“যদি সত্যিই আমাকে ভালোবাসো তাহলে আমার সাথে সেক্স করতে হবে” ওকে হারানোর ভয়ে আমি…

আমি আপনার পেইজ এর নিয়মিত পাঠক। গল্প গুলো পড়ে অনেক ভালো লাগে…. কিছু কিছু লেখা মনে হয় যেন আমার জীবনের গল্পকে ছুঁয়ে যায়… তাই অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম আমার কষ্টগুলো একবার শেয়ার করি। ২০১৩ সালে ভার্সিটি এক্সাম এর আগে এফবিতে একটা ছেলের সাথে পরিচয় হয়। অনেক দিন চ্যাট হয় হঠাৎ একদিন ও আমাকে প্রপোজ করে… প্রথমে রাজি হয়নি পরে রাজি হই … আমাকে দেখে ওর অনেক পছন্দ হয়… ধীরে ধীরে কথা বলা, ঘুরতে যাওয়া এক পর্যায়ে ওকে অনেক ভালোবেসে ফেলি। একদিন ও আমাকে বলে চলো তোমাকে কোচিং এ দিয়ে আসি। তারপর ও আমাকে কোচিং এ দিয়ে আসে। কোচিং শেষে ওকে কল দিলাম বলে আগ্রাবাদ আছি তুমি আগ্রাবাদ হয়ে আস, তোমার সাথে একজন মানুষ দেখা করবে…

সি এন জি থামার পর একটা ছেলে আমাকে সালাম দেয় মাথা উঁচিয়ে দেখি আমার টিচার। আমাকে দেখে মনে হয় যেন আকাশ থেকে পরলো। কারণ আমার টিচার হচ্ছেন আমার বি এফ এর বেস্ট ফ্রেন্ড। বাসার আসার পর আমার বি এফ কল দিয়ে বলে তোমার টিচার বলছে তোমার সাথে যেন রিলেশান কখনও ব্রেক না করি, তুমি খুব ভালো মেয়ে, তোমাকে পেলে নাকি আমি অনেক সুখী হবো…

এভাবে রিলেশানের ৩ মাস পার হয়ে গেলো। এই ৩ মাসে সারা দিন রাত শুধু ওর সাথে কথা বলতাম। একদিন ও বলে যদি সত্যিই আমাকে ভালোবাসো তাহলে আমার সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করতে হবে। এই কথা শুনে গাছ থেকে পড়লাম। ওকে অনেক বুঝালাম কিন্তু সে বুঝলো না। করতেই হবে না হলে ব্রেক আপ। পরে রাজি হই কিন্তু মন থেকে না। যে দিন ফিজিক্যাল রিলেশান হলো তার পরের দিন ও কল দিয়ে বলে আমি যেন ওকে আর কল না দিই।

জানতে চাইলাম কেন ও বলে ওর ইচ্ছে নেই তাই। অনেক কান্নাকাটি করি ।তারপরেও সে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত সুইসাইড এট্যাম্প নিই যার ফলে পরিবারের সবাই জেনে যায়। ব্লেড দিয়ে হাত কাটা, মার হাই বিপি ট্যাবলেট খেয়ে ফেলা, ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর করা দেয়ালের সাথে নিজেকে আঘাত করা কোন কিছুই বাদ রাখিনি। এরপর ওকে কল দিয়ে অনেক কষ্ট করে রাজি করাই যেন একবার দেখা করে। যখন ওর সাথে দেখা করি ওকে আমার হাত দেখিয়ে বলি দেখো তোমাকে কত ভালোবাসি। ও দেখে এতো ভয় পায় ওর চোখে পানি চলে আসে আমাকে বলে বাসায় যাও…

বাসার আসার পর ও আমাকে কল দিয়ে বলে আমাকে ক্ষমা করে দাও আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না। এখন তো পরিবার সব জেনে গেছে যার ফলে আমাকে আর ঘর থেকে বের হতে দেয়না। আমার মা ওকে কল দিয়ে বাসায় আসতে বলে ও বুঝে যায় কেন আসতে বলছে। আমাকে কল দিয়ে বলে আমি তোমার বাসায় যাবো না। পরে আমার ভাই ওকে জোর করে বাসায় আনে। আনার পর অনেক চাপ দেয় যেন ওর মাকে আমাদের বাসায় এনে বিয়ের কথা পাকা করা হয়। কিন্তু ও রাজি হয়নি, ওর একটাই কথা ওর বিবিএ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওকে মেরে ফেললেও বিয়ে করবে না। ওর কথা শুনে আমার পরিবার পাল্টে যায়। আমাকে গৃহবন্দী করে ফেলে, আমার এফবি আইডি , আমার ফোন আমার ভাই নিয়ে নেয়।সব ফ্রেন্ডের সাথে আমার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

দ্বিতীয়বার সুইসাইড এট্যাম্প নিই ।আমার ভাই রুমের দরজা ভেঙগে দেখে ফ্যানের সাথে আমার দেহ ঝুলতেছে। রাতের বেলায় ভাই আমাকে অনেক মারে, আমাকে ফ্লোরে ফেলে আমার গলায় পা রেখে চেপে ধরে। আমার কোমরে লাথি মারা, আমার মাথায় আঘাত করা, চুলের মুঠি ধরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া কোন কিছুই বাদ দেয়নি । চুরি করে মার ফোন থেকে ওকে কল দিতাম ও রিসিভ করতো না। তখন খাওয়া, ঘুম একেবারে বন্ধ। আমার বিএফ আমার সাথে একবারও যোগাযোগ করার চেষ্টা করেনি।

