সাতক্ষীরায় এড. সুলতানা কামাল

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও রাষ্ট্রের মুলনীতিকে ধারন করতে হবে

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এড. সুলতানা কামাল বলেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও রাষ্ট্রের মুলনীতিকে ধারন করতে না পারলে সার্বিক মানবাধিকার উন্নয়ন সম্ভব নয় । ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্রের অন্যতম মুলনীতি একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন ইতিহাস বিচ্যুতি হলে গতি বিচ্যুত হয় । রাষ্ট্র নিপীড়নের ভূমিকায় চলে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন পরোক্ষভাবে আমরা দেশকে দুস্কৃতিকারীদের হাতে ছেড়ে দিচ্ছি ।

হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন করতে না পারায় সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন ‘সরকার বিষয়টিকে বাধ্যতামুলক না করে ঐচ্ছিক ঘোষনা করেছে ’ । রাষ্ট্র সব মানুষের ও সব ধর্মের এই মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন ‘এটাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি ’ । অধিকারের কোনো সীমা বেধে দেওয়া যায়না উল্লেখ করে তিনি বলেন রাষ্ট্রে নারী পুরুষ সবার সমান অধিকার রয়েছে । নারী মোট জনসংখ্যার অর্ধেক জানিয়ে তিনি বলেন নারীর অধিকার রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং নিজেরও ।

এড. সুলতানা কামাল সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরায় মানবাধিকার সুরক্ষায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং স্বদেশ আয়োজিত ‘ নারীর মানবাধিকার ও উন্নয়নে অংশীদারিত্ব ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন । প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন তালা কলারোয়া আসনের সংসদ সদস্য এড. মোস্তফা লুৎফুল্লাহ , শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ , পৌর মেয়র এমএ জলিল , শেখ আজহার হোসেন , এড. সুপ্রিয় চক্রবর্তী , মাধব দত্ত, ডা. সুশান্ত কুমার ঘোষ , , প্যানেল মেয়র সফিকুদ্দৌলা সাগর , দুলাল সরকার , শেখ হারুনার রশীদ , অধ্যাপক আনিসুর রহিম , ফরিদা আকতার বিউটি , জোসনা আরা , এড. আজাদ হোসেন বেলাল , সাংবাদিক কল্যান ব্যানার্জি , মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল , এম কামরুজ্জামান প্রমুখ । সভায় মুল বক্তব্য তুলে ধরেন সাংবাদিক সুভাষ চৌধুরী ।

সুলতানা কামাল বলেন বাংলাদেশের মানুষ সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গনতান্ত্রিক শাসন চেয়েছে । এ প্রসঙ্গে তিনি ৫২ এর ভাষা আন্দোলন , ৬০ এর দশকের ইতিহাস , ৬ দফার আন্দোলন , ৬৯ এর গন অভ্যুত্থানের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন এ থেকে আমাদের সবার শিক্ষা নিতে হবে । তিনি বলেন আগে নিজেকে মানুষ বলে চিনতে হবে পরে মানুষের অধিকার নিশ্চিত কররেত হবে। গনতন্ত্রের মুল কথা সমান সুযোগ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন ১৪৭ এ ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল । তিনি বলেন এই সুযোগ না দেওয়া হলে নারী সক্ষমতা লাভ করবে না । জনজীবনে নারী কোনো বৈষম্যের শিকার হবে না সংবিধানের এই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে সবার সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে । সমাজে নারীর অংশগ্রহন আর তার অংশীদারিত্ব এক কথা নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন মৌলবাদের থাবা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে ।

জন্মের সাথে সাথে পুরুষ কিছু অধিকার নিয়ে জন্মালেও নারীকে কোনো অধিকার না নিয়েই পৃথিবীতে আসতে হয় । এমনকি জন্মের আগেই নারীর অধিকার অনধিকার নিশ্চিত হয়ে যায় । তিনি আরও বলেন ৭৫ শতাংশ নারী কাজ করে কৃষি , গার্মেন্টস , চিংড়ি খাতসহ অন্যান্য সেক্টরে । তাদের শ্রমের যথার্থ মুল্য দেওয়া হচ্ছেনা । এমনকি গৃহকর্মে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বেশিরভাগ সময় নিয়োজিত নারী তার সম্পত্তি ও সম্পদে কোনো অধিকার খুঁজে পাচ্ছে না । ং
সুলতানা কামাল বলেন উন্নয়ন কর্মকান্ডে নারীর অংশ গ্রহনে মোটেও ঘাটতি নেই । কিন্তু এই সব খাতে তার মানবাধিকার ও উন্নয়নে অংশীদারিত্ব নেই । নারী শিক্ষার হার বেড়েছে কিন্তু চাকুরি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীরা এখন পর্যন্ত শতকরা ২৩ ভাগ বলে উল্লেখ করেন তিনি ।



মন্তব্য চালু নেই