মুশফিকদের শততম টেস্ট নিয়ে যা বললেন প্রথম টেস্ট খেলা হাবিবুল বাসার সুমন

২০০০ সালে বাংলাদেশ ইতিহাসের প্রথম টেস্টে খেলে। কাল টাইগাররা খেলতে যাচ্ছে তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের শততম ম্যাচ। এই ১৭ বছরে ক্রিকেট এগিয়েছে কত স্বপ্ন পূরণ আর স্বপ্ন ভাঙার গল্প নিয়ে। নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের নেতৃত্বে আমিনুল ইসলাম বুলবুল, আকরাম খান, হাবিবুল বাশাররা দেখিয়েছেন এগিয়ে যাওয়ার পথ। যে পথে এখনো সোনালী দিনের সন্ধানে মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা। কিন্তু টেস্টে তারা কতটা পারছেন দেশের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে!

প্রায় দেড় যুগ পেরিয়ে ক্রিকেটের এই অভিজাত ফরমেটে কতটা পেলো বাংলাদেশ? এ নিয়ে প্রথম টেস্ট থেকে দেশের হয়ে ৫০টি ম্যাচ খেলা সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের কণ্ঠে ঝরে আক্ষেপ। তার মতে অন্য ফরমেটে দেশের ক্রিকেট যতটা এগিয়েছে টেস্টে এখনো সেই প্রাপ্তি মিলেনি। তবে যে স্বপ্ন নিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন বাশাররা শততম ম্যাচে তার ঝলক দেখতে চান তিনি। এই ম্যাচ ঘিরে তার অনুভূতি আর আশা নিয়ে কথা বলেন। সেই কথোপকথনের মূল অংশ তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শততম ম্যাচ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কি?

বাশার: আমার আশা প্রথম ম্যাচের কথা ভুলে আমরা এখানে অনেক ভালো খেলবো। প্রথম ম্যাচটি যেমন ফিরে আসবে না তেমন এই ম্যাচও কখনো ফিরে আসবে না। তাই আমার একটাই চাওয়া আমরা যেন সেরা নৈপুণ্য দিয়ে খেলি। ভালো কিছু চাই- ভালো কিছু অর্থ হলো জয়। আমাদের এই ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে হলে জয়টাই হবে বড় পাওয়া।

প্রশ্ন: গলে আপনারা যেমন আশা করেছিলেন তেমন হয়নি। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ের দুর্বলতা নিয়ে কি বলবেন?

বাশার: আমরা যে ভালো খেলতে পারি না তা নয়। আমি ব্যাটিংয়ের সমস্যাটা দেখছি অ্যাপলিকেশন ও ইমপ্লিমেন্টে। তারা যদি পরিকল্পনা সঠিকভাবে মাঠে প্রয়োগ করতে পারতো তাহলে এই টেস্টের ফলাফল অন্যরকমই হতো।

প্রশ্ন: ১৭ বছরে আমাদের টেস্ট কতটা এগিয়েছে বলে মনে করেন?
বাশার: ক্রিকেটের অন্য ফরমেটে বিশেষ করে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ যতটা এগিয়েছে তার চেয়ে অনেক পিছিয়ে আমরা টেস্টে। এর কারণও স্পষ্ট- আমরা ১৭ বছরে খেলেছি মাত্র ১০০ টেস্ট। এই ফরমেটে যত খেলবে দল ততোই উন্নতি হবে। আমরা এখন টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছি। এ বছর এরই মধ্যে আমরা পাঁচটি টেস্ট খেলেছি। এতে করে আমাদের ধারাবাহিকভাবে যে বিষয়গুলো প্রয়োজন উন্নতির জন্য তা আমরা দেখছি। সেভাবে প্রয়োজন অনুসারে কাজও করতে পারছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো টেস্ট খেলার মানসিকতা। সেটি যত ম্যাচ খেলবে ততোই বাড়বে।

প্রশ্ন: প্রথম টেস্টে খেলোয়াড় ছিলেন, আর শততম টেস্টে নির্বাচক। আপনার অনুভূতি?
বাশার: প্রত্যেক ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলের হয়ে খেলার। আমরাও সেটি ছিল। সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিল দেশের হয়ে প্রথম টেস্ট খেলতে পেরেছি। অনুভূতিটা তখন যেমন ভাষাতে প্রকাশ করতে পারিনি এখনও এই শততম টেস্টের আগে করতে পারছি না। তবে সব সময় একটা চেষ্টা ছিল দেশের হয়ে কিছু করার। এখনও মাঠে না থাকলে মাঠের বাইরে সে চিন্তাই থাকে। এটি প্রতিটি ক্রিকেটারেরই থাকা উচিত।

প্রশ্ন: শততম টেস্ট দেশে হলে কি অন্যরকম হতো?
বাশার: অবশ্যই এমন একটি মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচ দেশে হলে তা ঘিরে আনন্দ উদযাপন ও সমর্থনটাও থাকতো অন্যরকম। আমরা দেশের মাটিতে দলকে শততম ম্যাচে অন্যভাবেই সমর্থন দিতে পারতাম। এই ধরনের মাইলফলক ছোঁয়ার ম্যাচগুলো প্রতিটি দেশ নিজের মাটিতে রাখতে চায়। কারণ নিজেদের মাটিতে জয় বা ভালো করার দারুণ সুযোগও থাকে। আমরা যে চাইনি তা নয়। কিন্তু আইসিসি’র এফটিপি বলে কিছু আছে। এখনও আমরা সেই রকম দল হইনি যে, অনেক বড় দাবিগুলো আদায় করতে পারবো।

প্রশ্ন: প্রথম টেস্টে দলে সুযোগই হচ্ছিল না আপনার, তারপর হলো। এমন অনেক ক্রিকেটার আছেন যারা আপনার মতোই সুযোগের অপেক্ষায় ছিল এখনো আছে। তাদের নিয়ে কি বলবেন?
বাশার: আমি মনে করি ক্রিকেটে যারা প্রতিভাবান তারা সুযোগ পাবেই। হ্যাঁ, এখন অনেক প্রতিযোগিতা বেড়েছে তাই অনেককে আশাহত হতে হয়। আমার প্রথম ম্যাচেও আমি এমন সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। শেষ পর্যন্ত সুযোগ হয়। আর তা আমি কাজে লাগিয়েছি। তাই বলছি যারই সুযোগ হবে সে যেন তার সেরাটাই দেয়। আর যারা শততম ম্যাচে খেলবে তাদের কাছে আমার একটাই চাওয়া তারা যেন নিজেদের সুযোগটা কাজে লাগায় এবং দলের জন্য সেরা পারফরমন্সেটাই দেয়। গল টেস্টে আমরা যা খেলেছি তার চেয়ে অনেক ভালো করার ক্ষমতা এই দলের আছে।



মন্তব্য চালু নেই