মৃত্যুফাঁদ উপেক্ষা করে জীবনের গান গাইছেন এই নারী!

মেয়ে হওয়ার জন্মানোর হাজার জ্বালা! তা সে দেশটি প্রথম বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত হোক বা তৃতীয় বিশ্বের! নারীনির্যাতনের চেহারাটা সব দেশেই প্রায় এক! এহেন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েই হিজাব-নাকাব-বোরখার বাধা ঝেড়ে ফেলে মুক্তকণ্ঠে জীবনের গান গাইছেন এই ব়্যাপার। নাম- প্যারাডাইস সরৌরি।

সরৌরি যে দেশে জন্মিয়েছেন এবং যেখানে বাস করেন, সেই আফগানিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হেরাট ভীষণভাবেই এক পুরুষতান্ত্রিক দেশ। “এখানে মেয়ে হয়ে জন্মানোটাই অপরাধ! তার উপর সে যদি সমাজের চাপিয়ে দেওয়া অনুশাসন মেনে না চলে, তবে তো আরও বিপদ”, হাসতে হাসতে জানিয়েছেন গায়িকা।

ফলে, একাধিকবার মৃত্যুর হুমকি উড়ে এসেছে তার দিকে। কিন্তু তিনি তা গায়ে মাখেন না! কেন না, আফগানিস্তানের সিভিল ওয়ারের সময় সেই দেশে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সেই সময় শিশুকন্যাকে নিয়ে অন্যত্র চলে যান সরৌরির বাবা-মা। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরৌরি ফিরে আসেন মাতৃভূমিতে। “এটা আমার দেশ, আমার শিকড় এখানে। সেটা ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না”, সাফ জানিয়েছেন তিনি।

সরৌরির গানের বিষয় মূলত নারীরাই! বা বলা ভাল- নারীনির্যাতন! ব়্যাপের তালে তালে সমাজ কী ভাবে নারীকে কোণঠাসা করে রাখে, তা ব্যঙ্গের ছলে গেয়ে চলেন তিনি- “এদেশে তুমি কথা বলতে পারবে না, কেন না তুমি নারী! তুমি হাঁটে-ফিরতে পারবে না, নারী বলে! স্রেফ নারী বলেই স্বাধীন চিন্তা করতে গেলে মাথায় এসে পড়বে বন্দুকের বাঁটের বাড়ি! ধর্ষণ আর অ্যাসিড-হানা তো তোমার নিত্যসঙ্গী হবেই, তুমি যে নারী!”

অবশ্য সব পুরুষই যে নারীর উপর জোরজবরদস্তি করেন, তেমনটা তো নয়! তাই এহেন সরৌরিরও প্রধান সমর্থনের জায়গা তাঁর স্বামী ডাইভার্স। দুইয়ে মিলেই তৈরি করেছেন গানের দল- ১৪৩ ব্যান্ড। তাদের গানের কয়েক ঝলক রইল নিচের ভিডিওয়। শুনে দেখুন, বুঝতে পারবেন বিশ্ব কেন কুর্নিশ জানাচ্ছে এই সাহসিনীকে!



মন্তব্য চালু নেই