ম্যারাডোনাকে পাশে পাচ্ছেন মেসি

চিলির বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে সহকারী রেফারিকে বাজে ভাষায় গালাগালি দেয়ার অপরাধে মেসিকে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞার পরই তোলপাড় শুরু হয়েছে ফুটবল বিশ্বে। বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের ঠিক আগমুহূর্তে এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ম্যাচটি খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ফলে ২-০ গোলে হেরে আসতে হয় আর্জেন্টাইনদের এবং বাকি তিন ম্যাচ মেসি খেলতে না পারলে লা আলবেসেলেস্তেরা আগামী বিশ্বকাপ খেলতে পারবে কি না তা নিয়েও তৈরি হয়েছে ঘোর সংশয়।

মেসির ওপর চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা যে খুব বেশি হয়ে গেছে ইতিমধ্যে সে মন্তব্য আসতে শুরু করেছে ফুটবল বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে সবদিক থেকে। ফিফার শুভেচ্ছাদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আর্জেন্টাইন কিংবদন্তী দিয়েগো ম্যারাডোনাও একে বলছেন, খুব বেশি হয়ে গেছে এবং তিনি মেসির শাস্তি কমানোর জন্য ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোকে অনুরোধ করবেন বলেও জানান।

মেসির শাস্তি কমাতে মাঠে নামা দিয়েগো ম্যারাডোনা বলেন, ‘মেসির শাস্তি অতিরিক্ত হয়েছে এবং এটা দুঃখজনক। আমি কথা বলব ফিফা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। চার ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকা মানে অনেক; কিন্তু মেসি যা বলেছে সেই কথাগুলো যথেষ্টই খারাপ। মেসি যেন টেডি বিয়ার। তবে আমার মনে হয়, তার শাস্তি কমানো সম্ভব।’

মেসিছাড়া আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ খেলতে পারবে না, বিশ্বাস করেন ম্যারাডোনা। তিনি বলেন, ‘মেসিকেছাড়া আমাদের বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন পুরোপুরি সংশয়ের মুখে। মেসি থাকলে দল যেমন, না থাকলে যেন তার পুরো উল্টোটা। এ কারণে তার না থাকাটা দলের জন্য খুবই খারাপ খবর। এটা যেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোছাড়া পর্তুগাল দলেরমত। কারণ, এসব ফুটবলার দলে না থাকলে পুরো দলটা যেন অসম্পূর্ণ। আরা তারা থাকলে যে কোনো দলকে হারানো কঠিন কিছু নয়। বলিভিয়ার বিপক্ষে আমরা ভালো খেলিনি। বাউজার এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে।’

আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে আবার ক্লডিও তাপিয়া জানিয়ে দিলেন তার প্রথম কাজই হচ্ছে মেসির শাস্তি কমানো। ইতিমধ্যেই দেশের সেরা আইনজীবীদের দায়িত্ব দিয়েছেন তাপিয়া, ফিফার সঙ্গে কোনও সমাধানে পৌঁছার জন্য। তিনি বলেন, ‘মেসির শাস্তিটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ফিফা কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে খুব খারাপ জায়গায় রয়েছে আর্জেন্তিনা। সরাসরি বিশ্বকাপে পৌঁছতে হলে পরের চার ম্যাচ জিতেতই হবে। একের পর এক খারাপ ফলাফলের কারণে প্রশ্ন উঠছে আর কতদিন আর্জেন্টিনা কোচ থাকবেন এদগার্দো বাউজা। তাপিয়া অবশ্য বলছেন, কোচের পাশে রয়েছেন তারা, ‘আমরা বাউজার পাশে আছি। প্রতিটা ফুটবলারের মতো কোচের উপরও ভরসা আছে। ওর সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাই। জানতে চাই ঠিক কী সমস্যা হচ্ছে। আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেতে হবে যাতে আমরা রাশিয়ায় ভাল কিছু করতে পারি।’

মেসির নিষেধাজ্ঞার রেশ ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও। মেসির পাশে দাঁড়িয়ে সবাই পোস্ট করেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হোক। আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ বিশ্বকাপজয়ী কোচ সিজার লুইস মেনোত্তিও বলছেন, ‘মেসিকে চারম্যাচ নিষিদ্ধ করা উচিত হয়নি। মেসি এমন কিছু মারাত্মক কথা বলেনি যে ওকে এত বড় শাস্তি দেওয়া হবে। অনেক সময় দেখা গিয়েছে এ রকম ঘটনার পরে অনেকবার ফুটবলাররা মাত্র দুটো ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছে।’



মন্তব্য চালু নেই