যশোরের খবর (১/৮/১৪)

## বারোবাজারে ট্রেনের সাথে বাসের সংঘর্ষে নিহত ১১ আহত ৭০, স্টেশন মাস্টার ও দুই লাইনম্যান বরখাস্ত
আবিদুর রেজা খান: শুক্রবার ভোরে ঝিনাইদহের বারোবাজারে ট্রেনের সঙ্গে বরযাত্রীর বাস সংঘর্ষে ১১জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। আহতদের অধিকাংশই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সংর্ঘষে খুলনা যশোরের সাথে সারা দেশে ট্রেন যোগাযোগ ১০ ঘন্টা বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সংঘর্ষে নিহত ১১জনের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ২ জন নারী ও ১ জন শিশু। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৩ জনসহ ১১ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতরা হচ্ছেন শৈলকূপা উপজেলার ফুলহরি কাজীপাড়া গ্রামের অনিল বিশ্বাসের ছেলে সুধীর কুমার (৪০), একই গ্রামের জগবন্ধুর ছেলে বিপ্লব (২৫), মহাপ্রসাদের ছেলে শোভন কুমার (২), রঞ্জন কুমারের স্ত্রী বন্যা (৩৫), ছেলে কৌশিক (৮), ভাগ্নি ভবেশ কুমারের মেয়ে কৃষ্ণা (৩০), আবাস সাহার ছেলে সুজয় সাহা (৩০), সুধীর কুমারের ছেলে অলোক কুমার (৪২), ফরিদপুরের কানাইপুর এলাকার শ্যামল দাসের ছেলে উজ্জল দাস (২৮), কালীগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের বিমল কুমার,। এছাড়া নিহত সঞ্জিত কুমার (৩২) এর ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে বারোবাজার রেল স্টেশন মাস্টার তুর্কি আহমেদ ও দুই লাইনম্যান মোমিনুর রহমান ও হুমায়ন কবিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলা প্রসাশক শফিকুল ইসলাম জানান, সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেন ভোর পৌনে ৪টার দিকে বারোবাজার রেলস্টেশন পার হচ্ছিল। এ সময় বরযাত্রীবাহী একটি বাস রেললাইন পার হতে গেলে ট্রেনটির সঙ্গে বাসটির সংঘর্ঘ হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ঝিনাইদহ দমকল বাহিনী, যশোর দমকল বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার কাজ শুরু করে। তারা ঘটনাস্থল থেকে শিশু ও নারীসহ ৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। আহত প্রায় অর্ধশত। আহত বরযাত্রীকে ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ ও যশোর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে কালীগঞ্জে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১ জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় শাকো মোথনপুর গ্রাম থেকে বিয়ে করে বরযাত্রীরা জেলার শৈলকুপা উপজেলার ফুলহরি গ্রামে ফিরছিল। তিনি আরও জানান, খুলনা থেকে রিলিফ ট্রেন এসে উদ্ধার কাজ শুরু করবে। জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ও রেলওয়ের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আহত ৪০ জনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১১টায় উদ্ধার কাজ শেষে রেলওয়ের খুলনা বিভাগীয় সুপারিনটেন্ডেন্ট হাবিবুর রহমান প্রাথমিক তদন্তে দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন। রেলওয়ের রাজশাহী জোনের জিএম আব্দুল আওয়াল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুই গেটম্যান মোমিনুর রহমান ও হুমায়ন কবির রাতে ডিউটিতে ছিলেন না। এ সময়ই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। দায়িত্বে তাদের অবহেলা রয়েছে। তাই তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।

## যশোরে এক সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ আটক ॥ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার
যশোর অফিস: যশোর কোতয়ালি থানার পুলিশ শহরের কারবালা ধোপাপাড়া এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ একাধিক মামলার আসামী ভূট্টোকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক করেছে। ওই এলাকা থেকে ২টি ওয়ান স্যুটারগান ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর কোতয়ালি থানার এসআই শোয়েব উদ্দিন আহমেদ, এসআই মাসুদুর রহমান শহরের কারবালা ধোপা পাড়া এলাকার মফিজুর ইসলামের পুত্র ভূট্টোসহ তার দলবলকে ঘিরে ফেলে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভূট্টো ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষন ও বোমা নিক্ষেপ করে। পুুলিশ আত্মরক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষন করে। এ সময় ভূট্টোসহ তার সহযোগীরা পালানোর এক পর্যায় ভূট্টোর ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হলে সে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে। সহযোগীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ভূট্টোকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পুলিশ ২টি স্যুটারগান,২রাউন্ড গুলিসহ আটক করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভূট্টোকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ভূট্টোর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি খুন,দস্যুতা,ছিনতাইসহ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

