মুন্সীগঞ্জে সহকারি পুলিশ সুপারের গাড়িতে হামলা, ছাত্রলীগের ৭ নেতাকর্মীর নামে মামলা

নাসরিন আক্তার, মুন্সীগঞ্জ থেকে : মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে সহকারি পুলিশ সুপারের গাড়িতে হামলা, দেহরক্ষীকে মারধর ও সহকারি পুলিশ সুপার ও তার পরিবারকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ মামলায় লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৭ জনকে এজাহারভুক্ত ও আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলো-লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ওমর ফারুক রাজিব, রাজু, হাবিব, আসিক, আশরাফুল ইসলাম শাওন প্রমুখ।

রোববার রাতে লৌহজং থানায় এ মামলা করেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর)-এর দেহরক্ষী ও গাড়ি চালক কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন। এরআগে গত শনিবার সন্ধ্যায় লৌহজংয়ের হলদিয়া এলাকায় স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীরা সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানসহ তাঁর স্ত্রী সন্তানদের লাঞ্ছিত ও দেহরক্ষী কনস্টেবল রফিকুল ইসলামকে মারধর করে আহত করে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার হলদিয়া বাজার সংলগ্ন নির্মাণাধীন ব্রিজের কারণে ওই রাস্তায় যানজট লেগে ছিল। সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান লৌহজংয়ে একটি অনুষ্ঠান শেষে পিতা-মাতা ও স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে লৌহজংয়ের মাওয়া অভিমুখে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার গাড়িটি হলদিয়া এলাকার রাস্তায় যানজটে আটকা পড়ে। যানজট এড়িয়ে অন্যান্য গাড়ি ওভারটেক করে তার প্রাইভেটকারটি আগে যেতে চাইলে বাঁধা দেয় যানজট নিরসণে স্বেচ্ছাসেবক কিছু এলাকাবসী। এ সময় এএসপির দেহরক্ষী কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম গাড়ি থেকে নেমে স্বেচ্ছাসেবক রাজু বেপারী (২৮)-কে মারধর করে। পরে রাজু ছাত্রলীগের লৌহজং উপজেলা সভাপতি ওমর ফারুক রাজিবকে বিষয়টি ফোনে জানালে রাজিব ও ছাত্র লীগের কিছু নেতাকর্মী দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।

এ সময় তারা সহকারি পুলিশ সুপারসহ তাঁর স্ত্রী সন্তানদের লাঞ্ছিত করে ও দেহরক্ষীকে মারধর করে আহত করে। পরিচয় জানতে পেরেও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা সহকারি পুলিশ সুপারসহ তার পরিবারের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আলম খান ছাত্রী লীগের নেতা কর্মীদের নিবৃত করতে গেলে তাঁর উপরেও কিলঘুষি পড়ে। এ ঘটনা থানায় খবর পৌছলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সটকে পরে। এ ঘটনার ক্ষুব্ধ পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকতাসহ র‌্যাবের একাধিক টিম ঘটানস্থলে ছুটে আসেন। পরে হলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বিষয়টি মিমাংসার জন্য বসে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ঢালী মোয়াজ্জেম হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ সিকদার, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আলম খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) মো. সামসুজ্জামান বাবু, লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ আনিসুর রহমানসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকতারা। পরে কোন রকম মিমাংসা ছাড়াই বৈঠকটি শেষ হয়।

লৌহজং থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান বলেন, মুন্সীগঞ্জের সিনিয়ন সহকারি পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান লৌহজং উপজেলা সদর থেকে মাওয়ার দিকে যাবার পথে হলদিয়া বাজারের কাছে যানজটে আটকা পড়েন। এ সময় স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে এএসপির দেহরক্ষীর কথা কাটাকাটি হয়। পরে তারা একত্রিত হয়ে এএসপির গাড়িতে আক্রমণ করে তার দেহরক্ষীকে মারধর করে আহত করে ও পরিবারের সদস্যদের নাজেহাল করে। এ ঘটনায় মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই