউন্ডেশন তাদের সাক্ষ্যতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাসল্ট ধরণের ৫ থেকে ৮.২ মিলিয়ন অস্ত্র রয়েছে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লনটনের আমলে ১৯৯৪ সালে নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের অ্যাসল্ট রাইফেল নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু দশ বছর পর এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। সম্প্রতি অরলান্ডোয় গুলি চালিয়ে ৪৯ জনকে হত্যার পর নিহতদের পরিবার রাইফেল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দয়ের করে।

এই মামলার আইনজীবীদের একজন জোস কসকফ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, শনিবার রাতে হামলাকারী যা করেছে, ঠিক সেভাবে রণাঙ্গনে শত্রু সেনাদের হত্যা করার কথা মাথায় রেখে মার্কন সেনা বাহিনীর জন্য এআর-১৫ অ্যাসল্ট রাইফেলটি তৈরি করা হয়। সহজে ও অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ব্যাবহার করে বহু লোককে হত্যা করা সম্ভব এই রাইফেলটি দিয়ে। এ করণেই এআর-১৫ রাইফেল গত ৫০ বছর ধরে মার্কিন সেনা বাহিনীর কাছে অত্যন্ত পছন্দের অস্ত্র হয়ে আছে।

প্রেসিডেন্ট ওবামা বেশ কয়েকবার এই অস্ত্রের উপর পূন:নিষেধাজ্ঞা জারীর কথা বলেছেন। কিন্তু অস্ত্র নির্মাণকারীদের নানা রকম দেন-দরবারের কারণে ওবামা প্রশাসন পিছু হটে যায়।



মন্তব্য চালু নেই