কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে আমেরিকার সহকারী মন্ত্রী রিচার্ড

মিয়ানমারের পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ॥ ফিরে যেতে প্রস্তুত হউন

যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা, অভিবাসন ও উদ্বাস্তু বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী অ্যানি সি রিচার্ড বলেছেন, সাম্প্রতি সময়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন ও আর্ন্তজাতিক পরিবেশ-পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। সে দেশের উচ্চ পর্যায়ে নীতি নির্ধারকদের মাঝে সংখ্যালঘু নৃ-তাত্বিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যাপারে মনোভাবের উন্নতি হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা নিজ নিজ ভিটে মাটিতে ফিরে যেতে পারবে। তিনি শরণার্থীদের দেশে ফিরে যেতে প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানান।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে প্রায় ৩ ঘন্টা সময় ধরে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন ও বিভিন্ন বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী মন্ত্রী অ্যানি সি রিচার্ড। মন্ত্রী শিবিরে শরণার্থী সংশ্লিষ্ট সরকারী, এনজিও কর্মকর্তা, শরণার্থী নেতাদের সাথে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন। কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনার ও সরকারী যুগ্ম সচিব ফরিদ আহমদ ভূইয়া দীর্ঘ সময় ধরে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সীমিত সম্পদ ও বিশাল জনসংখ্যার চাপকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে আসছে বলে সফরকারীদের এক ব্রিফিংয়ে অবহিত করেন। তিনি আরো জানান, দীর্ঘকাল ধরে রোহিঙ্গারা বৈধ-অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করায় এখানকার সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি, সম্পদহানি সহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। বৈঠকে আমেরিকার সহকারী মন্ত্রী অ্যানি সি রিচার্ড শরণার্থী কমিশনারের বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দীর্ঘ সময় ধরে মানবিক সহায়তা প্রদান করায় বাংলাদেশকে আর্ন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানান।

দুপুর দেড় টা থেকে প্রায় ঘন্টা ব্যাপী সফররত মার্কিন সহকারী মন্ত্রী শরণার্থী নেতাদের সাথে একান্ত ভাবে বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত অর্ধশতাধিক শরণার্থী নেতা তাদের বিভিন্ন সমস্যা, সুবিধা-অসুবিধার কথা তুলে ধরেন। বৈঠককালে আমেরিকার সহকারী মন্ত্রী শরণার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, মিয়ানমারের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। আমাদের উচিত হবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে একযোগে সকলে মিলে কাজ চালিয়ে যাওয়া। অতী দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সুখবর শুনতে পারবো বলে আশা করছি। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা তাদের নাগরিকত্ব, হারানো ভিটে-মাটি ও মানবাধিকার ফিরে পেয়ে উদ্বাস্তু জীবনের অবসান ঘটাবে বলে আশা করছি, এবং এ লক্ষ্যে শরণার্থীদের স্বদেশ ফিরে যেতে প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি।

আমেরিকার সহকারী মন্ত্রী অ্যানি সি রিচার্ডের সফরকালে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজারস্থ ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ফরিদ আহমদ ভুইয়া, আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা বা আইওএমএর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক অ্যান্ড্র ব্যরুক, জাতি সংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশন বা ইউএনএইচসিআরের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেম্স লেইন্স, ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশ প্রতিনিধি সার্টিনা লেজোগডেল, ইউএনএইচসিআরের আঞ্চলিক কর্মকর্তা কিয়ান সম, ইউএনএইচসিআরের কক্সবাজারস্থ হেড অব সাব মুলোসিউ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসুচীর কান্ড্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টা রাডার, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম, কুতুপালং শরণার্থী শিবির ইনচার্জ মোঃ সরওয়ার আলম সহ সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তারা।



মন্তব্য চালু নেই