মুন্সীগঞ্জে গামছা বাহিনীর তান্ডব, পৃথক থানায় মামলা

নাসরিন আক্তার, মুন্সীগঞ্জ থেকে : মুন্সীগঞ্জের চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দির গামছা বাহিনীর প্রধান ইউসুফ ফকিরের বিরুদ্ধে দুই থানায় পৃথক দুইটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ সদরের চরাঞ্চলের মোল্লাকান্দির মাকহাটি ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কাঠাদিয়া এলাকার দুই ভুক্তভোগী পরিবরার বাদী হয়ে এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শুক্রবার রাতে।

রহস্যজনক কারণে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মামলা দুইটি নথিভুক্ত হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট দুই থানার অফিসার ইনচার্জ জানিয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ থানায় দায়ের অভিযোগে প্রধান আসামি করা হয়েছে গামছা বাহিনীর প্রধান ইউসুফ ওরফে গামছা ফকিরকে। এ মামলার বাদী হয়েছে সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও ঢাকা বিভাগীয় শ্রমিকলীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাস নজুর স্ত্রী রোকসানা।

টঙ্গীবাড়ী থানায় দায়ের করা মামলায়ও গামছা বাহিনীর প্রধান ইউসুফকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ মামলার বাদী হয়েছে ভুক্তভোগী শ্যামল গাজী। শুক্রবার দুপুরে ইফসুফের নেতৃত্বে মাকহাটি ও পাশ্ববর্তী কে শিমুলিয়া ইউনিয়নের কাঠাদিয়া এলাকায় নির্বাচনী জেরে হামলা চালানো হয়। এতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুইটি পরিবারের অন্তত ৭ জন গুরুতর আহত হয়।

আহতদের মধ্যে মাকহাটির আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাস নজু (৫০) তার দুই ছেলে রনি (২৫) ও রাবিক (২০), টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কাঠাদিয়া গ্রামের শ্যামল গাজী (৩৮), তার স্ত্রী চায়না আক্তার (২২), ভাই সুমন গাজী (৩৫) ও শহীদ হাওলাদার (৪৫)-কে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম নজু জানান, পঞ্চমধাপের মোল্লাকান্দি ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের নির্বাচন করায় প্রতিপক্ষের স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী সন্ত্রাসীরা হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। নির্বাচনের পর শুক্রবার দুপুর পৌনে একটার দিকে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি মাকহাটি আসলে বাবা (ইয়াবা) গ্রাম হিসেবে পরিচিত দক্ষিণপাড়া গ্রামের গামছা বাহিনীর প্রধান ইউসুফ ও তার বাহিনীর সদস্য জাহাঙ্গীর, আমির, আরিফ, অপু, সবুজ, কামাল, নাইম, সুজনসহ ১৫-২০ সন্ত্রাসী নৌকার নির্বাচন করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমার স্ত্রীকে বিবস্ত্র করে ফেলে।

এদিকে এ ঘটনার পরপরই দুপুর ২টার দিকে গামছা বাহিনীর প্রধান ইউসুফ ফকির, মিল্টন মল্লিক, জাহাঙ্গীর ও শাহ আলম বেপারীর নেতৃত্বে ৩০-৪০ জনের একদল সন্ত্রাসীর মোল্লাকান্দি লাগোয়া টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কেশিমুলিয়া গ্রামের ইতালি প্রবাসী শ্যামল গাজীর বাড়িতে হামলা চালায়।

ইতালি মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজম্মলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শ্যামল গাজী জানান, গত দুইমাস আগে ইতালি থেকে দেশে ফিরে আলদী বাজারে মার্কেট নির্মাণ করছেন। তার অপর ভাই সুমন গাজীও ইতালি থেকে দেশে ফিরেন। সুমন গাজী জেলা শ্রমিকলীগের সহসভাপতি। গত এক সপ্তাহ ধরে গামছা ইউসুফ তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে।

এরআগে বিরোধপূর্ণ জমি দখল করতে এস ব্যর্থ হয়। শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে ইফসুফের নেতৃত্বে বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় শ্যামল গাজী তার স্ত্রী চায়না আক্তার ও ছোট ভাই সুমন গাজীসহ ৫-৬ জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে লুটপাট চালায়। এ সময় ঘর থেকে নগদ ১১ লাখ টাকা, ৬ ভরি সোনারগহনা ও মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, তার স্ত্রী চায়না আক্তার দেড়মাসের গর্ভবর্তী ছিলেন। তার গর্ভ নষ্ট হয়ে গেছে।
এদিকে, শুক্রবার রাতেই শ্যামল গাজী বাদী হয়ে গামছা বাহিনীর প্রধান ইউসুফ ফকির, মিল্টন মল্লিক, জাহাঙ্গীর, শাহ আলম বেপারী, শাহীন বেপারী, কামাল মোল্লা, নজরুল, সোহাগসহ ১৭ জনকে এজাহারনামীয় ও ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে টঙ্গীবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।



মন্তব্য চালু নেই