‘মোদী চোর, অমিত গুণ্ডা’

নরেন্দ্র মোদীকে বললেন চোর। অমিত শাহকে গুণ্ডা। কড়া ভাষায় দু’জনকে তীব্র আক্রমণ করলেন পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘একটা চোর ও একটা গুণ্ডা মিলে দেশটাকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে খাক করে দিচ্ছে।’

মমতা বললেন, ‘আপনি চুরি করেছেন। একবার নয়, হাজার বার বলব। নরেন্দ্র মোদী সরকার আর বিজেপি দলই সবথেকে বড় চোর। নোট বাতিল একটা বড় দুর্নীতি। এর পিছনে কত কোটি টাকার ডিল হয়েছে, আমরা জানতে চাই। আমরা আপনার এবং আপনার দলের বিরুদ্ধে তদন্ত চাই। সেই সঙ্গে তার হুঙ্কার, ক্ষমতা থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করুন।’

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী যেদিন মোদীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন, ঠিক সেদিনই তৃণমূল নেত্রীর এই নজিরবিহীন আক্রমণ রাজনৈতিক উত্তাপ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এর আগে নোট বাতিল ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর কাজের সমালোচনা করলেও এ রকম ব্যক্তিগত আক্রমণ কোনো দিন করেননি।

তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকারের কোনো কর্মকর্তার গায়ে হাত পড়লে আপনারাও রেহাই পাবেন না। আপনার হাতেও যেমন আইন, রাজ্যের হাতেও আইন রয়েছে।’ অর্থাৎ, সিবিআই কিংবা আয়কর দপ্তরের কোনো কেন্দ্রীয় সংস্থা যদি রাজ্য সরকারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়, তা হলে রাজ্য সরকারও তার পুলিশ দিয়ে মোদীর লোকেদের হাতকড়া পরাবে।

মমতার কটাক্ষ, ‘স্বাধীনতার পর অনেক সরকার এসেছে। কিন্তু কখনো আমরা দেখিনি, জনগণ থেকে সব কিছু কেড়ে নেয়া হচ্ছে। জমির ধান কেড়ে নিয়ে যায়। গরিবের পথ্য কেড়ে নিয়ে যায়। সবাইকে চোর বানিয়ে নিজেকে সাধু প্রতিপন্ন করার চেষ্টা হচ্ছে। কেন্দ্রে একটা সরকার এসেছে, যার কাজই হল, হয় দাঙ্গা বানানোর ফন্দি, নয় টাকা কাড়বার নোটবন্দি।’

তিনি জানান, ভারত বর্ষের মানুষ স্বাধীনতার জন্য অনেক লড়াই করেছে। অনেক কষ্টে যে স্বাধীনতা ফিরে এসেছিল, সেটা আজ হাতছাড়া হতে বসেছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশ থেকে তাড়াতাড়ি বিদায় নিক। দলমত নির্বিশেষ সর্বস্তরের মানুষকে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জোট বাঁধার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ব্যাপারে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রফুল্ল চাকিদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মমতা। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, নোট বাতিলের ইস্যুতে তার এই দেশজোড়া আন্দোলন আসলে দ্বিতীয় স্বাধীনতার সংগ্রাম।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, নোট বাতিলের জেরে রাজ্যের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ বেকার হয়ে গেছেন। যারা ভিন রাজ্যে সোনা ও জরির কাজ করতেন, তারা কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরে এসেছেন। এর ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পশ্চিমবঙ্গই আগামী দিনে দেশবাসীকে পথ দেখাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই