মৃত্যু হলেও মানুষের মাঝে অমর হয়ে থাকবে কৃষ্ণ গোপাল চট্রোপাধ্যায়

কৃষ্ণ গোপাল চট্রোপাধ্যায় স্মরনে কিছু স্মৃতি গাথা কথা আজও মনে দাগ কেটে আছে। এ কথাগুলো না বললেই নয়। তাই খাতা, কলম, আর ল্যাপটব নিয়ে লিখতে বসা। জানিনা তার জীবনের সুকর্ম গুলো ফুটিয়ে তুলতে পারব কিনা। তবে চেষ্টা করে দেখছি। কৃষ্ণ গোপাল চট্রোপাধ্যায়ের সম্পর্কে মানুষের মুখে শুনা যায় ।

এখন যে আর এ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছে তিনি পরকালে। তার কথা আজ মনে পড়ে বারে বারে, সে বলতেন আমি আর তোদের মাঝে বেশী দিন নাই। ভাই নিজের কথা না ভেবে মানুষের কথা বলতেন, কৃষ্ণ ছাত্র যখন নিজের পড়ার বই দরিদ্র বন্ধুদের দিয়ে বাড়ী এসে মাকে বলে, বই কিনে দিতে। অন্যের দুঃখে সে দুঃখ পেতেন।

ছাত্র জীবনে তার জামা কাপড় ও অর্থে অনেক ছাত্র পড়াশুনা করেছে। তার সুপারিশে তার বড় ভাই অনেক ছেলেকে চাকরীর সুযোগ করে দেয়। কৃষ্ণ নার্সারী করে দরিদ্র মানুষের মধ্যে গাছের চারা বিতরন করেন। সে দরিদ্র মানুষের কল্যানে জন্য কাজ করতেন, দরিদ্র মানুষের পক্ষে কথা বলতেন। আইএনজিও কাজ করে ৮৮সালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সার্বিক সহযোগীতার হাত বাড়ায় ২৩টি গ্রামের মানুষের খাদ্য, টিন, অর্থ ,পানি ব্যবস্থা করে দেয়।

পরে তাদের স্বাস্থ্য চিকিৎসার দায়ভার নেয় এবং মা ও শিশু স্বাস্থ্য কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বালিয়াকান্দি উপজেলার ভুমিহীন মানুষেরা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। তখন তাদের সংগ্রামকে বেগবান করতে কৃষ্ণ পথ নাটক ও গান লিখতেন যেমন, সংগ্রাম বিনা হয় না মুক্তি পাওয়া যায় না অধিকার। দরিদ্র মানুষের রক্ত ঋনে গড়ে ওঠেছে আজকের সভ্য সমাজ, বন্ধু তুমি দরিদ্র মানুষের বন্ধু অসহায় মানুষের বন্ধু, আশার আলো জালিয়ে দিয়েছে অসহায় মানুষের বুকে গান নিজের সুরে নিজে লেখতেন।

নিজের জমি ৫জন ভুমিহীনকে দান করেন। ঈদের সময় অনেক দরিদ্র মুসলমানদের ঈদের জন্য খরচের টাকা দিতেন, পুজার সময় দরিদ্র হিন্দুদের পুজার জন্য খরছের টাকা দিতেন। দরিদ্র মানুষের পক্ষে গান গেয়ে মাতাতেন। তার গান শুনে দরিদ্র মানুষেরা মুগ্ধ হতেন। ভুমিহীনদের সমাবেশ মিটিং হতে কৃষ্ণ হাজির হতেন গানে গানে মানুষকে মাতিয়ে তুলতেন পরে চন্দনা শিল্পী গোষ্ঠী নামে সাংষ্কৃতিক সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি নিজে ওই শিল্পি গোষ্টির সভাপতি ছিলেন।

তিনি আরশি শিল্পি গোষ্টির উপদেষ্টা ছিলেন। দরিদ্র মানুষের সমাজিক মানবিক উন্নয়নের জন্য তিনি আখিঁ এনজিও করেন। এনজিওর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের কাছে পৌছায় পল্লী বন্ধু সংস্থার সহযোগীতায় আইএনজিদের সহযোগীতা পেয়ে অধিকার দাবীতে যেমন, কৃষি সংস্কার ভুমির অধিকার, জলাশয় প্রবেশাধিকার, নারীর উন্নয়ন নারীর ক্ষমতায়, নিতিমালা জানানোর কাজটি করেন।

এজন্য অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন কৃষ্ণ। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম থেকে গ্রামে তার অকাল মৃত্যতে শোকের ছায়া নেমে আসে গোসাঁই গোবিন্দপুর গ্রামে। হিন্দু মুসলমান নারী-পুরুষ হরিপদ, কামাল, কালী দাস, বিমল দাস, আমেনা, রুবিয়া কাঁন্নায় ফেটে পড়ে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা এক নজর দেখার জন্য ছুটে আসে হাজার হাজার সহজ সরল মানুষেরা। সকলের মুখে এক কথা সে ছিল আমাদের অতি আপনজন। আমাদেরকে ফাঁকি দিয়ে এপৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছে, না ফেড়ার দেশে ।

আজ তার জন্য বড় কষ্ট হয়,শৃন্যতা বুকের মধ্যে গুমরে কাঁদছে। না পারছি ভুলতে না পারি মন টাকে বুঝাতে। আজ বালিয়াকান্দির চায়ের দেকানে শুধুই তার কথা বলা কয়া করছে। যে শুনছে সেই দুঃখ করে বলছে একজন ভালো লোক ছিলেন এ কথা সকলের মুখেছিল। সাধারন মানুষের কথা কৃষ্ণকে স্মরন সভা করা, বই লেখা ,কবিতা লিখা ,তার গান লেখা কৃষ্ণ থাকবে মানুষের মনের মনিকুটিরে । মানুষ তাকে ভালো বেসেছে পাগলের মত, আজ সে নাই আমাদের মাঝে কেমনে বুঝায় অবুঝ এ মনটাকে।

অসহায় মানুষ বিপদে পড়ে যায় তাকে সহযোগিতা করেছে। কৃষ্ণ ছিল সাদা মনের মানুষ, তার সাদা মনে কোন কাঁদা দাগ লাগাতে দেয় নাই। কোন অন্যায়ের সঙ্গে কোন দিন অপোষ করে নাই ,অন্যায়ের বিরুদ্বে প্রতিবাদ প্রতিরোধ করেছে। সে বলেছে মানুষ মানুষের জন্য দুর্বল মানুষেরা আমাদের কাছে আসবে অধিকার দাবী নিয়ে ফিড়িয়ে দিতে হবে তার প্রাপ্ত অধিকার। বড় মনের মনের মানুষ ছিল সবাই তাকে এক নামে চিনতো। তাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেও মানুষের মাঝে চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই