‘যখন হারতে শুরু করবেন, তখনই বুঝতে পারবেন, বাস্তবতা কাকে বলে’

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) তৃতীয় আসরে প্রথমবার এসেই বাজিমাৎ করেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তবে, এবারের বিপিএলে মূদ্রার উল্টো পিঠ দেখতে হল তাদের।

ছয়টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটি ম্যাচ জিতে পয়েন্ট তালিকায় তলানীতে আছে দলটি। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে খুব বড় কিছুর স্বপ্নও দেখাও সম্ভব নয়।

দলের কর্ণধার নাফিসা কামালও এই বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আপনি যখন সবার ওপরে থাকবেন, সব কিছু খুব সহজ মনে হবে। ভক্ত, বন্ধু, শুভাকাঙ্খিদের তখন চারপাশে পাবেন। কিন্তু যখন হারতে শুরু করবেন, তখনই বুঝতে পারবেন, বাস্তবতা কাকে বলে।’

তবে, এমন বাজে পারফরম্যান্সের পরও সমর্থকদের ভালবাসায় মুগ্ধ তিনি। লিখেছেন, ‘আজ আমি অন্তত এটা বলতে পারি যে, এই একটানা পরাজয়ের পরও যে কোনো সময়ের চেয়ে আমার এখন বন্ধু, সমর্থক এবং শুভাকাঙ্খি বেশী। এতো ভালোবাসা আর সম্মান আমাকে মুগ্ধ করে এবং বিষ্মিত করে। আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে শনিবার আমরা একটা জয় পেয়েছি। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে, আমরা বুঝি বিশ্বকাপ জিতে ফেলেছি। গত দু দিন আমি প্রতিটা মুহুর্তে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে শুভেচ্ছা পেয়েছি। টং দোকানের চা ওয়ালা থেকে শুরু করে মন্ত্রী মহোদয়রা অবদি; আমাকে সবাই অভিনন্দন জানিয়েছেন। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে এই ভালোবাসা দেখানোর জন্য সকলকে ধন্যবাদ। এই ভালোবাসাই আমাদের কষ্টকে সার্থক করে।’

টানা হারের পর দলের মালিক পক্ষের সাথে অধিনায়ক মাশরাফির সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল বলেও শোনা গেছে। সেই গুজব উড়িয়ে দিয়ে নাফিসা বলেন, ‘এই সুযোগে একটু বলি, কিছু লোক আমার এবং আমাদের অধিনায়ককে নিয়ে কিছু নেতিবাচক খবর প্রচার করেছেন। আমি জানি আপনারা কারা। আমি আপনাদের এই কাজ মনেও রাখবো না, যদি আপনারা সত্যিই মনে করেন যে, নিতান্ত হতাশা থেকে এই কাজ করেছেন। দেখুন, এটা দল যখনই খারাপ করে, আপনারা ম্যানেজমেন্ট অথবা খেলোয়াড়দের দোষ দেন। কিন্তু একবার কেউ অনুভব করেন না যে, দলের মালিক বা অধিনায়ক যে কারো চেয়ে এই খারাপ ফলাফলে বেশী কষ্ট পাচ্ছেন! যাই হোক, আপনাদের এই নেতিবাচক প্রচারনা আমাদের দলের সকলকে আরও ঘনিষ্ঠ করেছে, আমরা আরও শক্ত হয়ে উঠেছি। ফলে সমালোচকদেরও ধন্যবাদ।’

দলের মালিক হিসেবে নাফিসা তার নিজের ভূমিকার কথাও খোলাসা করেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিদেশী খেলোয়াড় রিক্রুটের সাথে জড়িত ছিলাম। এরপর আমি অধিনায়ক, কোচ ও ম্যানেজার নির্বাচন করেছি। আমার কাজ এইটুকুতেই শেষ হয়ে গেছে। এরপর থেকে ড্রাফটে (খেলোয়াড় নিলাম) সকল স্থানীয় খেলোয়াড়গ নির্বাচন থেকে শুরু করে দলের সকল নীতিগতো সিদ্ধান্ত এই তিন জনই (অধিনায়ক, কোচ ও ম্যানেজার) নিয়েছেন। আমি কোনো একটা ন্যুনতম সিদ্ধান্তও দেইনি। শুরু থেকে আমার ওনাদের প্রতিটা সিদ্ধান্তে পূর্ন আস্থা ছিলো, এখনও পূর্ণ আস্থা আছে। তারা সেরা দল করেছেন।’

ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক এই টি-টোয়েন্ট টুর্নামেন্টের এই আসরে নিজেদের আর সুযোগ দেখছেন না নাফিসা। তবে, আগামীবার আরও শক্তি নিয়ে ফিরে আসারও ঘোষণা দিরেন তিনি, ‘গতবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দল নিয়ে আমি যেমন গর্বিত ছিলাম, এবারের দল নিয়েও আমি একইরকম গর্বিত। আমরা যে নিয়মিত জিততে পারছি না, সেটা স্রেফ একটা দূর্ভাগ্য। আমরা গতবার ভাগ্যবান ছিলাম, তাই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবার ভাগ্য পক্ষে নেই বলে কিছু ম্যাচ হারছি। তবে সবকিছুরই ‘নেক্সট টাইম’ আছে। আমাদের সাথে থাকুন। আমরা অবশ্যই আরও শক্তিশালী হয়ে, আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবো, ইনশাল্লাহ।’



মন্তব্য চালু নেই