ও ওর মার কাছে চলে যায়। যেদিন জানতে পারি ও চলে গেছে সেদিন ঘরে অনেক ভাংচুর করি, আমার মা আর ভাই আমার হাত পা রশি দিয়ে বেঁধে রাখে ও অফিস যাওয়ার আগে আমাকে অনেক মারধর করে, এতো মার খেয়েও বার বার শুধু আমার বিএফ এর নাম মুখে আসে। বিএফ এর নাম বলাতে আমার ভাই আমার গাল টিপে রক্ত বের করে দেয়। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আমার মা আর ভাই বাবাকে সব জানায়।

বাবা আমাকে ত্যাজ্য করে, দীর্ঘ ৬ মাস আমার বাবা আমার সাথে কোন কথা বলেনি। আমি কথা বলতে চাইলে বলতো আমার মেয়ে মারা গেছে। যখন ধীরে ধীরে আমি ওকে কল দেওয়া বন্ধ করে দিই ও আমার মার নাম্বারে কল, ম্যাসেজ দিতে থাকে। বার বার বলে আমি যেন ওর কাছে ফিরে যাই। ৯ দিন আমি ওকে কোন কল দিইনি এই ৯ দিনে ও আমার সাথে একটু কথা বলার জন্য অনেক পাগলামি করে। কিন্তু আমার পরিবার কথা বলতে দেয়নি। ও কল, ম্যাসেজ দিয়ে অনেক থ্রেট দিতো যার ফলে আমার মা ওর নামে একটা জিডিও করে।

১০ম দিনে অনেক কষ্ট করে একটা মেয়ের নাম্বার থেকে ওকে কল দিই। আমার ভয়েস শুনে ও চুপ থাকে হঠাৎ রাস্তায় তাকিয়ে দেখি ও কাঁদতেছে। সেদিন নতুন করে রিলেশান টা শুরু হলো, ও আমাকে একটা ফোন দেয়। সারা দিন রাত ম্যাসেজিং। এভাবে ৯ মাস পার হয়। ৯ মাস পর আবার ওর মাঝে পরিবর্তন দেখা দেয়। কথায় কথায় গালি দেয়া, নাম্বার ব্লক করে দেওয়া। দেখা করতে বললে করতো না। তবুও মেনে নিই। ও যখন যা কিছু আমার কাছে চাইছে তখন তা দিছি। বিনিময়ে কখন ও কিছু চাইনি।

আমাদের সম্পর্কের এখন ২ বছর ৭ মাস চলতেছে। সম্পর্ক টা আর আগের মতো নেই। আমি কল দিলে রিসিভ করে কিন্তু কখনো নিজ থেকে ভুলেও একটা কল/ম্যাসেজ দেয়না। অথচ আমি ওকে সারা দিনে শুধু ২ বার কল দিই রিসিভ করে বলে এখন ব্যস্ত পরে কথা বলবো এটা বলে রেখে দেয়। ও বলে তুমি সুন্দর করে কথা বলতে জানোনা, তোমার ড্রেস আপ সুন্দর নেই। আমার চুল কোমর থেকে ১ হাত নিচে পরতো ও বলে লম্বা চুল আমার ভালো লাগেনা, তার পরের দিন পার্লার এ গিয়ে চুল সব কেটে গাড় পর্যন্ত করি। ও যখনি আমার কাছে টাকা চাইতো আমি না করতাম না ওকে দিতাম।

আমার বাসায় যদি ওর পছন্দের কোন সবজি রান্না করতো বা মাছ রান্না করতো বা কোন ফল আনতো ওকে না দিয়ে আমি খেতাম না। ওর বাসার সামনে গিয়ে দিয়ে আসতাম। এমনকি রিলেশানের এই আড়াই বছরে আমি শুধু মাত্র ওর কাছ থেকে ৩০০ টাকা নিছি। পরে সে টাকা আবার ফেরত ও দিই। আমি রিচার্জ করে ওকে কল দিতাম ও কল দিলে রিসিভ করতাম না। ওর কল রিসিভ করলে ওর টাকা টা নষ্ট হবে এটা ভেবে কল কেটে দিয়ে আমি ফোন দিতাম। যাকে এতো ভালবাসলাম, এতো কিছু হলো তার কাছে শুধু একটাই আবদার একটাই চাওয়া ছিলো। প্রতিটা দিনের ২ টা করে মিনিট। সেটা ও সে দিতে পারতেছে না।

সবাই বলে ভালোবাসার জন্য একটা কারণ যথেষ্ট। আমি বলি ভালবাসতে কোন কারন লাগেনা, এটাই যথেষ্ট আমি ওকে ভালোবাসি। শুধুমাত্র ওর জন্য এফবি ইউজ, টিভি দেখা, গান শোনা সব বন্ধ করে দিছি। কি করবো কোন গান শুনলে মনে হয় গান ওর কথা বলছে। বেশিকিছু তো চায়নি শুধু ওর ভালোবাসা ছাড়া। কখন ও অন্য ছেলের সাথে রিলেশন করিনি। কারণ সেদিন ওকে হাসব্যান্ড হিসেবে গ্রহন করছি যে দিন ওর সাথে আমার ফিজিক্যাল রিলেশন হয়েছিলো। একটা মেয়ে একটা ছেলেকে কি এর চেয়ে বেশি ভালোবাসতে পারে…?? প্রতিদিন শুধু এটাই ভাবি আমার মরে যাওয়া উচিত। বেঁচে থেকে কি করবো… কারন আমি পারবো না ওকে ছাড়া বেঁচে থাকতে বা অন্য কাউকে বিয়ে করতে। প্লিজ ভাইয়া হেল্প মি। না হলে আমি সত্যিই মারা যাবো….



মন্তব্য চালু নেই