যেসব কারণে চাকরি হারাতে পারেন আপনি

আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু বদভ্যাস আছে। আমরা কেউ খুবই অলস, সময় মেনে অফিস যাওয়াই একটা বিশাল কঠিন কাজ আমাদের জন্য। আবার অনেকে শেষ সময়ে গিয়ে কাজ করেন, হাতে যত সময়ই থাকুক না কেন কোনমতেই আগে আগে কাজ শেষ করেন না তারা। আপনার বদভ্যাসগুলো একটা অফিসের পক্ষে মানিয়ে চলা কঠিন। কারণ সেখানে আরও অনেকেই কাজ করেন এবং প্রত্যেকেরই এমন কিছু না কিছু সমস্যা আছে।

‘একটি বিশেষ বদভ্যাসের কোম্পানি আপনাকে বের করে দেবে না হয়ত, কিন্তু বদভ্যাসের প্রভাব যদি ক্রমাগত আপনার কাজের উপর পড়তে থাকে তখন এর ফলাফল খারাপ হতে পারে’ বলেন অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের লিবারেল আর্টস ক্যারিয়ার সার্ভিসেস এর ডিরেক্টর ডা. ক্যাথেরিন ব্রুক্স। তিনি ‘You Majored in What? Mapping Your Path from Chaos to Career’ নামক বইটির রচয়িতা। তিনি আরও বলেন- ‘মানুষ হয়ত একটি বদভ্যাস লক্ষ্য করে এবং সেটি তাকে উদ্বুদ্ধ করে অন্যান্য ত্রুটি বা দোষগুলোর দিকে নজর দিতে’। তিনি মনে করেন, এই কারণেই আপনার কাজের দক্ষতা ঢাকা পড়ে যেতে পারে।

আসুন জেনে নিই, কি কি বদভ্যাসের কারণে হারাতে হতে পারেন চাকরি।

দীর্ঘসূত্রিতা
একটা কাজ দ্রুতই করে ফেলা যায়। কিন্তু আপনি করেন না। ‘এই অভ্যাসটি অবশ্যই আপনার কাজে ক্ষতি করতে পারে’ ব্রুক বলেন। ‘আপনি যদি তাদের মাঝে হন যারা মনে করেন শেষ সময়েই সবচেয়ে ভাল কাজ করা যায় আর এ কারণে প্রজেক্ট বা এসাইনমেন্টের কাজ একেবারে শেষ সময় পর্যন্ত ফেলে রাখেন, তাহলে আপনি খেয়ালই করছেন না আপনার এই কাজের প্রভাব আপনার সহকর্মীদের উপর কিভাবে পড়ছে।’ খেয়াল করে দেখুন, শেষ সপময়ের তাড়াহুড়া আপনি করেন সচেতনভাবে। কিন্তু অন্যরা আপনার সাথে তাল মেলাতে গিয়ে পড়ে যায় বিপাকে। এভাবে আপনার উপর বিরক্ত একটি অংশ এপনি নিজেই তৈরি করছেন কর্মক্ষেত্রে।

মিথ্যা বলা
নিজের সমস্যাকে বাড়িয়ে বলা, কোন ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করার চেষ্টা করা, সহকর্মীদের উপর উদ্দেশ্যমূলক দোষারোপ করা, অফিস একাউন্টসের অপব্যবহার করা, অফিসের নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করা এর সবকিছুই আপনার জন্য মারাত্মক অপরাধ। চাকরি চলে যেতে পারে যে কোন সময়।

বডি ল্যাংগুয়েজ মিস্টেক
আপনি কি প্রায়ই চোখ ঘুরিয়ে দেখতে থাকেন সমস্ত অফিস? হ্যান্ড শেক করতে গিয়ে বিব্রতবোধ করেন? অথবা চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারেন না? এই সব কিছুর মূল্য আপনাকে দিতে হতে পারে চাকরি দিয়ে। মানুষ সরাসরি আপনার কথা শুনে বুঝতে চায় আপনি কি বলতে চাইছেন? তবে ভার্বাল যোগাযোগের চাইতেও শক্তিশালী হয় নন-ভার্বাল যোগাযোগ। আর সেই যোগাযোগ যদি এরকম হয় তাহলে তার মনে আপনাকে কেন্দ্র করে নানান সন্দেহ তৈরি হতে পারে এবং একইসাথে আপনার আচরণে তিনি অপমানিতবোধ করতে পারেন।

নেতিবাচকতা
আপনি তো আপনার চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট ননই আপনি অন্যদের অসন্তুষ্টিকেও উস্কে দিচ্ছেন। অফিস কি কখনোই এটি ভালভাবে নেবে? কিন্তু অনেকের স্বভাবের অংশই থাকে এটি। তারা সুযোগ পেলেই মেতে ওঠেন গসিপে। অফিসের নানান সমস্যা থাকে তাদের আলোচনার বিষয়। এসব আড্ডায় মুখ ফসকে বলে ফেলা ছোট্ট একটা ভুল কথার কারণে চলে যেতে পারে আপনার চাকরি।

সময় সম্পর্কে অসচেতনতা
আপনি যদি প্রায়ই অফিসে দেরিতে প্রবেশ করেন, ঠিকমত অফিসে না আসেন, ব্রেকের সময় দেরিতে ফেরেন এই সবকিছুই প্রকাশ করে কাজের প্রতি আপনি সিরিয়াস নন এবং অফিসের প্রতি অনুগত নন। আপনার এই বদভ্যাস যদি দীর্ঘদিন যাবত চলতে থাকে তাহলে চাকরি চলে যেতে পারে।

দূর্বল যোগাযোগ
চাকরিক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন যোগাযোগ রক্ষা করা খুবই জরুরী। আপনি যদি আপনার উর্ধ্বতনদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ না করে অন্য কারও মাধ্যমে যোগাযোগ করেন বা যখন তাদের সাথে যোগাযোগে যাচ্ছেন তখন দূর্বল কোন ব্যবস্থা বেছে নেন তাহলে সেটা আপনার ক্যারিয়ারে খারাপ প্রভাব ফেলবে। মেইলে যোগাযোগ করলে খেয়াল করুন মেইলটি ঠিকমত লিখেছেন কিনা, সাক্ষাতে সঠিক বডি ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করুন। জীবনের সকল ক্ষেত্র থেকে ৩য় পক্ষের প্রভাব মুছে ফেলুন।



মন্তব্য চালু নেই