মুসলমান অশ্লীল ভাষায় কথা বলতে পারে না

মিষ্টি ভাষা মানুষের উত্তম চরিত্রের অন্যতম নিদর্শন। মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলা, ভালো আচরণ করা অনেক সওয়াবের কাজ। পরস্পরের সঙ্গে কথা বলার সময় চারিত্রিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দেয়া যায়। যেমন সালাম করা, কৃতজ্ঞতা আদায় করা, ভালো পরামর্শ দেয়া এবং সুন্দরভাবে কথা বলে কিছু বোঝানোও উত্তম চরিত্রের নিদর্শন।

পবিত্র কুরআনে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, ‘তোমরা মানুষের সঙ্গে মিষ্ট ভাষায় কথা বল।’ নিচু স্বরে, মার্জিত ভঙ্গিতে কথা বললে চারিত্রিক সৌন্দর্য প্রকাশ পায় এবং মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। আর কর্কশ স্বরে, উদ্ধত ভাষায় কথা বললে বিশৃঙ্খলা বাড়ে, সমাজে অশান্তি ছড়ায়। হজরত লোকমান (আ.) তার ছেলেকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘তুমি চলার সময় ভারসাম্যপূর্ণ গতিতে চল, কথা বলার সময় নিচু স্বরে বল। কারণ উঁচু আওয়াজ গাধার।’

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন মুমিনের পরিমাপযন্ত্রে সবচেয়ে ওজনদার যে বস্তুটি রাখা হবে তা হলো উত্তম চরিত্র।’

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুসলমান তিরস্কার ও অভিশাপ দিতে পারে না, তেমনি পারে না কর্কশ ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলতে।’ এ জন্য মুসলমানদের উচিত হল, নম্র ও সুমিষ্ট ভাষায় কথা বলা।

রাসুল (সা.) আরো বলেন, ‘ভালো কথা বলা একটি সদকা।’ যেমনিভাবে দান-সদকায় গরিবের মন জয় করা যায়, তেমনি মিষ্ট কথা দিয়ে অনেক ভাঙা হৃদয়ে জোড়া লাগানো সম্ভব।

হজরত মুসা ও হারুন (আ.) যখন ফেরাউনের কাছে যাচ্ছিলেন, তখন আল্লাহ তাদের বলে দিলেন ‘তোমরা নম্র ভাষায় কথা বলবে।’ এতে এটা প্রমাণিত হয়, কাউকে নসিহত করতে হলে তা নম্র ও মিষ্ট ভাষায় করতে হবে। জিহ্বা এমন একটি যন্ত্র, যা দ্বারা কাউকে খুশিও করা যায় আবার কষ্টও দেয়া যায়। মিষ্ট কথায় মনকে চাঙা করে আর তিক্ত কথায় হৃদয় ভেঙে যায়।

ইসলামের নির্দেশ হলো, কথার মাধ্যমে কাউকে কষ্ট দেয়া যাবে না। মিষ্টি সুরে, নম্র ভাষায়, বিনয়ী কণ্ঠে কথা বলা রাসুল (সা.)-এর সুন্নত। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সেভাবেই কথা বলা।



মন্তব্য চালু নেই