ডিজিটাল ২০টি বাস

যাত্রীরা! গোলক ধাঁধায়

বিআরটিসির বহরে যুক্ত হওয়া ডিজিটাল বিশটি বাসের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে গোলক ধাঁধায় আটকে গেছেন রাজধানীর যাত্রীরা। তরুণদের কাছে ব্যাপারটি বেশ উপভোগ্য হলেও প্রবীণদের বাড়িয়েছে বিরক্তি। তাছাড়া প্রযুক্তির প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে থাকা মানুষগুলোও নিতে পারবেন না উপযুক্ত প্রযুক্তিসেবা। অতি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কারিগরি সহায়তায় রাজধানীতে চলাচলের জন্য বিআরটিসির বহরে ২০টি ডিজিটাল বাস যুক্ত হয়েছে। যা নিয়ে যাত্রীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। বিশেষ করে প্রযুক্তি থেকে দূরের মানুষগুলো রীতিমতো আটকে গেছেন ডিজিটাল গোলক ধাঁধায়।
ডিজিটাল বাসের সুবিধা সমূহের মধ্যে রয়েছে ফ্রি ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট। যা যেকোনো যাত্রী বাসে বসে সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে এ জন্য অবশ্যই যাত্রীর হাতে স্মার্ট ফোন ও কিউ আর স্ক্যানার অ্যাপ্লিকেশনটি থাকতে হবে। এ শর্তপূরণে যারা ব্যর্থ তাদের কাছে ডিজিটাল আর লোকাল বাসের পার্থক্যটা শূন্য। শুক্রবার সকালে সরেজমিনে ফার্মগেটে গিয়ে দেখা যায়, নবীণ-প্রবীণ যাত্রীদের মাঝে চলছে বেশ তর্ক-বির্তকের ঝড়। পারভেজ নামের এক ছাত্র যার দিনের অর্ধেকটা কাটে ফেসবুকে। ডিজিটাল বাস প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বর্তমান দুনিয়া ইন্টারনেট ভিত্তিক দুনিয়া। এ বাসে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ওয়াই-ফাইসহ লাইভ ট্রাকিং রয়েছে। যদিও আমি এখনো লাইভ ট্রাকিং করে দেখিনি। তবে ওয়াই-ফাই সুবিধাটি এখন পর্যন্ত বেশ ভালো সার্ভিস দিচ্ছে।’ কথা হয় মাছ ব্যবসায়ী আফাজ উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমি সারাদিন মাছ নিয়ে থাকি। স্মার্ট ফোনটোন আমার নেই। তাই আমি কিছু বুঝতেছি না যে কী কী আছে এ বাসে।’ বাসের আরও বেশ কয়েক জন যাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তরুণরা একটু বেশি প্রযুক্তিবান্ধব হওয়ায় ডিজিটাল বাসের সুবিধা তারা ভোগ করতে পারছে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত প্রবীণদের হাতে স্মার্ট ফোন না থাকায় ডিজিটাল বাসের তেমন কোনো সুবিধা তারা ভোগ করতে পারছেন না।
এদিকে জিজিটাল বাসের লাইভ ট্র্যাকিং এর কাজটি সম্পন্ন করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)। এ প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ার জানান, এ বাসে উঠলে যে কেউ ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া লাইভ ট্র্যাকিং তো আছেই। ওয়াই-ফাই ইন্টারনেটের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা মোটেও ঝুকিপূর্ণ না। এ ইন্টারনেট সেবা শুধু বাসের মধ্যেই ব্যবহার করা যাবে।’ ব্যাপক সুবিধা সম্বলিত এ বাসগুলি প্রথম অবস্থায় পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হচ্ছে উত্তরা টু মতিঝিল রুটে। সফলতার বিবেচনায় পরে এ উদ্যেগকে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া হবে বলে জানান যোগাযোগ মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, হঠাৎ গত বছরের কোনো একদিন বিকেলের আড্ডার সময় যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে বাসে রাউটার লাগিয়ে ডিজিটাল বাস তৈরির পরামর্শ দেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পলক। পরে তা আমলে নিয়ে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয় বলে জানান ওবায়দুল কাদের।


মন্তব্য চালু নেই