মেলায় দীপনের ‘জাগৃতি’, টুটুলের যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি

গত বছরের ৩১ অক্টোবর দুপুরে জাগৃতি প্রকাশনীর কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপন নিজ কার্যালয়ে নৃশংসভাবে খুন হন। এরপর প্রকাশনীর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন তার স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান জলি। সাহসী প্রকাশক দীপন আর নেই, কিন্তু আসছে বইমেলায় থাকছে তার প্রতিষ্ঠান জাগৃতি প্রকাশনী। একুশে গ্রন্থমেলার বর্ধিত অংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর স্টলটি জাগৃতির।

শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে ঝুলছে তালা। তবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘স্যার নিহত হওয়ার কারণে সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেছে। এবারের বই মেলায় অনেকগুলো বই আসার কথা ছিল। তবুও ১৫-১৬টি বই বের করা হচ্ছে।’

আলাউদ্দিন জানান, জাগৃতির অফিস, অর্থাৎ শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলার ১৩১ নম্বর কক্ষটি দীপনের বন্ধু অলির নামে ভাড়া নেয়া। তিনি সেখানে দীপনের স্মরণে কিছু তৈরি করবেন। মার্কেটের নিচতলায় গত একমাস ধরে বইয়ের কাজ শুরু করেছে জাগৃতির কর্মীরা। দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এবং দীপনের স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান জাগৃতির হাল ধরেছেন।

গত বইমেলায় খুন হওয়া বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়ের লেখা প্রকাশের জন্যই দীপনকে হত্যা করা হয়েছে- এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস স্বজনদের। এ কারণে এবার অভিজিতের কোনো বই পুনমুদ্রণ বা প্রকাশ করবে না জাগৃতি।

একই দিন দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হয়েছিলেন শুদ্ধস্বরের কর্ণধার আহমেদুর রশীদ টুটুল। লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বরের সেই কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে এখনো তালা ঝুলছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কয়েকদিন পরেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন টুটুল। তার স্ত্রীসহ পরিবারের ঘনিষ্টদের ফোন নম্বরও বন্ধ। ফলে এবারের বইমেলায় শুদ্ধস্বরের কোনো বই প্রকাশিত হচ্ছে কি না তা জানা যায়নি। জানা গেছে, একই হামলায় আহত তারেক রহিম ও রণদীপম বসু এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। তারা নিজ নিজ বাসায় আছেন।

বই মেলার নিরাপত্তা
সংশ্লিষ্টরা জানান, বইমেলায় আসা-যাওয়া নিয়ে যেন কোনো উৎকণ্ঠা তৈরি না হয়, সেজন্য এবার অনেক বেশি নিরাপত্তার আয়োজন রাখা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে মেলায় আসতে পারবেন। মেলার সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা নির্ধারণে বাংলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও র‌্যাবের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এরই মধ্যে তিন দফায় বৈঠক করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএমপির মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে। পথে অন্ধকারের মধ্যে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ ঘটে। গত বছর অভিজিৎকে টিএসসির কাছে হত্যা করা হয়। এবার সবগুলো চলাচলের পথে উচ্চ আলো বাতির দেয়া হবে। পুরো এলাকাটি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হবে।’

শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কমপক্ষে আটটি ওয়াচ টাওয়ার হতে পারে। পুরো এলাকাটি নজরদারিতে রাখা হবে।’



মন্তব্য চালু নেই