মুসলিম পুরুষের দ্বিতীয় বিয়েতে আদালতের বাঁধা

ইসলাম ধর্মে বিশেষ শর্তে পুরুষরা একাধিক, কোরআন অনুযায়ী চার বিয়ে করতে পারেন। কিন্তু মুম্বাইয়ের একটি পারিবারিক আদালত শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ফেরত এক মুসলিম শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বিতীয় বিয়ে ঠেকিয়ে দিয়েছেন।

আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, তার প্রথম স্ত্রীর অধিকার ও পাওনা না মেটানো পর্যন্ত তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবেন না। ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে শনিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিচারক সোয়াতি চৌহান তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘প্রথম স্ত্রী অধিকার রক্ষা না করে আর একটি বিয়ে করা আইন ও ধর্ম সমর্থন করে না।’

ওই একই মামলায় এর আগে আদালতের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রথম স্ত্রী সখিনা (পরিবর্তিত) বাসস্থান সুবিধা প্রদান এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আদালতে পুরোপুরি শুনানি না হওয়া পর্যন্ত আগামী ৩০ জানুয়ারি ২০১৫ সালের আগে আরেকটি বিয়ে করতে পারবেন না মুম্বাইয়ের ওরলির বাসিন্দা ডা. আকবার খান (পরিবর্তিত নাম)। এ বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় দ্বিতয়ি বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে আদালত।

খবরে বলা হয়, ২০০১ সালে মে মাসে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পরের মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তারা। সেখানে তাদের ১২ থেকে ৪ বছরের চারটি সন্তান হয়।

২০১১ সালে মুম্বাইয়ে ফিরে আসেন এবং বারসোভার একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করে আসছিলেন তারা। ভারতে আসার পর ৪৫ বছরের আকবর ২৮-২৫ বছরের যেকোনো অবিবাহিত মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করার জন্য বিবাহ বিষয়ক একটি অনলাইনে বিজ্ঞপ্তি দেন।

আদালতে শুনাতিতে সখিনা অভিযোগ করেন, আকবরের বিয়ে তাকে হতাশায় ফেলবে এবং আইনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে। মুম্বাইয়ে বান্দ্রার ওই পারিবারিক আদালতে তিন সন্তান সঙ্গে নিয়ে সখিনা দাবি করেন, তার অনুমতি না নিয়ে আকবর নতুন বিয়ে করতে যাচ্ছেন। আকবর তার সন্তানদের দেখাশোনা করেন না। তিনি যে বাড়িতে থাকেন সেই বাড়িওয়ালা বাড়ি খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে তাদের এখন পথে বসার উপক্রম।

তিনি উল্লেখ করেন, আদালত এর আগে আকবরকে সন্তানদের ভোরনপোষণ ও আলাদা বাসস্থানে ব্যবস্থা করার যে নির্দেশ দিয়েছেন তা তিনি পালন করেননি।

তবে আকবরের আইনজীবী বলেন, তার মক্কেল সখিনাকে আগেই তালাক দিয়েছেন। তখন তিনি কোনো চ্যালেঞ্জ করেননি। পারিবারিক মুসলিম আইনের অধীনে তিনি পরিচালিত হচ্ছেন। তাই তার ৪ বিয়ে করা অধিকার রয়েছে। তাই তাকে ওই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা ঠিক হবে না।

তবে সখিনার আইনজীবী নিলোফার আকতার উল্টো যুক্তি দেন, ‘আইন ও ধর্ম অনুযায়ী প্রথম স্ত্রীর অধিকার রক্ষা না হওয়া পর্যন্ত একজন স্বামী বিয়ে করতে পারেন না। তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বে চার বিয়ের ধারণা বলতে কিছু নেই। এটা পবিত্র কোরআনের অপব্যাখা।’



মন্তব্য চালু নেই