মীর কাসেমের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। মে মাসের মাঝামাঝি সময়েই এই রায় প্রকাশিত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

সোমবার দুপুরে মোট ২৪৪ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশিত হয়।

নিয়ম অনুযায়ী, এখন তার সামনে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন জানানোর পথ খোলা রয়েছে। আর ওই আবেদনের নিষ্পত্তির মধ্যে দিয়েই শেষ হবে মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানবতাবিরোধী অপরাধের এই হোতার মামলা।

চলতি বছরের ৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর ফাঁসি বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত আকারে তার আপিল মামলার রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। তার আগে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সে বছরেরই ৩০ নভেম্বর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন কাসেম আলী।

একাত্তরে মুক্তযুদ্ধে চলাকালে আটজনকে নির্যাতনের পর হত্যা ও মরদেহ গুম এবং ২৪ জনকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্যাতন কেন্দ্রে আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী ১৪টি অভিযোগে অভিযুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধকালে জামায়াতের কিলিং স্কোয়াড আলবদর বাহিনীর তৃতীয় শীর্ষ নেতা ও ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক মীর কাসেম আলী। যিনি শিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও।

১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়। বাকি ৪টি অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি।

প্রমাণিত ১০টি অভিযোগের মধ্যে দুটিতে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। তার মধ্যে একটি অভিযোগ ছিল কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনস ছয়জনকে হত্যা এবং অপর অভিযোগটি ছিল রঞ্জিত দাস লাতু ও টুন্টু সেন রাজুকে হত্যা।

ফাঁসি ছাড়াও প্রমাণিত অন্য আটটি অভিযোগে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড পান চট্টগ্রাম অঞ্চলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল হোতা মীর কাসেম আলী। এর মধ্যে প্রমাণিত ফারুককে অপহরণ-নির্যাতনের দায়ে ২০ বছর ও নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতনের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড পান তিনি। এছাড়া অপহরণ, আটক ও নির্যাতন সংক্রান্ত ছয়টি অভিযোগে সাতবছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়।

৮ মার্চ আপিল বিভাগের রায় ঘোষণার আগে সরকারের দুই মন্ত্রী মীর কাসেম আলীর মামলা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। পরে আদালত তাদের দণ্ড দেন।



মন্তব্য চালু নেই