## যশোরে দু’যুবক ছুরিকাহত
যশোর অফিস: যশোরে দু’যুবককে উপুর্যপরী ছুরিকাঘাত করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তাদেরকে গুরুতর আহত অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতরা হচ্ছে বেজপাড়া মেইন রোডের শাহাবুদ্দিনে ছেলে জুম্মান ও কুমারের ছেলে প্রিতম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জুম্মান প্রিতম ও একই এলাকার টিপু রিকশা যোগে নাজির শংকরপুর এলাকা থেকে শহরের দিকে আসছিল। পথিমধ্যে বেজপাড়া কবর স্থানের নিকট পৌছালে হঠাৎ করে অজ্ঞাত ছিনতাইকারী সন্ত্রাসী রিকশার গতিরোধ করে জুম্মান ও প্রিতমকে উপুর্যৃপরী ছুরিকাঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

## যশোরে ফেনসিডিলসহ দু’জন আটক
যশোর অফিস: যশোর কোতয়ালি থানা পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ১০০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই মাদক ব্যবসায়কে আটক করেছে। আটককৃতরা হচ্ছে,যশোর সদরের তপসীডাঙ্গা মুকুলের বাড়ির পাশে মৃত নাজিম উদ্দিনের পুত্র নুর মোহাম্মদ ও একই উপজেলার নারাঙ্গালী গ্রামের গোলাম হোসেনের স্ত্রী মরিয়ম ওরফে চাম্পা।
বৃহস্পতিবার সকালে যশোর কোতয়ালি থানার এসআই স্বপন কুমার দাস যশোর বেনাপোল সড়কের পুলেরহাট বাজারস্থ রাজগঞ্জ সড়কে অভিযান চালায়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ী মোহাম্মদকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে। অপর দিকে,কোতয়ালি থানার এসআই আজগার আলী ও এএসআই রবিউল আলম পলাশ সদরের নারাঙ্গালী গ্রামের গোলাম হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় মরিয়ম ওরফে চাম্পাকে আটক করে। তার কাছ থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। স্থানীয় একটি সুত্র জানায় আজগার আলী ও এএসআই রবিউল আলম প্রতিমাসে মাদক ব্যবসায়ী মরিয়য় এর বাড়ীতে দেখা যায়। দারোগা প্রতিমাসে চুক্তির টাকা নিতে আসে। ঈদ উপলক্ষ্যে বেশি টাকা দেওয়ার কথাছিল সেই টাকা দেয়নি বলে মরিয়মকে আটক করেছে।

## যশোরে চাঁদার দাবিতে মারপিট বোমা হামলার ঘটনায় মামলা
যশোর অফিস: যশোর শহরের কারবালা ধোপা পাড়া এলাকার প্রকাশ্যে কাপড় ব্যবসায়ী মিরাদুল ইসলামের বাড়িতে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী ভূট্টো হামলা চালিয়েছে। সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ ভূট্টোসহ তার দলবল ২ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে পিস্তল ঠেকিয়ে মারপিট স্ত্রীর শ্লিলতাহানী ও বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা বিবারনে জানা গেছে, যশোর শহরের কারবালা ধোপাপাড়ার মৃত আলাউদ্দিন বিশ্বাসের পুত্র মিরাদুল ইসলাম কোতয়ালি থানায় দায়েরকৃত এজাহারে বলেছেন, বুধবার দুপুর আনুমানিক আড়াইটার সময় কারবালা ধোপা পাড়ার মফিজুর ইসলামের পুত্র ভূট্টো, খোলাডাঙ্গা গাবতলার হাফিজুর রহমানের স্ত্রী হুমাইয়া,মফিজুর ইসলামের পুত্র হাফিজুর,ভূট্টোর স্ত্রী নজুর কন্যা শিলা বেগম,কুরবানের পুত্র জিন্না,নজুর পুত্র মুস্তাক ওরফে মাস্তান,মিরাজের পুত্র হাফিজ,নানা ওরফে অনুপমসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২/৩জন সশস্ত্র অবস্থায় বাড়িতে প্রবেশ করে। ভূট্টো মিরাদুল ইসলামের মাথায় পিস্তল ঠেঁকিয়ে বলে কাপড় ব্যবসা করিস। তাদেরকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এ সময় মিরাদুল ইসলামের স্ত্রী মেরিনা আক্তার স্বামীকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে আসলে সন্ত্রাসীরা মেরিনাকে স্বামীর সাথে মারপিট করত শ্লিলতাহানী ঘটায়। এ সময় এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী ভূট্টোর সহযোগীরা পরপর ৩ টি শক্তিশালী বোমা নিক্ষেপ করে ও প্রান নাশের হুমকী দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় মেরিনাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই