একটি জেলার পুলিশ যেন আইনের ঊর্ধ্বে: মিজানুর

মিজানুরের কথায় খালেদার প্রতিধ্বনি পাচ্ছে পুলিশ

একটি জেলার পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রায় এক বছর আগে খালেদা জিয়ার একই ধরনের একটি মন্তব্য তুলে ধরেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার মানবাধিকার চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বাড়াবাড়ি’র অভিযোগ তুলে বলেন, একটি জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা যেন ‘আইনের ঊর্ধ্বে’ উঠে গেছেন। জেলাটির নাম উচ্চারণ না করলেও ওই পুলিশ কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে হেয় করছেন বলে দৃশ্যত গোপালগঞ্জকে ইঙ্গিত করেন তিনি। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারের পর তা দেখে রাতে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একটি বিবৃতি আসে ঢাকার মহানগর পুলিশ কমিশনের পক্ষ থেকে। মিজানুর রহমানের বক্তব্যে পুলিশ ‘স্তম্ভিত ও বিস্মিত’ উল্লেখ করে তাতে বলা হয়, “গত বছর ডিসেম্বর মাসে আমরা একটি নিদিষ্ট জেলাকে কটাক্ষ করে বক্তব্য প্রদান করতে দেখেছিলাম। ড. মিজানুর রহমানের নিকট থেকে এই পর্যায়ে একই সুরে একটি জেলাকে কটাক্ষ করে একই প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছি।” পুলিশও কারও নাম উল্লেখ না করলেও তা যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার জিয়ার মন্তব্য নিয়ে, তা স্পষ্ট। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর গণতন্ত্র অভিযাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাধা পেয়ে খালেদা জিয়া তার বাড়ির সামনে কর্তব্যরত এক নারী পুলিশ সদস্যকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “দেশ কোথায়, গোপালী? গোপালগঞ্জ জেলার নামই বদলিয়ে যাবে বুঝছেন, গোপালগঞ্জ আর থাকবে না।” আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার জেলা গোপালগঞ্জ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের ওই মন্তব্যে বেশ কিছুদিন রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলে। তখন প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গিয়েছিল শেখ হাসিনাকেও।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান গুলিতে আহত এক যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে পুলিশের ‘বাড়াবাড়ি’ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও বলেন তিনি। পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, “সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তিনি রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা পুলিশ বাহিনীর চেইন অব কমান্ড সম্পর্কে অনভিপ্রেত মন্তব্য করেছেন, যা পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙে দিতে পারে এবং ফলে জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়াও এ বক্তব্য পুলিশ বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা বিনষ্টের কারণ হতে পারে।” গুলিবিদ্ধ যুবক নাফিস সালাম নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের একজন পরামর্শক বলে পুলিশের দাবি। তবে মিজানুর রহমান বলেছেন, “কেউ নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাকে গুলি করার কোনো অধিকার পুলিশের নেই।” মামলার আসামি হিসেবে আটক নাফিসের সঙ্গে সাংবিধানিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান মিজানুরের সাক্ষাৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পুলিশ। “…এ পদে কর্মরত থেকে একজন আসামির সঙ্গে আদালতের অনুমতি ব্যতিত হাসপাতালে দেখা করতে গিয়েছেন। এতে আইন এবং শিষ্টাচার লঙ্ঘিত হয়েছে।” “তদুপরি যাচাই-বাছাই ব্যতিত নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি জঙ্গি সন্ত্রাসী সংগঠনের আসামির বক্তব্যের ভিত্তিতে একতরফাভাবে বক্তব্য প্রদান জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করতে পারে। এর মাধ্যমে তদন্ত কাজ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।” জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের শক্ত অবস্থানের কথা তুলে ধরে পুলিশ বলেছে, মিজানুর রহমানের বক্তব্যেআন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল ‘ভুল ইঙ্গিত’ পেতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই