মিনিস্টার! আই হ্যাভ এ কোয়েশ্চেন

শেষে বাস না পেয়ে মহাসড়কের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী শামসুন্নাহার শতাব্দী। পথে পেয়ে গেলো মন্ত্রীকে। মিটারছাড়া সিএনজি অটোরিকশা ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে তখন অভিযান চালাচ্ছেন মন্ত্রী। অভিযান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন।

ভিঁড়ের পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলো শতাব্দী। সাংবাদিকদের প্রশ্ন শেষ হলে হাত উঁঠিয়ে সে বললো, ‘মিনিস্টার ওবায়দুল কাদের! আই হ্যাভ এ কোয়েশ্চেন!’ তখন শনিবার দুপুর ১২ টা। স্কুল ড্রেস পরিহিত মেয়েটির পিঠে বইয়ের ব্যাগ। রোদ থেকে বাঁচতে মাথায় আছে গোল ক্যাপ। হাঁটতে হাঁটতে চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থায় মেয়েটির প্রশ্ন হতবাক করে দেয় মন্ত্রীকে। মন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন- ‘হোয়াট ইজ ইয়োর কোয়েশ্চেন। আর ইউ জার্নালিস্ট!’ সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটির উত্তর- ‘নো! আই এম এ স্টুডেন্ট।’

মন্ত্রী মেয়েটির সাহস আর কথা বলার শক্তি দেখে অভিভূত হয়ে প্রশ্ন করতে সাদরে সায় দিলেন।

মেয়েটি বললো, ‘আমি যখন স্কুলে আসি তখন ‘গুলিস্তান-আব্দুল্লাপুর ১২৩’ বাসগুলো মহিলা সিট নেই বলে উঠতে দেয় না। কন্ডাক্টররা বলেন, ‘আপনাদের উঠতে দেয়া যাবে না। তখন স্কুলে আসতে দেরি হয়ে যায়। আবার একইভাবে বাসায় ফিরতেও দেরি হয়। কখনো কখনো ক্লাসও মিস হয়।

তাহলে মহিলাদের জন্য আলাদা বাসের কি প্রয়োজন নেই?-মেয়েটির প্রশ্ন এটাই।

তখন মন্ত্রী বলেন, মহিলাদের জন্য বিআরটিসির আলাদা বাস আছে। তুমি কোথা থেকে কোথায় স্কুলে যাও।

মেয়েটি বললো শেওড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে এমইএস পর্যন্ত। মন্ত্রী মেয়েটির কাছ থেকে তার স্কুলে যাওয়ার সময় জেনে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই নির্দেশ দিলেন, রোববার থেকে সকাল সোয়া ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে বিআরটিসির বাস এখানে থাকবে। চেয়ারম্যানকে বলে দাও একই সঙ্গে ১২৩ নম্বর বাসগুলো কেন মহিলাদের উঠতে দেয় না এ ব্যাপারে এখনই ব্যবস্থা নিতে।

মন্ত্রীর মুহুর্তের সমাধানে মেয়েটি আনন্দে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে যায়।

কতো দিনের ক্ষোভ থেকে এই প্রশ্ন করলে তুমি? শতাব্দীর কাছে এমনটি জানতে চাইলে সে জানায়, যতদিন স্কুলে আসি ততদিন থেকেই মহিলাদের জন্য সিট নেই বলে স্কুলে যেতে দেরি হয়। অনেক সময় আমি উঠে গেলেও আমার বান্ধবীরা উঠতে পারে না। যে কারণে স্কুলেও মাঝে মাঝে বকা খেতে হয়। আর দেরী করে গেলে মাঝে মাঝে ক্লাসও মিস হয়ে যায়।



মন্তব্য চালু নেই