মেলেনি সন্ধান, পুরোটাই গুজব

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ফুলছড়ি উপজেলার খাটিয়ামারীসহ বেশ কয়েকটি চরে গভীর অবধি তল্লাশি চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছে পুলিশ।

জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, কোথাও সন্ধান পাওয়া যায়নি সালাহ উদ্দিন আহমেদের। পুরোটাই গুজব।

ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের তালতলী, হাতিয়ামারী, বেলুয়াছড়িসহ কয়েকটি চরে গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয়। তবে কোনো লাশ কিংবা সালাহ উদ্দিনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিষয়টি একটি গুজব। তবে কারা এ গুজব ছড়িয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করেছে তাদের খোঁজ করা হচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম জানান, ঘটনার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। রাতেই তল্লাশি শেষ করা হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে খবর আসে ফুলছড়ির ব্রহ্মপুত্র নদের খাটিয়ামারি চরের কাছে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের সন্ধান পাওয়া গেছে।

পরে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি জেনে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে বিকেলে স্বাস্থ্যবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। পুরো চরাঞ্চলে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অবধি অভিযান চালিয়েও সালাহ উদ্দিনের সন্ধান বা কোনো লাশ দেখতে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা জানায়, বিকেলে খাটিয়ামারি চরের কাছে একটি লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী। লাশটি নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি জেলা প্রশাসক জানতে পারেন।

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিউর রহমান  জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে তল্লাশি চালানো হলেও গভীল রাত অবধি কোনো লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসা সাংবাদিকরা জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ব্রহ্মপুত্র নদের বেশ কয়েকটি চরে রাত ১২টা অবধি তল্লাশি চালিয়েও কারো সন্ধান বা কোনো মৃতদেহ খুঁজে পায়নি। ঘটনাটি পুরোটাই গুজব বলেই মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকের একটি দল রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।

এরপর গত ১২ মার্চ সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে ফৌজদারি আবেদন করেন সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। শুনানি শেষে সালাহ উদ্দিনকে ১৫ মার্চের মধ্যে খুঁজে বের করে আদালতে হাজির করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‌্যাবের মহাপরিচালক, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এসবি), পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (সিআইডি), ঢাকা জেলা প্রসাশক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, উত্তরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

গত ১৫ মার্চ পুলিশ সদর দপ্তর, ঢাকা মহানগর পুলিশ, র‌্যাব, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও বিশেষ শাখা (এসবি) পাঁচটি আলাদা প্রতিবেদন দাখিল করে হাইকোর্টে। এতে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদের খোঁজ জানে না পুলিশ। তারা সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার বা আটক করেনি। তবে তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।



মন্তব্য চালু নেই