সংলাপ-সমঝোতার টার্নিং পয়েন্ট

মোদির সফরে রাজনৈতিক আশায় বিএনপি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগামী ৬ জুন ঢাকা সফরকে নিয়ে আশাবাদী বিএনপি। তার এ সফরে তিস্তাসহ দ্বিপক্ষীয় সমস্যার পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ-সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে মনে করে দলটি। একইভাবে ভারতের সঙ্গে অতীতে বিএনপির তিক্ত সম্পর্কের বরফ গলবে বলেও মনে করেন দলটির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারা। এ কারণেই মোদির সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বিএনপি। ভারতের সরকারপ্রধানের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠক করারও জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে। দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগও করছেন বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। বিএনপি আশাবাদী, ঢাকায় বেগম জিয়ার সঙ্গে মোদির বৈঠক হবে। দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, রাজনীতিতে কঠিন সময়ে বিএনপি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের রাজনীতিতেও পিছিয়ে পড়েছে দলটি। তাই মোদির সফরকে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। বেগম জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের সুযোগ হলে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের চিত্র তুলে ধরবে দলটি। পাশাপাশি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক সংলাপ-সমঝোতায় মোদিকে ভূমিকা পালনের অনুরোধও জানানো হবে। এ ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের নির্বাচনের উদাহরণও তুলে ধরা হবে।

বিএনপির পতাকাবিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান জানান, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। আমার বিশ্বাস, বিষয়টি ভারত সরকারও অনুধাবন করছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় ভারত এগিয়ে আসবে বলে মনে করি।’

তবে দলের সিনিয়র এক নেতা জানান, ‘মোদির সঙ্গে বিএনপি-প্রধানের বৈঠক না হলে রাজনৈতিকভাবেও বিএনপি অনেকটা পিছিয়ে পড়বে। এর মাশুল গুনতে হবে আরও বহুদিন। তাই মোদির সফর যতই সংক্ষিপ্ত হোক না কেন, তার সঙ্গে বেগম জিয়ার বৈঠক করানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’

মোদিগেল বছর বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভারতে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বিএনপিতে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়। মোদি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জোর দেয় দলটি। এক্ষেত্রে মোদি সরকারও বিএনপির প্রতি কিছুটা ইতিবাচক মনোভাব দেখায়। গত বছর জুনে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল না থাকার পরও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় পান খালেদা জিয়া। ওই সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে একান্তে ১২ মিনিট বৈঠক করেন সুষমা। এ কারণেই বিএনপি আশাবাদী, নরেন্দ্র মোদিও বিএনপি-প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দেবেন। দলের নীতিনির্ধারকদের মতে চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে মোদি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেন। মোদি চাইলে সরকার ও সংসদের বাইরে বিরোধী দলগুলোকে সংলাপেও বসাতে পারেন।

খালেদা,,সূত্র জানায়, নরেন্দ্র মোদি তার এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে ভারত সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব তৈরির প্রণোদনা দিতে চান। জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং দলের সঙ্গে সুসম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দিতে চান তিনি। এসব দিক বিবেচনায় খালেদা জিয়ার সঙ্গেও তার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার জানান, ‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে এ দেশটির ভূমিকা অপরিসীম। তাই দেশটির সরকার-প্রধানের বাংলাদেশ সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে বিএনপি। বিজেপির সঙ্গে বিএনপির একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। আশা করি বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদির এ সফরে সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’



মন্তব্য চালু নেই