‘যত টাকা লাগুক যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংসদের নকশা আনা হবে’

জাতীয় সংসদের নকশা আনতে আবারো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জাতীয় সংসদ সচিবালয়। এর আগে ২০১৪ সালের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রী সংসদের নকশা সংগ্রহের নির্দেশ দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। তবে এবার যে কোনো উপায়ে নকশা আনতে বন্ধপরিকর সরকার। আর তাই নকশা আনতে ৪ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার বরাদ্দের সুপারিশ করেছে সংসদ সচিবালয় কমিশন। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৫ কোটি ১ লাখ ২৬০০০ টাকা।

বুধবার বিকেলে সংসদ সচিবালয় কমিশনের ২৬তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকে শেষে স্পিকার জানান, নকশা আনার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী দু’জনই সম্মতি দিয়েছেন। তাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে নকশা আনতে ৪ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলারের বাজেটও বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়েছে। স্পিকার বলেন, ‘নকশা আনতে প্রস্তাবিত অর্থের বিষয়ে কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি অর্থের পরিমাণ কিভাবে আরো কমানো যায় সেই বিষয়ও পর্যালোচনা করে দেখবে। জাতীয় সংসদের ৮০টি নকশা আনতে কত টাকা লাগবে তা নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা করা হয়েছে। এরপরই এই টাকা বরাদ্দের সুপারিশ করা হয়।’

শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় সংসদের বর্তমান নকশা আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। এটি সংরক্ষণ করার জন্য আমরা বন্ধপরিকর। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী যা যা করা প্রয়োজন তা করারও নির্দেশনা দিয়েছেন। এমন কি অর্থমন্ত্রীও বলেছেন, যত টাকা প্রয়োজন হোক না কেন আমরা আমাদের ঐতিহ্য রক্ষায় এই নকশা আনবো।’

শুধু লুই আই কানের এসব নকশা ফিরিয়ে আনা নয় বৈঠকে জাতীয় সংসদের প্রবেশের মুহুর্তে আগতরা যাতে এই ভবনের ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা পায় সেজন্য প্রবেশ মুখে বিভিন্ন সময়ের সংসদের ছবিগুলো দিয়ে ডিজিটাল প্রদর্শনী করার সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আমি সংসদে প্রবেশের স্থানটি পরিদর্শন করেছি। সেখানে অপর্যাপ্ত আলো থাকায় প্রধানমন্ত্রী আলো বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া আমরা আজকের বৈঠকে সংসদের লাইব্রেরিতে লুই কানের একটি কর্নার করার বিষয়েও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এছাড়া জাতীয় সংসদে ডিজিটাল ডাটা সেন্টারের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান স্পিকার। তিনি বলেন, ‘কাজ আরো আগে শেষ হতো কিন্তু এর নকশা পরিবর্তন করতে বলেছি কারণ যে নকশা করা হয়েছিল সেটিতে প্রবেশ ও চলাফেরার পথ খুবই সংকীর্ণ ছিল। আর এতে বোর্ড পার্টিশান দেয়া হয়েছিল সেগুলো পাল্টিয়ে স্বচ্ছ কাচ দিয়ে তৈরির পরামর্শ দিয়েছি।’

বৈঠকে আসন্ন ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সংসদ সচিবালয়ের জন্য ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকার বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে। সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে সংশ্লিষ্টদের বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রতিবছরই কমিশন বৈঠকে বাজেট বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৬১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানের আমলে বর্তমান সংসদ ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সে সময় স্থপতি মাজহারুল ইসলামকে এই ভবনের স্থপতি নিয়োগ করা হয়। তার প্রস্তাবেই লুই আই কান এই প্রকল্পের প্রধান স্থপতি হিসেবে নিয়োগ পান। আর তার প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ডেভিড উইজডম অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি সংসদ ভবন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়।



মন্তব্য চালু নেই