মায়ের মৃতদেহের পাশে দাঁড়িয়ে দুদিন

মাকে ছেড়ে ও কখনও থাকেনি৷ মায়ের সঙ্গে খাওয়া, মায়ের পাশেই ঘুম। মায়ের সঙ্গেই জঙ্গলের মধ্যে ঘুরে বেড়ানো মাইলের পর মাইল। শুঁড় বাড়িয়ে কলাটা মূলোটা গাছ থেকে পেড়ে নেওয়া৷

সেই মায়ের দেহটা এ ভাবে মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে গেল কেন? শুঁড় দিয়ে মাকে ঠেলতে থাকে সাত বছরের ছোট্ট ছানা৷ কাতর অনুনয় যেন ওঠো মা, খিদে পেয়েছে। দলের সবাই যে চলে গেল। তুমি যাবে না? কিন্তু মা তো নিথর।

ভারতের ঝাড়খণ্ড সীমানায় বেলপাহাড়ির ভুলাভেদা রেঞ্জের জবলাদহের জঙ্গলে গত বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায় এই দৃশ্য। গভীর জঙ্গলে পড়ে আছে মা-হাতির মৃতদেহ। আর শোকে কাতর ছোট্ট শাবকটি মায়ের দেহ আগলে দাঁড়িয়ে আছে।

ক্রমাগত শুঁড় বুলিয়ে চলেছে মায়ের শরীরে৷ জঙ্গলে কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে গ্রামবাসী এই দৃশ্য দেখে খবর দেন বন দফতরে। এর পরই পশুচিকিত্‍সকসহ বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান।

তারা জানান, ছয়টি হাতির একটি দল ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার পথে মা হাতিটির মৃত্যুর পর বাকি চার হাতি চলে যায়৷ যায়নি শুধু শাবকটি। দিনরাত মাকে আগলে পাহারায় রয়েছে সে। শাবকটির জন্য বনকর্মীরা কেউই মা হাতিটির মৃতদেহের কাছে যেতে পারছিলেন না। দিন শেষে রাত এলেও শাবকটি তার মাকে ছেড়ে যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মায়ের দেহ ছেড়ে বাচ্চাটা এক পা-ও সরেনি। উল্টে মানুষজন দেখলেই চিৎকার করছিল। মাঝে মাঝে মায়ের শরীরের উপর শুঁড় বুলিয়ে দিচ্ছিল।

পরে শুক্রবার সকালে বনকর্মীরা ফের জবলাদহ জঙ্গলে হাজির হন। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় তারা হাতির বাচ্চাটিকে মৃত হাতিটির কাছ থেকে সরাতে সক্ষম হন।



মন্তব্য চালু নেই