মেসি-রহস্যে অনেক প্রশ্ন, উত্তর নেই

বার্সেলোনা প্রেসিডেন্টের আশ্বাস সত্ত্বেও লিও মেসিকে নিয়ে তীব্র জট ক্লাবে৷ তাকে ছেড়ে দেওয়া হলে বিশ্বের ছ’টি ক্লাব ছাড়া আর কোনো ক্লাবের পাওয়ার প্রশ্ন নেই৷ মেসিকে নিতে এত অর্থ লাগবে! তবু মেসিকে নিয়ে রহস্য ক্রমেই দানা বাঁধছে৷ অনেক প্রশ্ন, উত্তরই নেই৷

কোচ লুইস এনরিকের সঙ্গে তার সম্পর্ক কি স্বাভাবিক হয়েছে? মেসি এবং এনরিকে দু’জনেই বলে যাচ্ছেন, ব্যাপারটার মধ্যে অস্বাভাবিকত্ব নেই৷ তবে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের বিশাল অংশের ধারণা, কয়েক দিনের মধ্যেই যেকোনো একজনকে সরে যেতে হবে৷ ব্যালন ডি’ওর অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে মেসি বলে গিয়েছিলেন, ‘এনরিকের সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা নেই৷’ কিন্ত্ত জুরিখে ফিফার অনুষ্ঠানে দুটি ভিডিয়ো বুঝিয়ে দিয়েছে কোচ ও মেগাস্টারের সম্পর্ক মোটেই স্বাভাবিক নয়৷

ফিফার অনুষ্ঠানে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছিলেন মেসি৷ সংযোজিকা তাকে বলেন, ‘দু’জন আপনার সম্পর্কে কথা বলবেন বিদেশ থেকে৷ তা শুনে আপনার কী মনে হয়, সেটা বলবেন৷’ ভিডিয়োতে প্রথমেই দেখা যায়, লুইস এনরিকের মুখ৷ তা দেখেই মেসির মুখ বেশ গম্ভীর হয়ে যায়৷ এনরিকে অনেক ভালো ভালো কথা বলেন তার সম্পর্কে৷ কিন্ত্ত স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের কথা শুনে খুব একটা আলোড়িত দেখায়নি মেসিকে৷ তিনি খুব দায়সারা মন্তব্য করেন৷ তার পরেই দেখা যায়, আর্জেন্টিনা থেকে কথা বলছেন মেসির আগের প্রজন্মের সুপারস্টার পাবলো আইমার৷ যা দেখে হাসিতে মুখ ভরে যায় মেসির৷

এই দু’টি মুখের ছবি স্পেনের কাগজে বেরিয়েছে৷ এবং বলা হচ্ছে, মেসিকে এখনও সন্ত্তষ্ট করতে পারেননি এনরিকে৷ বার্সেলোনা কোচকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘আপনাকে দেখে মেসির মুখ ও রকম হয়ে গেল কেন?’ এনরিকে বলেন, ‘আমি ওই দৃশ্যটা দেখিনি৷ আমার দুর্ভাগ্য, ওই অনুষ্ঠানটাই দেখতে পাইনি৷’ এমনিতে কিংস কাপের জন্য প্রেস কনফারেন্সে এসেছিলেন এনরিকে৷ সেখানে আবার তিনি মেসিকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন৷ কিন্ত্ত ভবি ভোলবার নয়৷ পাশাপাশি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমে মেসির আচরণ নিয়ে এ দিনও প্রশ্ন তোলা হয়েছে৷ কর বিতর্কে জড়িয়ে পড়া, নানা বিতর্কিত মন্তব্য করা-এই মেসি একেবারে আলাদা, এটাই বলছে স্প্যানিশ প্রচারমাধ্যম৷

তার মধ্যেই আসরে নতুন করে নামতে হয়েছে প্রেসিডেন্ট খোসেপ বার্তোমেউকে৷ বার্তোমেউ বলেছেন, ‘মেসি আমাকে বলেছে ও কেরিয়ার শেষ করতে চায় বার্সেলোনাতেই৷ আর ওর এখানে থাকার ইচ্ছে ও দায়বদ্ধতা বিশাল৷ ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷’ মেসি যদি সত্যিই ক্লাব ছাড়েন, তা হলে তাকে কোন ক্লাব নিতে পারে? দু’টো ক্লাবের কথা সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে৷ চেলসি ও ম্যাঞ্চেস্টার সিটি৷ তবে ফুটবল বিশ্লেষকদের ধারণা, ওই দু’টো ক্লাবের থেকেও আর্থিক দিক দিয়ে অনেক ভালো জায়গায় রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড৷ মেসিকে নিলে তারাই নিতে পারে৷ এর বাইরে বায়ার্ন মিউনিখ ও পিএসজির কথাও উঠছে৷

কোনো ক্লাবকে মেসিকে কিনতে গেলে বার্সেলোনাকে দিতে হবে ২৫ কোটি ইউরো৷ মেসির যা বার্ষিক বেতন তাতে বছরে খরচ হবে ৫ কোটি ইউরো৷ তা ছাড়া মেসির সঙ্গে কমপক্ষে পাঁচ বছরের চুক্তি করতে হবে৷ হিসাব করে দেখানো হয়েছে, ওই ২৫ কোটি ইউরো পাঁচ বছরে ভাগ করে প্রতি বছরে হয় পাঁচ কোটি৷ সব মিলিয়ে মেসির জন্য বছরে ১০ কোটি ইউরো খরচ করতে হবে ক্লাবকে৷ তাই ব্যয়সাপেক্ষ এই পদক্ষেপ কি কোনো ক্লাব নেবে? সেই প্রশ্ন উঠছে বলেই বার্সেলোনা ফ্যানের আশায়, মেসি শেষ পর্যন্ত ক্লাব ছাড়বেন না৷ তবে মেসির সঙ্গে কোচ ও কর্তাদের সম্পর্ক তলানিতে দেখে রিয়াল মাদ্রিদ উৎসাহী হয়ে উঠেছে৷ যদি ফিগোর মতো চমকে দিয়ে মেসিকে নেওয়া যায়। – সংবাদসংস্থা



মন্তব্য চালু নেই