‘যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি স্বস্তিদায়ক নয়’

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতি আগেও স্বস্তিদায়ক ছিল না এখনও নাই।

তিনি বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সরকার যে ভূমিকা রেখেছিল তা থেকে তারা আজও সরে আসেনি।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগদান শেষে দেশে ফিরে রোববার সচিবালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি ঢাকা ও রংপুরে পর পর দু’জন বিদেশী নাগরিক হত্যা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের সর্তক বার্তার বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত সাত বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র একই পলিসি কনটিনিউ করছে। ইউএস পলিসি ওয়াজ নট কমফোর্টেবল ফর আস। ইটস নট ম্যাটার ইন দ্য কান্ট্রি।

তিনি বলেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের পলিসি, এর খুব বেশি পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। তবে এতে আমরা খুব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি না। আমাদের অর্থনীতিও এতে তেমন ক্ষতিগ্রস্থ হবে না। এটা নিয়ে হৈচৈ করারও কিছু দেখি না। বাংলাদেশ ও রাশিয়া দুটি দেশের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এ পলিসি নিয়েছে।

বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কেন এই নীতি নিয়েছে ? জানতে চাইলে মুহিত বলেন, এটা তাদের নীতি, এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।

দুই বিদেশী খুনের ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, নিউইয়র্কে প্রতিদিন কতজন বাঙ্গালি মারা যায় সেটা হিসাব করেন। মানুষ হত্যা, বিশেষ করে সিটিতে হত্যার রেকর্ড-হোল্ডার হল ইউনাইটেড স্টেটস। এভরি হোয়ার ইট হ্যাপেন্ড, ল’ অ্যান্ড অর্ডারে প্রবলেম থাকে। বাংলাদেশের ল অ্যান্ড অর্ডার ইজ ওয়ানডারফুল।

অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ পূর্বাভাস ব্যক্ত করেছে। তবে আমি মনে করি, প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশই অর্জিত হবে। এখন দেশে কোন হরতাল নেই। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে জনগণ এখন এ ধরনের কর্মসূচী মেনে নেবে না। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। দুষ্ট পলিটিক্স যারা করেন তাদের জন্য এটা বড় একটি সতর্ক বার্তা।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-এর বৈঠকে বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও কানেক্টিভিটি খাতে আইডিএ ঋণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা বাবদ যে ৫০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে সেটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।

সভরেন বন্ড আগামী ছয় মাসের মধ্যে ছাড়া হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।

ব্রিফিংয়ে পে-স্কেল, টাইম স্কেল-সিলেকশন গ্রেড ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়েও তিনি কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, অলরেডি শিক্ষামন্ত্রী এ নিয়ে কথাবর্তা বলেছেন। শিক্ষকরা একটা বিশেষ অবস্থানে পৌঁছেছেন, যা অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক।

তিনি বলেন, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করে সরকার বছরের একই দিন একই সঙ্গে সব সরকারি চাকুরের চক্রবৃদ্ধিহারে বেতন বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অনেকেই বুঝতে পারছেন না। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিল করে যে ব্যবস্থা করা হয়েছে একটা নির্দিষ্ট স্তরে পৌঁছার পরে পরবর্তী স্কেলে ঢুকে যাবে। এটাই বাস্তবায়ন হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা এটা নিয়ে কথা বলছে তারা বুঝতে পারছেন না। অষ্টম বেতন কাঠামোর প্রজ্ঞাপন হলে তখন বুঝতে পারবে।

বৈঠকে অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ পে-স্কেল প্রসঙ্গে বলেন, নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নে অর্থমন্ত্রণালয়ের পরিপত্রটি চলতি মাসেই কিংবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জারি করা হবে। এরপর তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।



মন্তব্য চালু নেই