মৃত্যু যন্ত্রণার স্বরূপ

পৃথিবীর সকল প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। এটা আল্লাহর বিধান। মৃত্যুর হাকিকত কি? মৃত্যুকালীন সময় মানুষের কষ্টের তীব্রতা কেমন? মানুষের বার্ধক্যে উপনীত হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর বিধি-বিধান লংঘন, উশৃংখল চলাফেরা ইত্যাদির কারণে মৃত্যুর হাকিকত মানুষের স্মরণ করা উচিত। তাই বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর বাবার মৃত্যুকালীণ সময়ের অনুভূতি মুসলিম উম্মাহর জন্য তুলে ধরেছেন-

হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, আমার পিতা (আমর বিন আস রাদিয়াল্লাহু আনহু) প্রায়ই বলতেন, ঐ ব্যক্তির সম্পর্কে আমার বড়ই আশ্চর্য বোধ হয়। যার মধ্যে মৃত্যুর আলামত প্রকাশ পেয়েছে। তার হুশ এবং অনুভূতি বিদ্যমান আছে, বাক শক্তি নষ্ট হয়নি। এতদসত্ত্বেও সে কেন মৃত্যুর অবস্থা বর্ণনা করে না?

ঘটনাক্রমে হজরত আমর বিন আস রাদিয়াল্লাহু আনহুর মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়, তখনও তাঁর হুশ, অনুভতি ও বাকশক্তি বিদ্যমান। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, আব্বাজান! এ অবস্থায় উপনীত ব্যক্তি মৃত্যুর অবস্থা বর্ণনা না করার ওপর তো আপনি আশ্চর্যবোধ করতেন। আজ আপনি মৃত্যুর অবস্থা কিছু বর্ণনা করুন।

হজরত আমর বিন আস রাদিয়াল্লাহু আনহু উত্তর দিলেন, হে পুত্র! মৃত্যুর অবস্থাতো বর্ণনা করা সম্ভব নহে। তারপরও আমি কিছু বর্ণনা দিচ্ছে-
আল্লাহর শপথ! আমার মনে হচ্ছে যে, আমার কাঁধের ওপর পাহাড় রাখা হয়েছে, এবং মনে হয় আমার প্রাণ সুঁচের ছিদ্র দ্বারা বাহির করা হচ্ছে এবং আমার পেট যেন কাঁটায় ভরপুর।
আমার মনে হচ্ছে, আসমান-জমিন একত্রে মিশে গেছে। আর আমি ইহার মাঝে পিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি।

এ হচ্ছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মর্যাদাসম্প্নন একজন সাহাবির মৃত্যুকালীন সময়ের অনুভূতি। যা তিনি নিজে অনুভব করেছেন। তাঁর ছেলে হজরত আবদুল্লাহ তা বর্ণনা করেন।

সুতরাং মৃত্যু আসার পূর্বে, মৃত্যুর আলামাত প্রকাশ পাওয়ার পূর্বেই আমাদেরকে মৃত্যুর সম্বল অর্জন করতে হবে। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করতে হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গোনাহ ও অপরাধ মুক্ত আমলি জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। মৃত্যুকালীন কষ্ট থেকে হিফাজত করুন। আমিন।



মন্তব্য চালু নেই